দিনকেদিন বাড়ছে দুশ্চিন্তা, উৎকন্ঠা। মাথা হালকা করতে ঘন ঘন অনেকেই চুমুক দেন চায়ে। সঙ্গে সুখটান সিগারেটে। অফিসে একটানা কাজের মাঝে বিরতি মানেই একহাতে গরম ধোঁয়া ওঠা চা। অন্য হাতে সিগারেট। এক লহমায় যেন সব ক্লান্তি ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যায়। কিন্তু জানেন কি এই চা আর সিগারেটের যুগলবন্দি স্বাস্থ্যের বড় ক্ষতি করতে পারে।

অনেকেই চা পান করার সময় সিগারেট খাওয়ার অভ্যাসে অভ্যস্ত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই অভ্যাস শরীরের ভয়ঙ্কর ক্ষতি করে। ধূমপান যে স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর তা কারওরই অজানা নয়। সিনেমা শুরু হওয়ার আগে বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ থেকে শুরু করে নানা কর্মসূচি-— ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে চর্চা চলে সর্বত্র। মনের আনন্দে সুখটান হোক কিংবা স্ট্রেস ফ্রি থাকতে ধোয়া সেবন, শরীরের উপর যে বড় প্রভাব ফেলে সেবিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তার উপর যদি আবার চা খেতে খেতে সুখটান দেন, তাহলে শরীরের আরও দ্রুত বারোটা বাজবে। দেহে সিঁধ কাটবে একাধিক জটিল অসুখ। চা এবং সিগারেটের যৌথ প্রভাব শরীরের ভেতরে মারাত্মক রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া ঘটায়, যা একাধিক মারাত্মক রোগের ঝুঁকি বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়।

আরও পড়ুনঃ কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না অসুখবিসুখ, ঘন ঘন বিগড়ে যায় মেজাজ? শরীরে হরমোনের ভারসাম্য ঠিক আছে তো!

* খাদনালী ক্যানসারঃ গরম চায়ের তাপ এবং সিগারেটের বিষাক্ত রাসায়নিক খাদনালীর কোষে ক্ষতি করে, যা ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।

* ফুসফুসের ক্যানসারঃ  সিগারেটের ধোঁয়া এবং চা একসঙ্গে ফুসফুসে আরও বেশি কার্সিনোজেন জমা করে, ফলে ফুসফুসের ক্যানসারের আশঙ্কা বেড়ে যায়।

* গলার ক্যানসারঃ গরম চা ও সিগারেটের ধোঁয়া মিলিয়ে গলার কোষে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, যা ক্যানসারের আকার নিতে পারে।

* হৃদরোগঃ সিগারেটের নিকোটিন ও চায়ের ক্যাফেইন একসঙ্গে রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত করে, যার ফলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে। বিশেষজ্ঞদের কথায়, একটা সিগারেটে মোটামুটি ৬ থেকে ১২ গ্রাম নিকোটিন থাকে। আর এই উপাদান হার্টের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। নিকোটিনের কারসাজিতে হার্টের রক্তনালী সংকুচিত হয়ে পড়তে পারে। যার জন্য স্বাভাবিক রক্ত চলাচলে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। এমনকী বিপদে ফেলতে পারে হার্ট অ্যাটাক।

* বন্ধ্যাত্ব ও যৌনক্ষমতা কমে যাওয়া – চায়ের সঙ্গে ধূমপানের অভ্যাস শুক্রাণু উৎপাদন ও যৌন ক্ষমতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।


* পাকস্থলীর আলসার – চা ও সিগারেটের অতিরিক্ত তাপ ও অ্যাসিড উৎপাদনের কারণে পাকস্থলী ক্ষতিগ্রস্ত হয়, আলসারের ঝুঁকি বাড়ে।


* স্মৃতিভ্রংশ – দীর্ঘমেয়াদে এই অভ্যাস স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি করে, যার ফলে স্মৃতি দুর্বল হতে পারে।


* স্ট্রোক – রক্তনালীতে জমাট বাঁধা ও ক্ষতির কারণে স্ট্রোকের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।

* হজম ক্ষমতা কমে যায়ঃ চা এবং সিগারেটের যুগলবন্দি পেটের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই অভ্যাসের জন্য হজমশক্তি খুব দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। এমনকী গ্যাস, অ্যাসিডিটির মতো সমস্যাও নিতে পারে পিছু। বিশেষত, যাঁদের ইতিমধ্যেই আইবিএস, আইবিডি-এর মতো পেটের অসুখ রয়েছে, তাঁদেরই সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে বেশি।