আজকাল ওয়েবডেস্ক: ইরান ইজরায়েলের যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে আমেরিকার যোগদানে। যুদ্ধে কে ঠিক কে ভুল তাই নিয়েও নানা মুনির নানা মত। তবে একথা অস্বীকার করার জায়গা নেই যে সাম্প্রতিক ঘটনা পরম্পরায় এমন অনেক কিছুই প্রকাশ্যে এসেছে যা হয়তো পশ্চিমী সংবাদমাধ্যম আগে প্রকাশ করেনি। ‘ইরান সভ্য সমাজের শত্রু’ বদল এসেছে সেই ভাবনাতেও। নেপথ্যে একাধিক কারণ। সমাজমাধ্যমের বহুল ব্যবহার এবং তার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া তথ্য বড় ভূমিকা নিচ্ছে জনমত গঠনে। এই অবস্থায় নেটমাধ্যম এক্স বা পূর্বতন টুইটারে তুমুল ভাইরাল হচ্ছে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লা খামেনেই-এর পুরোনো সব টুইট।
এতদিন খামেনেইকে মার্কামারা গণশত্রু হিসাবেই চিনত গোটা দুনিয়া। বিশেষ করে পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমের প্রচারের গুণে তাঁকে কট্টরপন্থী মৌলবাদী হিসাবেই কল্পনা করেছেন অধিকাংশ মানুষ। কিন্তু আচমকাই সেই ভাবনা নড়ে গিয়েছে তাঁর পুরোনো সব টুইট দেখে। কী এমন দেখা গিয়েছে সে সব টুইটে?
ভাইরাল হওয়া টুইটগুলিতে দেখা যাচ্ছে, খামেনেই প্রকাশ্যে নারীর চাহিদা থেকে দাম্পত্যে রোম্যান্স এবং যৌনতা সব কিছু নিয়েই উদার মতামত দিয়েছেন! ২০১৪ সালের ২৭ মে করা একটি পোস্টে খামেনেই লিখেছেন, “পশ্চিমা মিডিয়া যাকে রোম্যান্স বলে তা মোটেই সত্যিকারের ভালবাসা নয়। এটা ক্ষণিকের যৌন উত্তেজনা ছাড়া কিছুই নয়, কারণ সেখানে কোনও দায়িত্ববোধ জড়িয়ে নেই।” কখনও আবার খামেনেই লিখেছেন, জেন অস্টিনের বহুচর্চিত বই ‘প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস’ পড়ার কথা। ২০০০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বরের নিজেরেই একটি বক্তব্য উদ্ধৃত করে ২০১৩ তে একটি টুইট করেন খামেনেই। সেখানে তিনি লেখেন, “নারীরা ফুলের মতো, কতটা খারাপ মানুষ হলে একজন নারীকে প্রশংসা না করে তাঁর সঙ্গে হিংসাত্মক আচরণ করা যায়?”
এখানেই শেষ নয়। রীতিমতো উদারবাদী মতামতও রয়েছে সেসব টুইট-এ। ২০১৩-র ৩ সেপ্টেম্বরের একটি পোস্টে ইরানের নেতা লিখেছেন, “সব কাজ স্ত্রীর জন্যে ফেলে রাখবে আর দিনশেষে তাঁরই সমালোচনা করবে, এটা হতে পারে না। বাইরে তিনি রাজনীতিবিদ কিংবা বিজ্ঞানী যাই হন না কেন, পরিবারের কাছে তিনি ফুলের মতোই।” এমনকি ২০১৩ সালের ১১ মে করা একটি পোস্টে তাঁর বক্তব্য, “নারীরা পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী। নারীরা নিজেদের বুদ্ধিমত্তা এবং নমনীয়তা দিয়ে সহজেই পুরুষদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।”
তবে যে টুইটটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি শোরগোল পড়েছে সেটি খামেনেই পোস্ট করেন ২০১৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর। সেই পোস্টে তিনি লেখেন, “নারীদের চাহিদা এবং অনুভূতি বুঝতে পারা পুরুষদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে এবং নারীদের অনুভূতির প্রতি অবহেলা করা কখনওই তাঁদের উচিত নয়।”
