সুস্থতার জন্য খাদ্যাভ্যাসে চাই কিছু পরিবর্তন। তারই সঙ্গে ডায়েটে লাউয়ের রস রাখলে উপকার পাবেন হাতেনাতে। শরীরের যে কোনও সমস্যার সমাধান করতে পারে লাউ। পুষ্টিতে ভরপুর লাউয়ে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, সেলেনিয়াম, ফসফরাস, জিঙ্ক, ম্যাঙ্গানিজ, কপার, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৩, ভিটামিন বি২, ভিটামিন বি৯, ভিটামিন বি৬। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত লাউয়ের রস পান করলে শরীর যেমন সতেজ থাকে, তেমনি নানা রোগ প্রতিরোধেও এটি কার্যকর ভূমিকা রাখে।

*ওজন কমাতে সহায়কঃ লাউয়ের রসে ক্যালোরি প্রায় নেই বললেই চলে। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা শরীরকে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে। ফলে অকারণে বারবার খিদে পায় না। যারা ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছেন, তাঁদের জন্য লাইয়ের জুস হতে পারে এক প্রাকৃতিক সমাধান।

*কোলেস্টেরল কমায়ঃ হার্টের সমস্যার একটি বড় কারণ ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, লাউয়ের রস এই খারাপ কোলেস্টেরলকে বাগে আনতে পারে। আসলে এই পানীয়ে রয়েছে অত্যন্ত উপকারী কিছু ফাইটো কেমিক্যালস। আর এইসব উপাদান কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সিদ্ধহস্ত। তাই কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত খেতে পারেন লাউয়ের রস। 

আরও পড়ুনঃ শুধু ক্লান্তি-দুর্বলতা নয়, শরীরে আয়রনের ঘাটতি জানান দেয় ৫ অচেনা লক্ষণও! সতর্ক না হলেই বিপদ

*হৃদপিণ্ডের যত্ন নেয়ঃ লাউয়ে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। নিয়মিত লাউয়ের জুস খেলে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা কিছুটা হলেও কমতে পারে। এতে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে এবং হৃদপিণ্ড থাকে সুস্থ।

*ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ ব্লাড সুগার বেড়ে গেলে প্রথমেই লাউয়ের জুসের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে পারেন। কারণ, একাধিক উপকারী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রয়েছে এই পানীয়তে। যা ব্লাড সুগারকে বশে রাখার কাজে একাই 

*হজমশক্তি বাড়ায়ঃ অম্বল, গ্যাস বা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন? লাউয়ের জুস এক্ষেত্রে বেশ উপকারী। এটি হজম প্রক্রিয়া বাড়ায় এবং অন্ত্র পরিষ্কার রাখে। ফলে খাবার সহজে হজম হয় এবং পেট থাকে স্বস্তিতে।

*শরীরকে করে ডিটক্স, ত্বকে আনে উজ্জ্বলতাঃ লাউয়ের জুস শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বার করে দিতে সহায়তা করে। এর ফলে ত্বকে স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা ফিরে আসে, ত্বক হয় মসৃণ ও সতেজ। যারা ব্রণ বা দাগছোপের সমস্যায় ভোগেন, তাদের জন্যও এটি কার্যকর।

*শরীর ঠান্ডা রাখেঃ গরমকালে লাউয়ের জুস একপ্রকার প্রাকৃতিক ‘কুলিং ড্রিঙ্ক’। এটি শরীরকে ভিতর থেকে ঠান্ডা রাখে এবং জলশূন্যতার ঝুঁকি কমায়। ফলে গ্রীষ্মের দাবদাহে শরীর থাকে হাইড্রেটেড ও সক্রিয়।

কখন খাওয়া উচিত

লাউয়ের জুস খাওয়ার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হল সকাল। খালি পেটে এটি পান করলে পাচন প্রক্রিয়া উন্নত হয় এবং সারাদিন শরীর থাকে হালকা ও সতেজ। অনেকে রাতে ঘুমানোর আগে লাউয়ের রস খেয়ে থাকেন। এটি শরীরকে আরাম দেয় এবং ঘুমের মান ভাল রাখতে সহায়তা করে। পুষ্টিবিদেরা গরমের দিনে লাউ আর করলা দিয়ে ডাল খাওয়ার পরামর্শ দেন। এতে শরীর ঠান্ডা থাকে। অ্যাসিডিটির সমস্যাও কমে। স্যুপ কিংবা স্যালাড হিসেবেও লাউ ব্যবহার করতে পারেন। তবে সকলের শরীরের জন্য সবকিছু ঠিক নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে খান।