মোহনবাগান - ৩ (লিস্টন-২, সুহেল)

মহমেডান - ১ (কলি) 

সম্পূর্ণা চক্রবর্তী: যুবভারতী লিস্টনময়। ৪৭ মিনিট দশজনে খেলে জয়। ডুরান্ডের প্রথম ম্যাচে মহমেডান স্পোর্টিংকে ৩-১ গোলে হারাল মোহনবাগান। গোল করেন লিস্টন কোলাসো এবং সুহেল ভাট। জয়ের অন্যতম কারিগর লিস্টন। দুটো করলেন, একটা করলেন। আগের বছর গোলে পেতে প্রায় মাঝ মরশুম পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় গোয়ান মিডিওকে। কিন্তু এবার জার্সি বদলে মাঠে ঝড় তুললেন। বৃহস্পতি‌ রাতের যুবভারতী পুরো লিস্টনময়। ১৭ নম্বর জার্সি ছেড়ে ৭ নম্বর গায়ে চাপাতেই ম্যাজিক। প্রথম ম্যাচেই ফ্রিকিক থেকে অনবদ্য গোল। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে কলকাতায় পা রেখে এই খবরে নিঃসন্দেহে খুশি হবেন হোসে মোলিনা। ডার্বি হারের পর প্রথম ম্যাচ। যদিও ভিন্ন দল। কিন্তু নামটা মোহনবাগান। ডুরান্ডের প্রথম ম্যাচে মূল দলই নামান বাস্তব রায়। ডার্বিতে খেলা কিয়ান, দীপেন্দু এবং সুহেলকে প্রথম একাদশে রাখেন। ৪৩ মিনিটে লালকার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন আপুইয়া। বাকি সময়টা দশজনে খেলে জয় তুলে নেয় বাগান। তবে নামেই মিনি ডার্বি। যুবভারতীর দর্শক সংখ্যা দেখে তাঁর আঁচ পাওয়া যায়নি। মেরেকেটে ১৫ হাজার সমর্থক। ডুরান্ডে মোহনবাগানের প্রথম ম্যাচ। প্রতিপক্ষ মহমেডান। কিন্তু ফাঁকা গ্যালারি। 

দুই দলই বিদেশিহীন। স্থানীয়দের ওপর ভরসা রাখেন বাস্তব রায় এবং মেহরাজউদ্দিন ওয়াডু। প্রথম ম্যাচে ডায়মন্ড হারবরের কাছে হারলেও, বৃহস্পতিবার রাতে লড়াই করার চেষ্টা করে সাদা কালো ব্রিগেড। তবে মোহনবাগানের গোল সংখ্যা আরও বাড়তে পারত। দু'বার বল ক্রসপিসে লাগে। প্রথমে ম্যাচের ১১ মিনিটে অনিরুদ্ধ থাপার ক্রস থেকে সুহেলের শট পোস্টে লাগে। আবার ২৭ মিনিটে আশিস রাইয়ের পাস থেকে কিয়ান নাসিরির শট ক্রসপিসে লাগে। নয়তো গোল সংখ্যা আরও বাড়ত। প্রথমে একটা ঝাপটা দেওয়ার চেষ্টা করে সাদা কালো ব্রিগেড। প্রথম সুযোগ মহমেডানের। ম্যাচের ১০ মিনিটের মাথায় অ্যাশলে কোলির শট বাঁচায় বিশাল কাইথ। তার মিনিট দুয়েকের মধ্যে বাগান কিপারকে অপ্রস্তুতে ফেলে দেন সজল বাগ। তাঁর শট বিশালের বুকে লাগে। সেই যাত্রায় বেঁচে যায় মোহনবাগান। 

ম্যাচের ২৭ মিনিটে সবুজ মেরুনকে এগিয়ে দেন লিস্টন। বক্সের ঠিক মাথায় তাঁকে ফাউল করেন জোসেফ। সুবিধাজনক জায়গায় ফ্রিকিক পায় মোহনবাগান। লিস্টনের জন্য আদর্শ জায়গা। মিস করেননি। অনবদ্য ফ্রিকিকে বাগানকে এগিয়ে দেন গোয়ান। বিরতির আগে ব্যবধান বাড়তে পারত। কিন্তু সিটার মিস করেন অনিরুদ্ধ। পোস্টের ওপর দিয়ে ভাসিয়ে দেন। দীর্ঘদিন পর আক্রমণভাগে খেলতে দেখা যায় থাপাকে। নজর কাড়েন। তবে ৪৩ মিনিটে দলকে বিপদে ফেলেন আপুইয়া। তাঁকে ফাউল করেন রাগুই। পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে 'হেড বাট' মারেন আপুইয়া। লালকার্ড দেখাতে দ্বিধা করেননি রেফারি। তবে তার খুব একটা প্রভাব বাগানের খেলায় পড়েনি। নির্ধারিত সময়ের ৪৭ মিনিট দশজনে খেলে দ্বিতীয়ার্ধে জোড়া গোল বাগানের। প্রথমার্ধের শেষে ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল সবুজ মেরুন। বিরতির পাঁচ মিনিট পরে সমতা ফেরায় মহমেডান। লালথানকিমার শট বাঁচান বিশাল। ফিরতি শটে গোল অ্যাশলে কোলির। তবে দশজনের মোহনবাগানকে আটকে রাখতে পারেনি সাদা কালো ব্রিগেড। তিনজনকে কাটিয়ে সুহেলকে বল বাড়ান লিস্টন।‌ ম্যাচের ৬৩ মিনিটে ২-১ করেন কাশ্মীরি স্ট্রাইকার। নিজের দ্বিতীয় এবং মোহনবাগানে তৃতীয় গোলও লিস্টনের। ৯০+৫ মিনিটে তাঁকে ফাউল করেন মিতেই। পেনাল্টি দেন রেফারি। স্পট কিক থেকে ৩-১ করেন লিস্টন। ডায়মন্ড হারবারের পর মোহনবাগানের কাছে হার। জোড়া ম্যাচ হেরে ডুরান্ড‌ কাপ থেকে কার্যত বিদায় মহমেডানের।‌ অন্যদিকে মরশুমের শুরুতে বিনা কোনও প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলে আশা জাগাল বাগান।