আজকাল ওয়েবডেস্ক: বসিরহাটের ধান্যকুড়িয়ার জমিদারদের হেরিটেজ বাগানবাড়ির আগুন ঘিরে উঠল প্রশ্ন। মঙ্গলবার রাতে ঐতিহাসিক ওই বাগানবাড়িতে আচমকা আগুন ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে খবর পেয়ে দেগঙ্গা থেকে দমকলের একটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনে। হেরিটেজ ওই বাগানবাড়িতে কীভাবে আগুন লাগল, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বারাসত- বসিরহাটের মধ্যে টাকি রোডের ধারে প্রায় দেড়শো বছর আগে ধান্যকুড়িয়ার গায়েন জমিদার পরিবার ওই বাগানবাড়ি নির্মাণ করেছিল। বর্তমানে তা গায়েন গার্ডেন নামে পরিচিত। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ধান্যকুড়িয়ার প্রখ্যাত ব্যবসায়ী মহেন্দ্রনাথ গায়েন দুর্গের আদলে ৩৩ বিঘা জমির ওপর ভবনটি নির্মাণ করেন। বাড়িটির নির্মাণ শিল্পে ইন্দো-ইউরোপীয় সংস্কৃতির ছোঁয়া রয়েছে। ওই বাগান বাড়িতে জমিদার ও তাঁদের ব্যবসায়িক সহযোগী ইংরেজদের বিনোদনের ব্যবস্থা ছিল। ওই সময় টাকি রোডের পাশ দিয়ে মার্টিন রেল চলাচল করত। ধান্যকুড়িয়ায় স্টেশনও ছিল। ইংরেজ বণিকরা মার্টিন রেলে চেপে গায়েন গার্ডেনে বিনোদনের জন্য আসতেন। পরে অবশ্য ওই রেলপথ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ওই বাগানবাড়ি ঘিরে গড়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্র। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০২২ সালে ওই বাগানবাড়িকে হেরিটেজ ঘোষণা করে। গায়েন পরিবারের তত্ত্বাবধানে থাকায় বাগানবাড়িটির নাম হয় গায়েন গার্ডেন। সরকার হেরিটেজ স্বীকৃতি দিলেও ঐতিহাসিক ওই স্থাপত্য রক্ষাণাবেক্ষণের কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি।
মঙ্গলবার রাতে আচমকা ওই হেরিটেজ ভবনের একতলায় আগুন দেখা যায়। মুহূর্তে সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে দোতলাতেও। প্রথম স্থানীয় বাসিন্দারা জল ঢেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। খবর দেওয়া হয় দমকলে। বসিরহাট মহকুমার অন্তর্ভুক্ত হলেও ধান্যকুড়িয়ার ওই বাগানবাড়িটি দেগঙ্গার কাছাকাছি। তাই, দেগঙ্গা থেকে দমকলের একটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। দমকলকর্মীরা প্রায় একঘণ্টার চেষ্টায় ওই আগুন আয়ত্তে আনেন।
দমকল বিভাগের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ওই বাড়িতে কোনও বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। পুরনো কিছু আসবাবপত্র রয়েছে। রয়েছে কিছু জামাকাপড়। আগুনে মূলত সেগুলোই পুড়ে গিয়েছে। কীভাবে হেরিটেজ ওই বাড়িতে আগুন লাগল, তা নিয়ে দমকল কর্মীরা ধন্দে রয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনার তদন্তের দাবি তুলেছেন।
