নিতাই দে, আগরতলা: এবার থেকে এনডিপিএস মামলায় আসামিদের জামিন পেতে গেলে আসামীর পরিবারকে মাদকের বিরুদ্ধে প্রচার করতে হবে। ন্যায় সংহিতা কার্যকরী হতেই ত্রিপুরা হাই কোর্টের অভিনব রায়। নতুন আইনে প্রথাগত শাস্তির পাশাপাশি ভারতীয় ন্যায় সংহিতার সেকশন ৪(এফ) এর মাধ্যমে কমিউনিটি সার্ভিসকেও একটি সংশোধনাত্মক শাস্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। এরই অঙ্গ হিসেবে গত ২ জুলাই, রাজ্যের উচ্চ আদালতের বিচারপতি অরিন্দম লোধ একটি এনডিপিএস মামলায় এই ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন। গত এপ্রিলে বীরগঞ্জ থানায় একটি সুয়ো মোটো মামলা রুজু হয় যাতে হেরোইন রাখার এবং বিক্রি করার অভিযোগে জীবনজয় ত্রিপুরা এবং সেলেঞ্জয় ত্রিপুরা নামে দুই যুবককে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে অভিযুক্তরা উচ্চ আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করে। এই মামলার শুনানির শেষে বিচারপতি অরিন্দম লোধ রায় দেন যে, এই বেল পিটিশনটির ৮ আগস্ট শুনানি হবে এবং এর মধ্যে উক্ত আসামিদের পরিবারকে নির্দেশ দেওয়া হয় তাদের নিজেদের পাড়া, গ্রাম ও মহকুমা জুড়ে একটি মাদক বিরোধী প্রচার করতে হবে যাতে সমাজের কাছে নেশামুক্তির বার্তা পৌঁছে দেওয়া যায়। রায়ে আরও বলা হয় যে এই প্রচার চলাকালীন আসামিদের পরিবার যেন গ্রামের যুবক এবং অভিভাবকদের সঙ্গেও মত বিনিময় করে যাতে গ্রামীণ এলাকায় নেশা ব্যবসার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে ওঠে। গন্ডাছড়া থানার ওসি, বিডিও, এসডিএম, লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটির দ্বারা নিযুক্ত প্যারা লিগ্যাল ভলান্টিয়ার্সদের নির্দেশ দেন যে, তারা যেন এই মাদক বিরোধী প্রচারে আসামিদের পরিবারকে সাহায্য করে এবং বিস্তারিতভাবে এই রিপোর্ট আদালতের কাছে যথাসময়ে জমা দেয়। তাছাড়া এই বিষয়ে জেলা শাসককেও আলাদা রিপোর্ট আদালতের কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে। সমস্ত পক্ষকে এই প্রচারের সমস্ত ছবি এবং ভিডিও করেও আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এইসব রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে ওই দুই ব্যক্তির জামিনের আবেদন আগামী শুনানির দিনে নতুনভাবে বিবেচনা করা হবে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, আগামীদিনে এই রায় রাজ্যের বিচার ব্যবস্থায় যে এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবে।
