আজকাল ওয়েবডেস্ক: মাত্র চার দিনের ব্যবধানে আবারও খড়গপুর আইআইটিতে মৃত্যু হল এক ছাত্রের। জানা গিয়েছে, মৃত ছাত্রের নাম চন্দ্রদ্বীপ পাওয়ার, বয়স ১৯ বছর। ওই পড়ুয়ার বাড়ি মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়া এলাকায়। জানা গিয়েছে, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন চন্দ্রদীপ। খড়গপুর আইআইটির নেহেরু হলে থাকতেন তিনি। জানা গিয়েছে, সোমবার রাতের খাওয়াদাওয়া করার পর চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাচ্ছিলেন চন্দ্রদ্বীপ। তখনই হঠাৎ ওই পড়ুয়ার শ্বাসনালীতে ওষুধ আটকে যায়। কিছুক্ষণ পর শ্বাসকষ্ট শুরু হলে অবস্থার আরও অবনতি ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় আইআইটি কর্তৃপক্ষ।
তড়িঘড়ি ওই ছাত্রকে খড়গপুর আইআইটির বিসি রায় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা হলেও শেষ রক্ষা করা যায়নি। শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে চন্দ্রদ্বীপ। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে খড়গপুর টাউন থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃত ওই ছাত্রের দেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসে। মঙ্গলবার ওই ছাত্রের মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানা গিয়েছে। মৃতের অভিভাবকদের খবর দেওয়া হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন জেলা পুলিশ আধিকারিকরা। প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার খড়গপুর আইআইটির রাজেন্দ্র প্রসাদ হল থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় ঋতম মণ্ডল নামে এক পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার হয়। ঋতমের বাড়ি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা। খড়গপুর আইআইটির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। থাকতেন রাজেন্দ্র প্রসাদ হলে।
শুক্রবার হস্টেল থেকেই উদ্ধার হয় তাঁর দেহ। যদিও পড়ুয়া মৃত্যুর কারণ এখনও জানা যায়নি। সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে এটিকে আত্মহত্যার ঘটনা বলে মনে করা হলেও সম্ভাব্য সব দিকই খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সকালে ঋতমের বন্ধুরা তাঁকে ডাকতে গিয়ে দেখেন ঘরের দরজা বন্ধ। এরপর বেশ কয়েকবার ডাকাডাকিও করা হয়। যদিও ডাকাডাকিতে কোনও সাড়া মেলেনি। পরিস্থিতি বুঝে তৎক্ষণাৎ খবর দেওয়া হয় আইআইটি কর্তৃপক্ষকে। পরবর্তীতে খড়গপুর টাউন থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসে। পুলিশ জানায়, গলায় ফাঁস নিয়ে ওই ছাত্র আত্মঘাতী হয়েছে। দেহ উদ্ধারের পর সকালে ময়নাতদন্তের জন্য সেটি খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। খবর দেওয়া হয় ওই পড়ুয়ার অভিভাবকদেরও।
ইতিমধ্যেই হস্টেলের ওই ঘরটি বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। শুরু হয়েছে তদন্ত। আইআইটি খড়গপুরের ছাত্রাবাস থেকে পড়ুয়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতের নাম অনিকেত ওয়ালকার। ওশেন ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড নভেল আর্কিটেকচার বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন তিনি। অনিকেতের বাড়ি মহারাষ্ট্রে। আইআইটি খড়গপুরের হস্টেলেই তিনি থাকতেন। জগদীশচন্দ্র বসু হলে ২১৪ নম্বর রুম থেকে তাঁর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এপ্রিল মাসের পর ফের মে মাস। মদনমোহন মালব্য হলের এসডিএস ১৩৫ নম্বর রুম থেকে ছাত্রের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত ছাত্রের নাম, মহম্মদ আসিফ কামার। তাঁর বাড়ি বিহারের শিওহর জেলায়। তিনি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। সেখানেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। সহপাঠীরা ওই পড়ুয়ার সাড়াশব্দ পায়নি অনেকক্ষণ।
সন্দেহ হওয়ায় তাঁর সহপাঠীরা দরজা ধাক্কা দিয়ে ডাকাডাকি শুরু করেন। সাড়া না পেয়ে সহপাঠীরা কর্তৃপক্ষকে জানান। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে রবিবার ভোরবেলায় ওই ছাত্রের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেও খড়গপুর আইআইটি থেকে পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার হয়। সেদিন ছেলের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন বাবা-মা। হস্টেলের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। বারবার ধাক্কা দেওয়ার পর, ফোন করার পরেও মেলেনি তাঁর সাড়া। শেষমেশ দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকতেই দেখেন, ছেলের ঝুলন্ত দেহ। মৃত পড়ুয়ার নাম শাওন মালিক। ২০ বছর বয়সি পড়ুয়া ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। অত্যন্ত মেধাবী পড়ুয়া ছিলেন তিনি। চলতি বছরে পর পর পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে খড়গপুর আইআইটিতে। তারপরে ঠিক একই ঘটনা। সেখানেই ফের উদ্ধার হল পড়ুয়ার দেহ। মৃত্যুর কারণ খুঁজছে পুলিশ। শুরু হয়েছে তদন্ত।
