সংবাদ সংস্থা মুম্বই: নেটফ্লিক্সের ভারতীয় কনটেন্ট নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন সংস্থার সহ-সিইও টেড সারান্ডোস। আর তাঁর সেই মন্তব্যে চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ ‘স্যাক্রেড গেমস’-এর সহ-পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপ!
সম্প্রতি একটি জনপ্রিয় পডকাস্টে অতিথি হয়ে নেটফ্লিক্স ইন্ডিয়া-র কনটেন্ট এবং তাদের প্রথম অরিজিনাল সিরিজ ‘স্যাক্রেড গেমস’ নিয়ে মুখ খোলেন সারান্ডোস। তিনি জানান, হয়তো ‘স্যাক্রেড গেমস’ দিয়েই নেটফ্লিক্স ইন্ডিয়া-র যাত্রা শুরু করা সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল না। তার চেয়ে বরং আরও ‘জনপ্রিয়’ কিছু নিয়ে শুরু করলেই ভালো হত।
এই মন্তব্যই চটে লাল করে তোলে অনুরাগ কাশ্যপকে। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থ্রেডস-এ একটি প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট শেয়ার করে কাশ্যপ লেখেন,“ওঁর তো সোজাসুজি শাশুড়ি-বৌমার গল্প দিয়ে শুরু করাই উচিত ছিল। যেটা ওরা এখন করছে! আমি জানতাম, এই টেক-দাদারা গল্প বলার কিছু বোঝে না, কিন্তু টেড সারান্ডোস যে ‘হাঁদা’— সেটা এতদিন জানতাম না। এখন সবকিছু পরিষ্কার!” অনুরাগের এই পোস্ট নিমেষে ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়।
প্রসঙ্গত, ‘স্যাক্রেড গেমস’-ই ছিল নেটফ্লিক্সের প্রথম ভারতীয় অরিজিনাল সিরিজ। অনুরাগ কাশ্যপ ও বিক্রমাদিত্য মোতওয়ানে পরিচালিত এই সিরিজে অভিনয় করেছিলেন সইফ আলি খান ও নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি। ২০১৮ সালে মুক্তির পর সিজন ১ বেশ সাড়া ফেলেছিল দর্শকমহলে। তবে দ্বিতীয় সিজন মিশ্র প্রতিক্রিয়া পায় এবং এরপরই শো-টি বাতিল করে দেয় নেটফ্লিক্স।
পডকাস্টে সারান্ডোস বলেন, “আমরা ভাবছিলাম, ‘স্যাক্রেড গেমস’ দুর্দান্ত হবে। ভারতে সিনেমা ভালবাসেন সবাই। আর এটা ছিল সিনেমার মতোই বড় মাপের টিভি শো। তাতে সিনেমা তারকাও ছিলেন। কিন্তু তখন বুঝিনি, এটা একেবারে নতুন ধরণের বিনোদন ভারতীয় দর্শকের জন্য।”
তিনি আরও বলেন, “হয়তো, আবার সুযোগ পেলে ‘স্যাক্রেড গেমস’-কে আরও কিছু বছর পরে করতাম, তার বদলে শুরু করতাম আরও ‘পপুলিস্ট’ কিছু দিয়ে। তবে জানতাম, ভারতে নেটফ্লিক্সের যাত্রা ধীরে চলবে। কিন্তু এখানকার বাজার খুব সম্ভাবনাময়।”
এই মন্তব্যকে রীতিমতো অপমান হিসেবেই নিয়েছেন কাশ্যপ। তাঁর মতে, ‘স্যাক্রেড গেমস’ ছিল সাহসী পদক্ষেপ, আর এখন যারা কনটেন্ট বেছে নিচ্ছেন, তাঁদের বোঝার অভাব রয়েছে। এটিই ছিল সেই সিরিজ যা প্রথমবার নেটফ্লিক্স ইন্ডিয়া-কে এক অন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছিল।
নেটফ্লিক্স হয়তো এখন ভাবছে কীভাবে ‘জনপ্রিয়’ কনটেন্ট বানানো যায়। কিন্তু অনুরাগ কাশ্যপ জানিয়ে দিলেন— গল্প বলার ক্ষমতা আর দৃষ্টিভঙ্গি থাকলে তবেই আসল কনটেন্ট তৈরি হয়। না হলে ‘শাশুড়ি-বৌমা’ দিয়েই দিন কাটুক!
