আজকাল ওয়েবডেস্ক: আপনি কি কখনও কল্পনা করেছেন যে একজন ব্যক্তির একটি ট্রেনের মালিকানা আছে? ভারত সরকারের অধীনস্থ সংস্থা ভারতীয় রেল। কিন্তু রেলের একটি ভুলের কারণে একজন ব্যক্তি কিছু সময়ের জন্য গোটা একটি ট্রেনের মালিক হয়ে গিয়েছিলেন। কোনও জালিয়াতি বা অসৎ উপায়ে নয়, বরং আইনি ভাবেই মালিকানা পেয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। 

আমরা যার কথা বলছি তিনি হলেন সম্পুরণ সিং। পাঞ্জাবের লুধিয়ানার কাটানা গ্রামের একজন সাধারণ কৃষক একটি সম্পূর্ণ ট্রেনের মালিক হয়েছিলেন। তবে, এই মালিকানা মাত্র কয়েক ঘন্টার জন্য স্থায়ী হয়েছিল। দিল্লি থেকে অমৃতসরগামী দিল্লি-অমৃতসর স্বর্ণ শতাব্দী এক্সপ্রেসের মালিক হয়ে গিয়েছিলেন কয়েক ঘণ্টার জন্য। আসলে, ২০০৭ সালে রেল লুধিয়ানা-চণ্ডীগড় রেললাইন নির্মাণের জন্য কৃষকদের থেকে জমি কিনেছিল। সম্পুরণ সিং-এর জমির উপর দিয়ে রেললাইনে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। সম্পুরণের থেকে প্রতি একর ২৫ লক্ষ টাকা দাম দিয়ে জমি কিনেছিল রেল।

কিছুদিন পর বিষয়টি আরও জটিল হয়ে ওঠে যখন সম্পুরণ সিং জানতে পারেন যে রেল প্রতি একর ৭১ লক্ষ টাকা দরে ​​কাছের একটি গ্রামে একই পরিমাণ জমি অধিগ্রহণ করেছে। সম্পুরণ রেলওয়ের এই দ্বিমুখী নীতির বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হন। শুনানির সময় আদালত রেলকে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ ২৫ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ লক্ষ টাকা করার নির্দেশ দেয়। যা পরে এক কোটি ৪৭ লক্ষ টাকা করা হয়। আদালত উত্তর রেলকে ২০১৫ সালের মধ্যে সম্পুরণকে এই পরিমাণ অর্থপ্রদানের নির্দেশ দেয়। কিন্তু রেল মাত্র ৪২ লক্ষ টাকা পরিশোধ করে। বাকি ১.০৫ কোটি টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়। আদালতের আদেশের পরেও রেল ক্ষতিপূরণ দিতে ব্যর্থ হওয়ায়  ২০১৭ সালে জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক জসপাল বর্মা লুধিয়ানা স্টেশনে ট্রেন বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন। এর পাশাপাশি স্টেশন মাস্টারের অফিসও বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। আদালতের আদেশের পর, সম্পুরণ স্টেশনে পৌঁছে সেই সময়ে সেখানে উপস্থিত অমৃতসর স্বর্ণ শতাব্দী এক্সপ্রেস ট্রেনটি বাজেয়াপ্ত করেন এবং সেই ট্রেনের মালিক হন। বেশ কিছুক্ষণ পর সেকশন ইঞ্জিনিয়ার আদালতের একজন আধিকারিকের সহায়তায় ট্রেনটি ছাড়িয়ে নিয়ে যান। রিপোর্ট অনুযায়ী, এই মামলাটি এখনও আদালতে বিচারাধীন।

(ছবি: সংগৃহীত)