‘যব উই মেট’-এর গান তৈরি চলছে। একটি গান পরিচালনা করবেন সন্দেশ শান্ডিল্য। সঙ্গীত পরিচালক উস্তাদ রাশিদ খানের অন্ধ ভক্ত। তাই ঠিক করেছেন তাঁকে দিয়ে গাওয়াবেন। শুনেই হাঁ হাঁ করে উঠেছিলেন পরিচালক ইমতিয়াজ আলি। কিছুতেই মানতে পারেননি, তাঁর প্রেমের ছবিতে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পীর রাগাশ্রয়ী গান থাকবে! বাকিটা ওঁর কথায়, ‘‘একা আমি নই, সেদিন তীব্র আপত্তি জানিয়েছিলেন শাহিদ কাপুর, করিনা কাপুরও। আমাদের বক্তব্য, মিষ্টি প্রেমের ছবি। সেখানে ততধিক মিষ্টি তার গান। যেখানে মোহিত চৌহান, শ্রেয়া ঘোষাল গাইছেন ‘ইয়ে ইশক হায়’-এর মতো গান সেখানে উস্তাদজি কী গাইবেন?’’

এই আপত্তি তাঁদের তিনজনের পাশাপাশি গায়কেরও ছিল। প্রয়াত শিল্পী নিজেও কিছুতেই গাইতে চাননি। কিন্তু সন্দেশ নাছোড়। তাঁর প্রিয় গায়ককে দিয়ে গাওয়াবেনই। যাই হোক, অনেক আপত্তির পরে শিল্পী মুম্বই এলেন। সঙ্গীত পরিচালকের সঙ্গে একাধিক বার মহড়া করলেন। তারপর কলকাতায় এসে গান রেকর্ডিং হল। ইমতিয়াজ তখনও জানেন, উস্তাদজি ঠিকমতো গাইতে পারেননি। পরে সেই গান বাদ দিয়ে অন্য কাউকে দিয়ে গাওয়ানো হবে। এডিটিং টেবিলে গিয়ে গান শুনে সেই তিনিই স্তব্ধ! কী অপূর্ব গেয়েছেন রাশিদ খান। এই গান বাদ দেওয়ার প্রশ্নই নেই। 

সেই স্মৃতি এনে ইমতিয়াজের বক্তব্য, ‘‘ভীষণ মাটির মানুষ। কোনও অহঙ্কার ছিল না। একজন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী এত রোমান্টিক গানও যে গাইতে পারেন সেটা না শুনতে বিশ্বাস করা সত্যিই কষ্ট। তাই ১৬ বছর পরেও শ্রোতা কান পেতে শোনেন।’’ এই প্রসঙ্গে আরও একটি অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন পরিচালক। তিনি শিল্পীকে প্রথম দেখেন এক অনুষ্ঠানে। রাগ মল্লার গাইছিলেন। ওঁর গাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই বৃষ্টি নামে। প্রচলিত কথা অনুযায়ী, খুব মন দিয়ে গাইলে নাকি প্রকৃতিও সাড়া দেয়। জানি না, সেদিন সত্যিই এমন কিছু ঘটেছিল কিনা। তবে দর্শক-শ্রোতারা সেদিন ছাতা খুলে তাঁর মাথায় ধরেছিলেন। আর খোলা আকাশের নীচে উদাত্ত কণ্ঠে গাইছেন শিল্পী। পরিচালকের দেখে মনে হয়েছিল, যেন স্বয়ং ঈশ্বর মানুষের মধ্যে নেমে এসে গান শোনাচ্ছেন।