সম্পূর্ণা চক্রবর্তী: কলকাতায় বিশ্বকাপের বোধনে গ্যালারি ভরেনি। শনিবার হলেও বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডস ম্যাচ দেখতে বিশেষ আগ্রহী ছিল না শহরবাসী। এদিন অবশ্য তুলনায় ভিড় বেশি। সপ্তাহের শুরুতে ম্যাচ হলেও দুই এশীয় মহাশক্তির দ্বৈরথের সাক্ষী থাকতে ক্রিকেটের নন্দনকাননে হাজিরা বেশি ছিল। তবে শহরের ক্রিকেটপ্রেমীদের থেকে ওপার বাংলার ক্রিকেট ভক্তের সংখ্যা বেশি। দল বেঁধে প্রায় দুশো জন বাংলাদেশি সমর্থক একসঙ্গে এসেছে। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশ কানাডা এবং সিঙ্গাপুর থেকে। বাকি সব ঢাকা, মিরপুরের। সোশ্যাল মাধ্যমে যোগাযোগ করেই বিশ্বকাপের খেলা দেখার পরিকল্পনা করে ফেলে এই গ্রুপ। বাংলাদেশের সমর্থক হলেও শুধুমাত্র তাঁদের দেশের খেলা দেখে ফিরে যাবেন না তাঁরা। দেখবেন ভারত-দক্ষিণ ম্যাচও। তাঁদের মধ্যে একজন বলেন, 'ভারতে যখন এসেছি, ভারতের খেলা না দেখে ফিরব কেন! তাও আবার যখন ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ দেখার সুযোগ পাচ্ছি।' এই ম্যাচের বাড়তি আকর্ষণ বিরাট কোহলির জন্মদিন। এদিনও সুদূর স্যান ফ্রান্সিসকো থেকে এসেছেন আন্দালিফ, শীলা, মঈনরা।‌ উপলক্ষ শুধুমাত্র বাংলাদেশের এই দুটো ম্যাচ। কালই ফিরে যাবেন।

শাকিব আল হাসান যতই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকুক না কেন, তাঁকে যে তাঁর দেশের লোকেরা ভালবাসে তার প্রমাণ মিলল। মঙ্গলবার ইডেনের গ্যালারিতে একাধিক শাকিব। বাংলাদেশের অধিনায়কের জার্সিতে সমর্থকের মেলা। তারমধ্যে ব্যতিক্রম দু'জন। তাঁরা জেইন জিওয়ানজি এবং ফরজানা জিওয়ানজি। দু'জনেই ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা। কিন্তু পাকিস্তানের সমর্থক। ২০০৩ সাল থেকে সব বিশ্বকাপেই গিয়েছেন এই দম্পতি। এবারও ব্যতিক্রম নয়। পাকিস্তানের টিম হোটেলেই উঠেছেন। বিশ্বকাপে বাবরদের জঘন্যতম পারফরম্যান্স। কিন্তু এখনও সেমিফাইনালের আশা ছাড়ছেন না পাকিস্তানি দম্পতি। বাংলাদেশের উইকেট পড়লেই ইডেনে গমগম করে বেজে উঠছিল, 'দিল দিল পাকিস্তান, যান যান পাকিস্তান।' প্রতিবেশী দেশেও যেন প্রাণের ছোঁয়া পেলেন জেইন, ফরজানারা‌। অন্যদিকে মাহমুদুল্লার অর্ধশতরানে উচ্ছ্বাস প্রকাশের সুযোগ পায় বাংলাদেশের সমর্থকরাও। এদিন ইডেন বেল বাজিয়ে ম্যাচের সূচনা করেন ওয়াকার ইউনিস। তবে ইডেন ফিরল না ইডেনে। আরও একটি জৌলুশহীন ম্যাচ। ভরল না গ্যালারি। তবে বেলার দিকে দর্শক সংখ্যা বাড়ে। 

ছবি: অভিষেক চক্রবর্তী