আজকাল ওয়েবডেস্ক: হাতি হলেও মা তো মা-ই হয়। তাই সন্তানের নিজের পায়ে দাঁড়ানো পর্যন্ত অপেক্ষা করল মা হাতি। সঙ্গীসাথীরা তাকে রেখেই ফিরে গেল গভীর জঙ্গলে। সদ্য জন্মানো সন্তান, হাঁটতে শেখার পরই মায়ে-পোয়ে গেল জঙ্গলে। মা অপেক্ষা করল তার সন্তানের জন্য গোটা একটা দিন। এই ঘটনার সাক্ষী থাকলেন আলিপুরদুয়ারের চা-বাগানের শ্রমিকেরা। 

 

চা বাগানের মাঝে সন্তানের জন্ম দেয় এক বুনো হাতি। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাতে আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকের মুজনাই চা বাগানের পাঁচ নম্বর সেকশনে। রবিবার ভোর থেকে মা হাতিটি তার ছোট্ট বাচ্চাটিকে নিয়ে দীর্ঘ সময় চা বাগানেই দাঁড়িয়ে থাকল। হাতির নবজাত শাবক দেখতে সেখানে কৌতূহলী শ্রমিকেরা ভিড় জমালেন, তবে তারা কেউই হাতিটিকে বিরক্ত করেননি। খবর পেয়ে বনদফতরের মাদারিহাট রেঞ্জের আধিকারিক ও বনকর্মীরাও ঘটনাস্থলে পৌঁছান। বিকেল নাগাদ হাতিটি চা বাগান ধরে জঙ্গলের পথে রওনা দিয়েছে, রাতেই সেটি জঙ্গলে পৌঁছে যাবে বলে বনদফতরের পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে। 

 

 

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে হাতির একটি দল মুজনাই চা বাগানে ঢুকেছিল। দলটির সঙ্গে এই হাতিটিও ছিল। সম্ভবত ভোররাতেই হাতিটি একটি সন্তানের জন্ম দেয়। দলের অন্যান্য হাতিগুলি রাতে ধুমচির জঙ্গলে ফিরে গেলেও মা হাতিটি শাবকটিকে নিয়ে দীর্ঘসময় মুজনাই চা বাগানেই দাঁড়িয়েছিল। নবজাত শাবকটির নিজের পায়ে দাঁড়ানো ও হাটা শেখার জন্য কিছুটা সময় প্রয়োজন। এই কারণেই মা হাতিটি চা বাগানে শাবকটিকে নিয়ে অবস্থান করছিল বলে অনুমান বন দফতরের। খবর ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের গ্রামে। হাতির নবজাত বাচ্চাটিকে দেখতে প্রচুর শ্রমিক সেখানে ভিড় জমান। বনকর্মীরাও খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এত লোক দেখেও হাতিটি সন্তানকে নিয়ে ঠায় দাঁড়িয়েছিল সেখানেই। 

 

 

বন দফতরের মাদারিহাট রেঞ্জার শুভশিস রায় জানান, মুজনাই চা বাগানে শনিবার রাতেই হাতিটি সন্তান প্রসব করে। দলের অন্য হাতিগুলো সদ্য মা হওয়া হাতিটিকে রেখেই ধুমচি জঙ্গলে ফিরে যায়। মা হাতিটিও রবিবার বিকেলে তার শাবককে নিয়ে ধীরগতিতে ধুমচির জঙ্গলের পথে রওনা দিয়েছে। মা হাতিটি এবং শাবকটির ওপর বিশেষ নজর রাখছে বনকর্মীরা। তারা দুজনেই আপাতত সুস্থ রয়েছে বলেই জানিয়েছেন বন দফতরের কর্মীরা।