আজকাল ওয়েবডেস্ক: মাসটা একই, কয়েক দিনের হেরফের আর কী। ২০২৩ সালে ১৯ নভেম্বর আহমেদাবাদে ফাইনাল খেলতে নেমে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল রোহিত শর্মা সহ ১৪০ কোটি ভারতবাসীর।
সেই একটা ম্যাচের ভুল শেষ করে দিয়েছিল সব লড়াই, সমস্ত পরিশ্রম। রোহিত শর্মা জানেন স্বপ্নভঙ্গের কষ্ট, রোহিত শর্মা জানেন বিশ্বকাপ ফাইনাল হারার কষ্ট। সেই রোহিত শর্মা যে দেশের মাঠে বিশ্বকাপ ফাইনালে ঘরের লক্ষ্মীদের পাশে থাকবেন না সেটা কি হতে পারে?
রোহিত এলেন, রোহিত দেখলেন, হরমনপ্রীতদের সঙ্গে রোহিতও ইতিহাসের সাক্ষী থাকলেন। ডি-ক্লার্কের ক্যাচটা যে মুহূর্তে হরমনপ্রীত লুফলেন ক্যামেরা ধরল হিটম্যানের মুখ।
তাঁর চোখ তখন ছলছল করছে, এক মুহূর্তের জন্য তাকালেন আকাশের দিকে। তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে হাততালি দিয়ে অভিনন্দন জানালেন টিম ইন্ডিয়াকে।
সেই মুহূর্তের ছবি ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। রোহিতও তো গত দু’বছরে ভারতকে দুটো আইসিসি ট্রফি দিয়েছেন। কিন্তু বিশ্বকাপটা তাঁর কাছে অধরা মাধুরী হয়েই থেকে গিয়েছে।
কয়েক মুহূর্তের জন্য যখন রোহিতকে দেখা গেল তাঁর সেই চোখের জলই বলে দিচ্ছে এই বিশ্বকাপ জয়ের মাহাত্ম্য। ভারতের ইনিংসের মাঝামাঝি সময়ে প্রথমবার ক্যামেরায় ধরা পড়েন রোহিত শর্মা।
সাদা টি-শার্ট পরেছিলেন তিনি। মাথায় ছিল টুপি। আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহের পাশে বসে খেলা দেখতে দেখা যায় ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ককে। যত বার ক্যামেরায় রোহিতকে দেখানো হচ্ছিল, তত বার দর্শকেরা চিৎকার করছিলেন।
হিটম্যানের সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী রিতিকাও। এক সময় দেখা যায়, ভারতের আর এক প্রাক্তন ক্রিকেটার ভিভিএস লক্ষ্মণের পাশে বসে রয়েছেন রোহিত।
খেলা যত এগিয়েছে তত উত্তেজনা দেখা গিয়েছে তাঁর চোখেমুখে। মুম্বইয়ে বেনজির এক ইতিহাস লিখে গিয়েছেন হরমনপ্রীত কৌররা। একসময়ে খেলতে যাওয়ার জন্য রিজার্ভ-হীন কামরায় সওয়ার হতে হয়েছিল মহিলা ক্রিকেটারদের।
মেঝেতে শুয়ে কাটাতে হয়েছিল রাত। যে বীজ পঞ্চাশ বছর আগে বপন করা হয়েছিল, আজ তাই ফুল-ফল-ছায়া বিছিয়ে দিল। আজ থেকে মহিলা ক্রিকেটাররা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন।
২৯৮ রান তাড়া করতে নেমে প্রোটিয়া অধিনায়ক লরা উলভার্ট সেঞ্চুরি হাঁকালেন। তিনি যখন ম্যাচের উপরে আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেছেন, তখনই ইন্দ্রপতন। ১০১ রানে ফিরলেন প্রোটিয়া অধিনায়ক।
একটু একটু করে ভারতের ক্যাম্পের দিকে হেলতে থাকা ম্যাচ তার পরই ঢুকে গেল ভারতের সাজঘরে। বাকিরা সেভাবে আর লড়াই করলেন কোথায়! দক্ষিণ আফ্রিকা উইকেট হারানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে আস্কিং রেট। ক্যাচ পড়ে একাধিকবার।
কিন্তু দিনটা যে ছিল ভারতের। দিনান্তে নবি মুম্বইয়ে বেজে উঠল, ‘মা তুঝে সালাম।’ এবারে বিশ্বকাপের আগে ভারতের মেয়েরা বলছিলেন, ‘লেটস ডু ইট ফর হরমন দিদি’।
তাঁরা পারলেন, প্রিয় হরমন দিদির হাতে বিশ্বকাপ তুলে দিলেন। অবশেষে বেড়াটা ভাঙল, হরমনপ্রীত বললেন, ‘এবার এটা অভ্যাসে পরিণত করতে চাই’।
২০২৭ সালের বিশ্বকাপে রোহিত শর্মাকে দেখা যাবে কিনা সেটা এখনও জানা নেই। তবে খেলার সম্ভাবনাটাই প্রবল। ভক্তরা বলছেন, ‘This Man deserves World Cup’। তাহলে এবার ‘লেটস ডু ইট ফর রোহিত শর্মা’, শুভমান গিল, শুনতে পাচ্ছেন তো?
