আজকাল ওয়েবডেস্ক: শনিবার ব্রিসবেন বিমানবন্দরে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের এক নিরাপত্তারক্ষী ও এক চিত্র সাংবাদিকের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
চলতি অ্যাশেজ সিরিজের তৃতীয় টেস্ট খেলতে অ্যাডিলেড যাওয়ার আগে চেক-ইনের সময় এই ঘটনা ঘটে। পুরো ঘটনার ভিডিও ওই চিত্র সাংবাদিক নিজেই ধারণ করেন, যা পরে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় এবং দেশ-বিদেশের সংবাদমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, চেক-ইনের সময় নিরাপত্তারক্ষী বারবার ক্যামেরাম্যানকে সরে যেতে বলছেন। অভিযোগ, ক্যামেরাম্যান ছবি তুলতে থাকায় নিরাপত্তারক্ষী তাঁর বাঁ হাত বাড়িয়ে তাঁকে স্পর্শ করেন এবং কয়েক মিটার পর্যন্ত ঠেলে সরিয়ে দেন।
টেলিভিশন ফুটেজে নিরাপত্তারক্ষীকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার মুখের সামনে থেকে সরে যাও। চালাকি করো না।’ এই কথা বলেই তিনি ওই চিত্র সাংবাদিককে পিছনের দিকে এক ধাক্কা মারেন।
তবে এই ঘটনা নিয়ে এখনও পর্যন্ত ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ECB) কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। তবে অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যম এই ঘটনাকে ইংল্যান্ডের সফরের মধ্যেই আরও একটি নেতিবাচক অধ্যায় হিসেবে দেখছে।
অস্ট্রেলিয়ার একাধিক সংবাদমাধ্যমের মতে, একদিকে ইংল্যান্ড দল নানা সমস্যায় জর্জরিত তারই প্রতিফলন এই ধরনের ঘটনা।
স্থানীয় সংবাদমধ্যম চ্যানেল সেভেনের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। এক বিবৃতিতে চ্যানেল সেভেন জানায়, ‘জনসমক্ষে নিয়মিত চিত্রগ্রহণের সময় ক্যামেরা অপারেটর পেশাদার ও সম্মানজনক আচরণ করলেও শারীরিকভাবে তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছে। আমাদের কর্মীদের নিরাপত্তা ও সুস্থতা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে এবং যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমাধান করা হচ্ছে।’
উল্লেখ্য, এই বিতর্কিত ঘটনা এমন এক সময় ঘটেছে, যখন পাঁচ ম্যাচের অ্যাশেজ সিরিজে ইংল্যান্ড ০–২ ব্যবধানে পিছিয়ে রয়েছে।
প্রথম দুটি টেস্টে পরাজয়ের ফলে অধিনায়ক বেন স্টোকস ও তাঁর দল তীব্র চাপের মুখে পড়েছে। ইংল্যান্ডের প্রস্তুতি নিয়েও ধারাবাহিকভাবে সমালোচনা চলছে।
ক্যানবেরায় প্রাইম মিনিস্টার্স একাদশের বিরুদ্ধে পিঙ্ক-বল প্রস্তুতি ম্যাচে সিনিয়র খেলোয়াড়দের না খেলানোর সিদ্ধান্ত প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
তার বদলে ব্রিসবেনে অতিরিক্ত অনুশীলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দল, যা সিরিজের শুরুতে পরাজয়ের পর আরও বেশি সমালোচিত হয়েছে।
ইংল্যান্ডের হেড কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালামের সোজাসাপ্টা মন্তব্যও বিতর্কে ঘি ঢেলেছে। দ্বিতীয় টেস্টে বড় ব্যবধানে হারের পর তিনি বলেন, তাঁর দল ‘অতিরিক্ত প্রস্তুতি’ নিয়ে ফেলেছিল।
এই মন্তব্য ইংল্যান্ডের কৌশল ও মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করেছে। এছাড়াও, নুসায় দলের পূর্বপরিকল্পিত বিরতি এবং সমুদ্রের ধারে ফুটবল খেলতে দেখা যাওয়ার ছবিও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
যখন বাকি ম্যাচগুলিতে ঘুরে দাঁড়ানোর সময় সেই পরিস্থিতিতে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের শৃঙ্খলা ও অগ্রাধিকার নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ফলে, পারফরম্যান্সের পাশাপাশি মাঠের বাইরের বিতর্কও সামাল দেওয়া ইংল্যান্ড শিবিরের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
