অনেকেরই ধারণা, প্রতিদিন ব্যবহার করা ডিটারজেন্ট এবং ক্লিনার সম্পূর্ণ নিরাপদ। এগুলি কাপড় এবং বাড়ি পরিষ্কার রাখার কাজই করে। কিন্তু বাস্তবে, এই সব পণ্যের অনেকগুলিতেই এমন কিছু লুকনো রাসায়নিক থাকে, যা ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে, হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে এবং এমনকি গুরুতর রোগের ঝুঁকিও বাড়াতে পারে। তাই সতর্ক হওয়া জরুরি।

ক্যানসার ইমিউনোথেরাপিতে বিশেষজ্ঞ এবং ক্যানসার হিলার সেন্টারের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডা. তরঙ্গ কৃষ্ণ ১০ ডিসেম্বর ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করেছেন। তিনি জানান, কীভাবে নিরাপদ বিকল্প চেনা যায় এবং নিজের ও পরিবারের সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়।

প্রতিদিনের ডিটারজেন্ট স্বাস্থ্যের উপর কী প্রভাব ফেলে

ডা. তরঙ্গ কৃষ্ণ বলেন, “আপনি প্রতিদিন যে ডিটারজেন্ট ও ক্লিনার ব্যবহার করছেন, সেগুলি ক্যানসার-সহ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারে। আমরা যেগুলোকে নিরাপদ ভেবে কাপড় ও বাড়ি পরিষ্কারে ব্যবহার করি, সেগুলোর মধ্যেই এমন রাসায়নিক থাকতে পারে, যা শরীরে ধীরে ধীরে বিষের মতো কাজ করে।”

তিনি আরও জানান, এই সব পণ্যের ‘ফ্রেশ’ সুগন্ধের আড়ালে অনেক সময় ফথ্যালেটসের মতো ক্ষতিকর রাসায়নিক লুকিয়ে থাকে, যা দীর্ঘমেয়াদে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। তাঁর কথায়, “কিছু ডিটারজেন্টে ফর্মালডিহাইড এমনকি বেঞ্জিনও থাকতে পারে। এগুলি শ্বাসযন্ত্রে জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে, ব্রঙ্কাইটিসের ঝুঁকি বাড়ায় এবং ক্যানসারের সম্ভাবনাও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে।”

কী হতে পারে নিরাপদ বিকল্প

এই ঝুঁকি কমাতে ডা. কৃষ্ণ প্রাকৃতিক এবং নিরাপদ বিকল্প ব্যবহারের পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, “হার্বাল ক্লিনার একটি ভাল বিকল্প। এগুলো সাধারণ জল দিয়েই ব্যবহার করা যায় এবং ক্ষতিকর রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসার আশঙ্কা থাকে না। বাড়িতে কোন পণ্য আনছেন, সে বিষয়ে সচেতন থাকুন এবং নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিন।”

দৈনন্দিন জীবনে যেসব পণ্য আমরা অভ্যাসবশত ব্যবহার করি, সেগুলি নিয়ে সচেতন হওয়া আগের চেয়ে অনেক বেশি জরুরি। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে স্বাস্থ্যের কোনও আপস যেন না হয়, সেদিকে নজর রাখা দরকার। সামান্য সচেতনতা, সঠিক তথ্য এবং বেছে নেওয়ার অভ্যাসই দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ জীবনযাপনের পথে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। নিজের এবং পরিবারের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সাবধানতা অবলম্বন করাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।