আজকাল ওয়েবডেস্ক: ২০২৬ সালের উইমেন্স প্রিমিয়ার লিগের (WPL) মেগা নিলাম ভারতীয় প্রতিভার দাপটে হয়ে উঠল একেবারে প্রত্যাশামতই জমজমাট।

পুরো নিলামজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন ৪৪ জন ভারতীয় ক্রিকেটার। নিলামে দিনের সেরা হলেন ভারতের তারকা অলরাউন্ডার দীপ্তি শর্মা।

ইউপি ওয়ারিয়র্স তাঁদের আরটিএম কার্ড ব্যবহার করে তাঁকে ৩.২০ কোটি টাকায় দলে রেখে দেয়। এখনও পর্যন্ত লিগের অন্যতম সফল খেলোয়াড় দীপ্তি।

২৫টি ম্যাচ থেকে তাঁর সংগ্রহ ৫০৭ রান ও ২৭টি উইকেট। আসন্ন টুর্নামেন্টে দীপ্তির দিকে নজর থাকবে সবার।  দিল্লি ক্যাপিটালস ও ইউপি ওয়ারিয়র্সের মধ্যে দড়ি টানাটানি চলছিল দীপ্তিকে নিয়ে।

শেষ পর্যন্ত রাইট টু ম্যাচ কার্ড প্রয়োগ করে ইউপি ওয়ারিয়র্স দলে নেয় দীপ্তি শর্মাকে। এই  প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দীপ্তি শর্মারই দাম উঠেছে সব থেকে বেশি।

নিলামের আগে ইউপি ওয়ারিয়র্স ছেড়ে দিয়েছিল দীপ্তিকে। সেই দীপ্তিই ফিরলেন ইউপিতে। আগে তাঁর দাম ছিল ২.৬ কোটি। এবার অতিরিক্ত ৬০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে দীপ্তি ফিরলেন ইউপি ওয়ারিয়র্সে।

নিলামের শুরুতেই তাঁর এই মূল্যই গোটা নিলাম প্রক্রিয়ার গতিপথ নির্ধারণ করে দেয়। এ দিন দেশীয় ম্যাচ–উইনাররাই ছিলেন ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলির কর্ণধারদের প্রথম পছন্দ।

প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজি নিজেদের ভারতীয় স্কোয়াড শক্তিশালী করতে মন দিল। একটা বিষয় পরিষ্কার, দেশের মাটিতে হরমনপ্রীতরা ইতিহাস রচনা করার পর ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটে পরবর্তী প্রজন্ম তৈরির দিকে মন দিচ্ছে প্রত্যেকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি।

বিশ্বকাপের উদীয়মান তারকা শ্রী চরনি-কে নিয়ে শুরু হয় প্রবল চড়া দর–কষাকষি। শেষ পর্যন্ত দিল্লি ক্যাপিটালস তাঁকে তাঁর বেস প্রাইসের প্রায় পাঁচগুণ দামে দলে নেয়।

অভিজ্ঞ শিখা পাণ্ডে, আশা সোবানা এবং হার্লিন দেওলের জন্যও সমানভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা যায়। বিদেশিদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ ছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের।

৩ কোটি টাকায় অ্যামেলিয়া কের-কে আবার ফিরিয়ে এনে দল আবারও প্রমাণ করল বহুমুখী অলরাউন্ডারদের প্রতি তাদের আস্থা কতটা গভীর।

অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোও নিজেদের কৌশলের মিশেল ঘটিয়ে, শীর্ষ তারকাদের পাশাপাশি শক্ত দেশীয় ক্রিকেটারদের বেছে নিয়ে তৈরি করল ভারসাম্যপূর্ণ, বহুস্তরীয় দল।

তবুও এদিনের নিলাম কিছু চমকও তৈরি করেছে। সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসে তখনই, যখন প্রথমেই ওঠা নাম অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক আলিসা হিলি—অবিক্রিত থেকে যান।

পরে তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন আলানা কিং-ও। নিউজিল্যান্ডের সোফি ডিভাইনকে নিয়ে নিলাম-যুদ্ধ চলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও গুজরাট জায়ান্টসের মধ্যে।

শেষপর্যন্ত ২ কোটিতে সোফি ডিভাইনকে দলে নেয় গুজরাট জায়ান্টস। রেণুকা সিংয়ের বেস প্রাইস ছিল ৪০ লক্ষ টাকা। ৬০ লক্ষে তাঁকে নেয় গুজরাট জায়ান্টস।

সোফি একলেস্টনকে আবার দিল্লি ক্যাপিটালস ৮৫ লক্ষে দলে নেয়। মেগ ল্যানিংকে নিয়ে জোর লড়াই ছিল দিল্লি ক্যাপিটালস ও ইউপি ওয়ারিয়র্সের মধ্যে।

শেষমেশ ইউপি ওয়ারিয়র্স ১.৯ কোটির বিনিময়ে মেগ ল্যানিংকে নেয়। বিশ্বকাপ ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্যাপ্টেন লরা উলভার্ট সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন।

তিনি যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন, ততক্ষণ প্রোটিয়া ব্রিগেডের জয়ের স্বপ্ন ছিল। কিন্তু আমনজ্যোৎ কৌর ধরেন লরা উলভার্টের ক্যাচ।

সেই ক্যাচের সঙ্গে তুলনা টানা হয়েছিল তিরাশির বিশ্বকাপ ফাইনালে কপিলের ক্যাচ। ২০২৪-এর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে সূর্যের ক্যাচও এসে গিয়েছিল তুলনায়।

সেই উলভার্টকে ১.১০ কোটিতে কিনে নেয় দিল্লি ক্যাপিটালস। তাঁর বেস প্রাইস ছিল ৩০ লক্ষ। ঘরোয়া ক্রিকেটের ধারাবাহিকতা ও স্থানীয় প্রতিভার ওপর ভর করে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো দল তৈরি করেছে। ক্রিকেট মহলে বিশেষজ্ঞদের মতে, এবারের WPL এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতে চলেছে।