আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভোটমুখী বিহারে উত্তেজনা তুঙ্গে। তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। তার অন্যতম কারণ অবশ্যই এসআইআর। তবে, সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে নির্বাচন কমিশন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছে। সূত্রের খবর, আদালতে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, বিহারের ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার প্রসঙ্গে, উক্ত ব্যক্তিকে পর্যাপ্ত কারণ দেখানো হবে নোটিস দিয়ে। 

 

আগস্টের শুরুতেই বিহারে কমিশন ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সমীক্ষায় নাগরিরত্ব যাচাইয়ের কাজ করছে। তাতে নাম বাদ পড়েছে লক্ষ লক্ষ মানুষের। ওই প্রসঙ্গে দায়ের হয়েছিল মামলা। দাবি ছিল, যে প্রক্রিয়ায় লক্ষ লক্ষ মানুষের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে তা স্বচ্ছ নয়। স্বচ্ছ নয় কারণও। ওই মামলার শুনানি চলছে দেশের শীর্ষ আদালতে। সূত্রের খবর, শনিবার সুপ্রিম কোর্টে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, নোটিস না দিয়ে, ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাবে না কারও নাম। নোটিস দিয়ে, জানানো হবে নাম বাদ যাওয়ার কারণ। 

আরও পড়ুন: ব্যারিকেড ভেঙে চায়ের দোকানে ঢুকে পড়ল ট্রাক, মুহূর্তে গুঁড়িয়ে গেল সব, রক্তের মধ্যে ভাসছে দেহ, পাঁশকুড়ার ঘটনায় শিয়রে উঠছেন মানুষ

নির্বাচন কমিশন অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মসের দাখিল করা মামলার শুনানিতে তা জানিয়েছে। যেখানে নির্বাচন কমিশনকে SIR অনুশীলনের অধীনে ১ আগস্ট প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া প্রায় ৬৫ লক্ষ নামের ব্যক্তিগত বিবরণ জমা দেওয়ার জন্য আদালতের নির্দেশ চেয়েছিল।

 

সূত্রের খবর, শীর্ষ আদালতে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, নীতিগতভাবে এবং প্রাকৃতিক ন্যায়বিচারের নীতিমালার কঠোরভাবে মেনে চলার জন্য, ১লা আগস্ট ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকা থেকে কোনও ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হবে না, যদি না সংশ্লিষ্ট ভোটারকে প্রস্তাবিত বাদ দেওয়ার বিষয় এবং তার কারণগুলি নির্দেশ করে পূর্ব নোটিশ জারি করা হয়। 

 

বিহারে কমিশন ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সমীক্ষায় নাগরিরত্ব যাচাইয়ের কাজ করছে। বিরোধীদের অভিযোগ, বিরাট অংশের ভোটারদের বাদ দেওয়ার এটা একটা কৌশল মাত্র। ফলে ব্যাপক বিতর্ক হয়েছে, মামলা গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। সুপ্রিম কোর্ট এই প্রক্রিয়ায় স্থিতাবস্থা জারি করেনি। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশন আশ্বস্ত করেছে যে, বাদ পড়া ভোটাররা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আবেদনের যথাযথ সময় পাবেন।  

এর আগে কমিশন জানিয়েছিল,  "২৪.০৬.২০২৫ তারিখের SIR আদেশ অনুসারে, ১ অগাস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ পর্যন্ত, খসড়া ভোটার তালিকায় যেকোনও সংযোজন, বাদ দেওয়া এবং সংশোধনের জন্য আপত্তি দাখিলে যেকোনও জনসাধারণের জন্য পুরো এক মাস সময় থাকবে।"  

 

জুলাই মাসেই কমিশন জানায়, কাগজপত্র-সহ বা ছাড়াই গণনা ফর্ম জমা দেওয়া প্রতিটি ভোটারকে ১ অগাস্ট প্রকাশিত খসড়া তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। যদি কোনও ভোটার তাঁর গণনা ফর্ম জমা দিতে অক্ষম হন, তবে ঘোষণাপত্রের সঙ্গে নির্ধারিত ফর্মে দাবি জমা দেওয়ার পরে তাদের চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

কমিশন আরও জানিয়েছে যে, সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরে, ৩০ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। এবং প্রকাশের পরেও, মনোনয়নের শেষ তারিখ পর্যন্ত নতুন ভোটারদের তালিকাভুক্ত করা যেতে পারে।

কমিশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, "বিহারের ১২টি প্রধান রাজনৈতিক দলের জেলা সভাপতিদের নিযুক্ত প্রায় ১ লক্ষ বিএলও, ৪ লক্ষ স্বেচ্ছাসেবক এবং ১.৫ লক্ষ বিএলএ-সহ সমগ্র নির্বাচনী ব্যবস্থা একত্রে কাজ করছে সেইসব ভোটারদের অনুসন্ধানের জন্য, যাঁরা এখনও তাদের গণনা ফর্ম জমা দেননি বা তাঁদের ঠিকানায় পাওয়া যায়নি।"

নির্বাচনী সংস্থা দাবি করেছে যে, বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা SIR পরিচালনা করা তাদের সাংবিধানিক কর্তব্য। আদালতে, যেখানে বিষয়টি বিচারাধীন, কমিশন যুক্তি দিয়েছে যে- সংবিধানের ৩২৪ অনুচ্ছেদের অধীনে প্রদত্ত ক্ষমতার উল্লেখ করে সমগ্র প্রক্রিয়াটি একটি সুসংগত এবং একতিয়ারভিত্তিক পদ্ধতিতে পরিচালিত হচ্ছে।