সুস্থ থাকতে জল খাওয়া ছাড়া উপায় নেই। ডিহাইড্রেশনের আশঙ্কা এড়াতে বেশি করে জল খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সারাদিনে ঠিক কতটা জল খাওয়া দরকার তা নিয়ে নানা মুনির নানা মত। আসুন জেনে নেওয়া যাক সুস্থ থাকতে আমাদের শরীরের জন্য ঠিক কতটা জল দরকার।
সারাদিন শরীরের কলকব্জা ঠিক রাখতে হলে নিঃসন্দেহে জলের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। তেষ্টা মেটাতে বা শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে জল বা তরল জিনিসে ভরসা রাখতে হয়। এমনকী সারাদিন এসিতে বসে কাজ করলেও গরমে শরীরের জলের চাহিদা বেড়ে যায়। আবার শীতকালে একেবারে জল খেলেও চলবে না। তবে তার মানে কিন্তু অতিরিক্ত জল খাওয়া নয়। ঠিক কোন সময় কতটা জল শরীরে দরকার তাও জানা জরুরি।
আরও পড়ুনঃ মানব শরীরে নতুন অঙ্গের আবিষ্কার! ক্যানসারের চিকিৎসায় নয়া দিগন্তের হদিশ পেলেন বিজ্ঞানীরা
বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের গরমে ৮ থেকে ১০ গ্লাস জল খাওয়া উচিত। গর্ভবতী ও মাতৃদুগ্ধ পান করালে ১০ থেকে ১২ গ্লাসের জল খেতে হবে। কারণ অন্ত:স্বত্ত্বা মহিলারা কম জল খেলে মা ও শিশুর উভয়েরই শরীরের ঝুঁকি হতে পারে। আবার নিয়মিত শরীরচর্চা করলেও শরীরের বেশি জলের প্রয়োজন হয়।
একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের দিনে ৩.৭ লিটার তরল দরকার হয়। একজন মহিলার সেখানে দরকার হয় ২.৭ লিটার ফ্লুইড। তবে তরল অর্থে শুধু জল নয়, চা-কফি, হেলথ ড্রিঙ্ক, দুধ সবই হতে পারে। মানে সারাদিনে চা-কফি বেশি খেলেও সেই অনুপাতে জল মেপে খাওয়া উচিত।

শরীরের ওজন কতটা সেই অনুপাতে কতটা জল দরকার হয় তার হিসেব বের করা যায়। অর্থাৎ যার ওজন ৫০ কিলোগ্রাম তার যতটা জল খাওয়া উচিত, ৯০ কিলোগ্রাম ওজন হলে সেই পরিমাণ বদলে যাবে। শরীরের ওজন যত তাকে ২ দিয়ে ভাগ করলে যে ফল বেরবে ততটাই জল দরকার হয় শরীরে। তবে আরও কিছু বিষয় রয়েছে যেমন সারাদিনে একটা মানুষ কতটা সক্রিয়, কী পরিমাণ কাজ করছেন এই যাবতীয় বিষয়গুলোর উপরে জলের পরিমাণ নির্ভর করে।
প্রয়োজনের তুলনায় বেশি জল খেলে কিডনিকে অতিরিক্ত কাজ করতে হয়। এর ফলে শরীর থেকে সোডিয়াম অস্বাভাবিকভাবে বেরিয়ে যেতে পারে এবং দেখা দিতে পারে হাইপোনাট্রেমিয়া নামে পরিচিত সমস্যা।যার লক্ষণগুলো হল-মাথা ঘোরা, বমিভাব, বিভ্রান্তি বা মনোযোগের ঘাটতি, অতিরিক্ত ক্লান্তি। এমনকী পরিস্থিতি গুরুতর হলে জ্ঞান হারাতে পারেন কিংবা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসার প্রয়োজন পড়তে পারে। জলের সঠিক পরিমাপ কিভাবে বুঝবেন? চিকিৎসকের মতে, শরীরে জলের ভারসাম্য বোঝার সবচেয়ে সহজ উপায় হল প্রস্রাবের রং দেখা।মনে রাখবেন, শরীরের জন্য জল যতটা জরুরি, অতিরিক্ত জলও ততটাই ক্ষতিকর।যদি বিশেষ শারীরিক সমস্যা থাকে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জল পান করা উচিত।
