আজকাল ওয়েবডেস্ক: আগামী রবিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বিদ্যাসাগর সেতু। সেতুর স্টে কেবল ও বেয়ারিং পরিবর্তনসহ গুরুত্বপূর্ণ মেরামতি ও পুনর্বাসনের কাজের জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। সেতুর উপর দিয়ে এই সময়ের মধ্যে কোনও ধরনের যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে।
হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স (HRBC)-এর উদ্যোগে এই কাজ সম্পন্ন হবে। জননিরাপত্তা ও সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের স্বার্থে এই অস্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ কুমার ভার্মা। শহরবাসীদের উদ্দেশ্যে তিনি জানিয়েছেন, এই নির্দিষ্ট সময়ে বিকল্প পথ ব্যবহার করতে এবং ট্রাফিক পুলিশের নির্দেশ মেনে চলতে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দ্বিতীয় হুগলি সেতু তথা বিদ্যাসাগর সেতুর স্টে কেবল ও বেয়ারিং পরিবর্তনের কাজ চলবে। এই সময়ে সমস্ত যান চলাচল সীমিত রাখা হবে এবং বিকল্প পথে ঘোরানো হবে বলে জানানো হয়েছে।
এজেসি বোস রোড বা জ়িরাট আইল্যান্ড দিক থেকে আসা পশ্চিমমুখী যানবাহনগুলিকে টার্ফ ভিউ হয়ে হেস্টিংস ক্রসিং ঘুরিয়ে সেন্ট জর্জ গেট রোড, স্ট্র্যান্ড রোড হয়ে হাওড়া ব্রিজের পথে পাঠানো হবে। কেপি রোড দিক থেকে আসা গাড়িগুলিকে ১১ ফারলং গেট রোড হয়ে একই পথে চালানো হবে।
পূর্ব দিক থেকে, যেমন সিজিআর রোড বা খিদিরপুর দিক থেকে আসা যানবাহনগুলিকে হেস্টিংস ক্রসিং ঘুরিয়ে সেন্ট জর্জ গেট রোড, স্ট্র্যান্ড রোড হয়ে হাওড়া ব্রিজে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়াও কেপি রোড ও ঘোড়া পাস এলাকার যানবাহন বিকল্প পথে ঘোরানো হবে। প্রয়োজনে শহরের অভ্যন্তরীণ রাস্তা (arterial roads) যান চলাচলের জন্য ব্যবহার করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে।
এই নির্দেশ রবিবার, ২ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করা হয়েছে, ওই সময়ে বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করতে এবং ট্রাফিক বিভাগের নির্দেশ মেনে চলতে।
প্রসঙ্গত, গত ১১ অক্টোবর (শনিবার) ভোর ৫টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত এবং ১২ অক্টোবর (রবিবার) বিকেল ৩টে থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিদ্যাসাগর সেতু সম্পূর্ণভাবে যান চলাচলের জন্য বন্ধ ছিল।
কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ কুমার ভার্মা মোটর যানবাহন আইন এবং কলকাতা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণবিধি অনুসারে এক নির্দেশ জারি করে জানান, ‘সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেতুর নিরাপত্তা ও স্থায়িত্ব বজায় রাখার জন্য এই কাজ অত্যাবশ্যক। জনসাধারণের সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত, কিন্তু এই উদ্যোগ ভবিষ্যতে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।’
কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ নাগরিকদের অনুরোধ করেছিল, এই দুই দিন অগ্রিম রুট পরিকল্পনা করে রওনা দিতে। অ্যাপ ক্যাব, বাস ও মালবাহী ট্রাক চালকদেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নির্ধারিত বিকল্প রুট মেনে চলতে। সেতু এবং আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে, যাতে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কোনও সমস্যা না হয়।
কমিশনার মনোজ কুমার ভার্মা বলেন, ‘সেতুর ওপর একটানা ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে বেশ কিছু স্ট্রাকচারাল অংশের মেরামত প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। এই দুই দিনের কাজের মাধ্যমে সেতুর নিরাপত্তা ও স্থায়িত্ব আরও বৃদ্ধি পাবে।’ কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সেতুর মেরামত চলাকালীন সময় যানবাহন চলাচলে কিছুটা অসুবিধা হলেও এই উদ্যোগ শহরের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য।
