আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজ্যে এগিয়ে আসছে বিধানসভা নির্বাচন। এবারের ভোটে হাতে গরম ইস্যু হতে চলেছে নাগরিকত্ব প্রদানের জন্য সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট বা সিএএ। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে শাসক-বিরোধী তর্জা। এই আবহে এবার উত্তর ২৪ পরগণার বাগদায় দুই দলের পক্ষ থেকেই তৈরি করা হল এই শিবিরের।
গত বৃহস্পতিবার ২৪ জুলাই বাগদার চোয়াটিয়া বাজারে সিএএ নিয়ে অনলাইনে আবেদন করার জন্য বিজেপির তরফে গড়ে তোলা হয়েছিল একটি শিবিরের। বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি বিরোধী দলনেতা সৌরভ গোয়ালি এই শিবিরের আয়োজন করেন। গত কয়েকদিন ধরেই চলছে এই ক্যাম্প। এরই মাঝে রবিবার স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে গড়ে তোলা হয়েছে এই নিয়ে একটি আলাদা শিবির। যা বিজেপি শিবির থেকে মাত্র ২০ মিটার দূরে। ঘাসফুলের এই শিবির থেকে বলা হচ্ছে নিঃশ্বর্ত নাগরিকত্ব দিতে হবে। যাদের কাছে ভোটার কার্ড আছে তাঁরাই এই দেশের নাগরিক। স্বাভাবিকভাবেই একই জায়গায় পাশাপাশি দুই শিবিরের উপস্থিতির ফলে তৈরি হয়েছে উত্তেজনা।
তৃণমূলের শিবিরে আসা প্রাক্তন এক পঞ্চায়েত সদস্যের দাবি, 'আমি ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসেছি। বাংলাদেশ থেকে তো বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার ও স্বপন মজুমদারও এসেছেন। তাঁরা কি সিএএ-তে আবেদন করেছেন? সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। আমার ভোটেই তো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। একজন নাগরিকদের যা যা সুবিধা আমি তো সবটাই পাচ্ছি। আমি কেন সিএএ-তে আবেদন করতে যাব? এর পাশাপাশি আমি তো পঞ্চায়েত সদস্যও হয়েছিলাম। সেটাও কি বেআইনি ছিল?' এবিষয়ে বাগদা পশ্চিম ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি নিউটন বালা অভিযোগ করে বলেন, 'বিজেপি সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে সিএএ-তে আবেদন করাচ্ছে। আমরা সাধারণ মানুষকে সচেতন করছি যাতে তাঁরা আবেদন না করেন। দেখা যাচ্ছে বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালি বিদ্বেষ চলছে আর এখানে সিএএ-তে আবেদন করাচ্ছে। এটা একটা হাস্যকর বিষয়।'
শাসক দলের তরফে ধেয়ে আসা এই অভিযোগ প্রসঙ্গে বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপির বিরোধী দলনেতা সৌরভ গোয়ালির অভিযোগ, তৃণমূল চায় না সাধারণ মানুষ নাগরিকত্ব পেয়ে যাক। উল্লেখ্য, সৌরভ গোয়ালির আয়োজিত এই শিবিরে অনলাইনে নাগরিকত্ব পেতে বাংলাদেশ থেকে আসা অনেকেই নিয়ে এসেছিলেন ভারত ও বাংলাদেশে তাঁদের বসবাসের প্রয়োজনীয় সরকারি নথিপত্র।
এর আগে বাগদার এই শিবির প্রসঙ্গে অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করা হয়। পোস্টটিতে বিষয়টি একটি 'সার্কাস' বলে কটাক্ষ করে ঘাসফুল শিবির। সেখানে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, মতুয়া সম্প্রদায়ের হাতে শান্তনু ঠাকুর 'আইডেন্টটি কার্ড' তুলে দিয়েছিলেন। আবার পুণেতে এই মতুয়াদের বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী হিসেবে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। বিজেপি প্রতিমন্ত্রীর সাক্ষর করা কার্ডকে আমল দেননি মহারাষ্ট্র পুলিশের ডিজিপি। বাগদায় বিজেপির এক 'তুচ্ছ' পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী নেতা একটি তথাকথিত সিএএ ক্যাম্প চালাচ্ছেন। প্রশ্ন উঠছে-এই লোকটির কী ক্ষমতা আছে সিএএ ক্যাম্প চালানোর?
