আজকাল ওয়েবডেস্ক: জুলাই মাসের একেবারে শেষে শক্তশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে রাশিয়া। আগস্টের শেষের দিকেও একইঘটনা। এবার দেশ অন্য। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার, চিলির ড্রেক প্যাসেজ অঞ্চলে শক্তশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে বলে জানা গিয়েছে সর্বভারতীয় এবং আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ (USGS) অনুসারে, বৃহস্পতিবার (স্থানীয় সময়) ড্রেক প্যাসেজ অঞ্চলে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে, কম্পনের তীব্রতা ছিল ৮, পরে তা কমে হয় ৭.৫। যদিও জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিওসায়েন্সেসের তথ্য, ভূমিকম্পের মাত্রা ৭.১। জাতীয় ভূকম্পন কেন্দ্র (এনসিএস) জানিয়েছে যে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭.৪। ভারতীয় সময় শুক্রবার সকাল সাতটা ৪৬মিনিটে এই কম্পন অনুভূত হয়। কম্পনটি ভূ-পৃষ্ট থেকে কত কিলোমিটার গভীরে আঘাত হেনেছে, তা নিয়েও ইতিমধ্যে নানা তথ্য সামনে এসেছে। কোথাও উল্লিখিত কম্পনের উপকেন্দ্র ছিল ভূ-পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার গভীরে, কোথাও উল্লিখিত ৩০ কিলোমিটার গভীরে। যদিও এই প্রসঙ্গে এখনও সথিক তথ্য পাওয়া যায়নি।
দক্ষিণ আমেরিকার কেপ হর্ন এবং অ্যান্টার্কটিকার দক্ষিণ শেটল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে অবস্থিত ড্রেক প্যাসেজ একটি গভীর এবং প্রশস্ত জলপথ যা দক্ষিণ-পশ্চিম আটলান্টিক এবং দক্ষিণ-পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরকে সংযুক্ত করে। ওই অংশই স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার কেঁপে উঠেছে শক্তশালী ভূমিকম্পে।
আরও পড়ুন: নিম্নচাপের জেরে উত্তাল সমুদ্র, সকাল থেকে তুমুল বৃষ্টি, রাজ্যের ১১ জেলায় বিরাট দুর্যোগের বড় আপডেট
রাশিয়ার ঘটনার পরেই, চিলতে শক্তিশালী ভূমিকম্প আছড়ে পড়তেই ছড়িয়ে পড়ে সুনামি-আতঙ্ক। তবে প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত জানা গিয়েছে, ড্রেক প্যাসেজ ভূমিকম্পের পর মার্কিন সুনামি সতর্কতা ব্যবস্থা কোনও সতর্কতা জারি করেনি। তবে, চিলির নৌবাহিনীর হাইড্রোগ্রাফিক এবং ওশানোগ্রাফিক পরিষেবা চিলির অ্যান্টার্কটিক অঞ্চলের জন্য একটি সতর্কতা জারি করেছে।
এর আগে, ৩০ জুলাই সকাল ৮টা বেজে ২৫ মিনিটে জাপানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। প্রথমে জাপানের প্রশাসন জানিয়েছিল, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ৮। পরে মার্কিন জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ওই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৮.৮। ভূপৃষ্ঠ থেকে ২০.৭ কিলোমিটার গভীরে কম্পনের উৎসস্থল। ভূমিকম্পের উৎসস্থল রাশিয়ার কামচাটকা। প্রথম ভূমিকম্পের পর আরও একাধিকবার আফটার শক অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে এই কম্পনের মাত্রাও ছিল ৬.৯। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমস সূত্রে পাওয়া তথ্য, ভূমিকম্পের পর কামচাটকা অঞ্চলের উপকূলে তিন থেকে চার মিটার উঁচু ঢেউ-সহ সুনামি আছড়ে পড়ে। তারপরেই সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা থেকে বাসিন্দাদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার বার্তা দেওয়া হয়। প্রশাসন বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করে জোরকদমে। ভূমিকম্পের পরেই কামচাটকা এলাকায় বহু আবাসন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে। ভেসে যায় বহু বাড়িও।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের মার্চ জাপানে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৯। এই ভূমিকম্পের পরেই ভয়াবহ সুনামি আছড়ে পড়েছিল জাপানে। ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১৯৫২ সালের ৪ নভেম্বর রাশিয়ার কামচাটকা এলাকায় রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার জোরালো ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও সেবারেও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই এলাকায় ৯.১ ফুট উঁচু সুনামির ঢেউ আছড়ে পড়েছিল।
