আজকাল ওয়েবডেস্ক: এ যেন আক্ষরিক অর্থেই পাহাড় চূড়ায় আতঙ্ক। ভাবুন তো, শত শত ফুট উঁচু পাহাড়ের একেবারে কিনারায় পাতা রয়েছে একটি আরামদায়ক বিছানা! যেখানে শুয়ে একদিকে যেমন শরীর জুড়োনো যায়, তেমনই অন্যদিকে নিচে তাকালে শিরদাঁড়া দিয়ে বয়ে যায় হিমশীতল স্রোত। এমনই এক অদ্ভুত অথচ রোমাঞ্চকর পর্যটন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে চীনের হুনান প্রদেশের চেনঝোউ শহরের মাংশান ন্যাশনাল ফরেস্ট পার্ক। এই ‘ক্লিফ বেড এক্সপেরিয়েন্স’ বা পাহাড়ের ধারের বিছানার অভিজ্ঞতা ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে সাড়া ফেলেছে বিশ্বজুড়ে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম 'জাম প্রেস'-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৩২০ ফুটেরও বেশি (প্রায় ১০০ মিটার) উঁচু এক পাহাড়ের খাদের কিনারায় এই বিশেষ বিছানা তৈরি করা হয়েছে। উদ্যোক্তাদের মতে, আপাতদৃষ্টিতে চরম উত্তেজনাকর মনে হলেও, এর মূল উদ্দেশ্য হলো পর্যটকদের মানসিক চাপ কমিয়ে, পৃথিবীর কোলাহল থেকে দূরে এক ভিন্ন ধরনের বিশ্রামের সুযোগ করে দেওয়া। যদিও উচ্চতাভীতি বা অ্যাক্রোফোবিয়ায় আক্রান্তদের জন্য এটি দুঃস্বপ্নের চেয়ে কম কিছু নয়! চীনের জাতীয় সংবাদমাধ্যম ‘চায়না ন্যাশনাল রেডিও’ (সিএনআর) জানিয়েছে, চলতি বছরের ২৮শে এপ্রিল এই অভিনব পর্যটন প্যাকেজটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হয়েছে। চালু হওয়ার পর থেকে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এটি রোমাঞ্চপ্রিয় পর্যটকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। সিএনআর-এর তথ্য অনুযায়ী, প্রথম কয়েক দিনেই প্রায় ৪০০ জন সাহসী পর্যটক এই অভিজ্ঞতা গ্রহণ করেছেন, যার মধ্যে শুধু ২রা মে একদিনেই ৬০ জন এখানে এসেছিলেন।
জানা গেছে, এই ‘ক্লিফ বেড এক্সপেরিয়েন্স’ একটি বৃহত্তর অ্যাডভেঞ্চার প্যাকেজের অংশ। মাত্র ৯৮ ইউয়ান (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১১২৫ টাকা) মূল্যের এই প্যাকেজে পাহাড়ের ধারের বিছানায় বিশ্রামের পাশাপাশি রয়েছে ‘ক্লিফসাইড কফি’ পানের সুযোগ এবং ‘ভিয়া ফেরাট্টা’ (লোহার পথ) বেয়ে রক ক্লাইম্বিংয়ের রোমাঞ্চ। ভাইরাল হওয়া বিভিন্ন ভিডিও এবং ছবিতে দেখা যাচ্ছে, পর্যটকেরা বিছানায় আধশোয়া হয়ে কফি পান করছেন, বই পড়ছেন অথবা কেবলই চারপাশের শ্বাসরুদ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। বিছানার পাশে কফির কাপ এবং জুতো রাখার ছোট্ট জায়গাও করে দেওয়া হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। বিছানাটি অত্যন্ত সুরক্ষিতভাবে পাহাড়ের গায়ে স্থাপন করা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় সকল নিরাপত্তা ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে। তবে, এই অভিজ্ঞতা নিতে হলে পর্যটকদের মানসিকভাবে সাহসী হওয়ার পাশাপাশি শারীরিক সক্ষমতারও প্রয়োজন রয়েছে।
