স্পেন - (রডরিগো, রুইজ, উইলিয়ামস, ওলমো)

জর্জিয়া - (লে নরম্যান্ড)

আজকাল ওয়েবডেস্ক: এক গোলে পিছিয়ে পড়েও চার গোল। দুর্দান্ত কামব্যাক। রবিবার কোলোনে দাপুটে ফুটবলে জর্জিয়াকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে ইউরোর শেষ আটে স্পেন। কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানির মুখোমুখি স্প্যানিশ আর্মাডা। চলতি ইউরোয় সবচেয়ে ভাল ফুটবল খেলছে স্পেন। প্রথম ম্যাচ থেকেই ফ্রি ফ্লোয়িং দৃষ্টিনন্দন ফুটবল। যার ফলে প্রত্যেক ম্যাচেই প্রতিপক্ষকে গোলের মালা পড়াচ্ছে। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে শুরুতে এগিয়ে গিয়ে চমক দেয় জর্জিয়া। রোনাল্ডোদের‌ হারিয়ে শেষ ষোলোয় পৌঁছেছে তাঁরা। তবে পর্তুগালের সঙ্গে স্পেনের আকাশ-পাতাল পার্থক্য। গোটা ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করে স্পেন। গোলের নীচে মামারদাসভিলি অনবদ্য না হলে গোলের সংখ্যা আরও বাড়তে পারত। হ্যাটট্রিক পেতে পারতেন লামিনে জামাল। যে ফুটবল খেলছে স্পেন, নিঃসন্দেহে ইউরোয় অন্যতম ফেভারিট মোরাতারা‌। তবে কাউন্টার অ্যাটাকের মুখে কিছুটা নড়বড়ে রক্ষণ। এই দুর্বলতা সারাতে হবে। 

রবিবার রাতে প্রথম মিনিট থেকেই স্পেনের প্রেসিং ফুটবল। পুরোপুরি একপেশে। আগাগোড়াই আধিপত্য ছিল স্পেনের। প্রথম থেকেই বিপক্ষের বক্সে আছড়ে পড়ে স্পানিশ আক্রমণ। কিন্তু প্রশংসা করতেই হবে জর্জিয়ার গোলকিপার জিওর্জি মামারদাসভিলির।‌ তাঁর জন্যই প্রথমার্ধের শেষে স্কোরলাইন ১-১। ইউরোর অভিষেক বছরই চমক দিয়েছে জর্জিয়া। গ্রুপ লিগের শেষ ম্যাচে পর্তুগালকে হারিয়ে শেষ ষোলোয় পৌঁছয় তাঁরা। দলকে এই জায়গায় তোলার পেছনে মামারদাসভিলির অবদান অনস্বীকার্য। এদিনও গোলের নীচে একাধিক সেভ করে প্রথমার্ধের শেষে জর্জিয়ার আশা জিইয়ে রাখেন। তবে একপেশে ম্যাচ হলেও বল পেলেই বিদ্যুৎ গতিতে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে বারবার বিপক্ষের বক্সে ঢুকে পড়ছিল জর্জিয়া। তাই ম্যাচ যথেষ্ট উপভোগ্য হয়। ম্যাচের ৫ মিনিটে স্পেনের প্রথম সুযোগ। পেদ্রির শট বাঁচায় জর্জিয়ার কিপার। তার মিনিট ছয়েক পর আবার একটি অনবদ্য সেভ মামারদাসভিলির। ম্যাচের ১৮ মিনিটে স্পেনের আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যায় জর্জিয়া। লে নরম্যান্ডের গায়ে লেগে বল জালে জড়িয়ে যায়। 

পিছিয়ে পড়ার পর আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়ে স্পেনের। ২১ মিনিটে রুইজের নিশ্চিত গোল বাঁচান বিপক্ষের কিপার। স্পেনের আধিপত্য থাকলেও কাউন্টার অ্যাটাকে বেশ কয়েকবার তাঁদের বিপাকে ফেলে জর্জিয়া। ৩৫ মিনিটে কুকুরেল্লার শট বাঁচান জর্জিয়ার কিপার। কিন্তু বেশিক্ষণ দুর্গ অক্ষত রাখতে পারেননি। ম্যাচের ৩৯ মিনিটে ১-১ করে স্পেন। নিকো উইলিয়ামসের থেকে বল পেয়ে বক্সের ঠিক মাথা থেকে বাঁ পায়ের নিখুঁত প্লেসিংয়ে গোলে রাখেন রডরিগো। বিরতির আগে স্বস্তি ফেরে স্পেনিশ শিবিরে। হাফ টাইমের পরপরই আবার এগিয়ে যাওয়ায় সুযোগ পেয়েছিল জর্জিয়া। ম্যাচের ৪৮ মিনিটে বিপক্ষের কিপার সাইমন গোল ছেড়ে বেরিয়ে আসায় সুযোগ তৈরি হয়। কিন্তু বাইরে মারেন ভারাসখেলিয়া। আর বেশি সুযোগ দেয়নি স্পেন। ম্যাচের ৫১ মিনিটে ২-১ গোলে এগিয়ে যায়। জামালের ফ্রিকিক বাঁচান জর্জিয়ার গোলকিপার। সেই মুভ থেকে দুই একজনের পা ঘুরে আবার বল পান জামাল। নিখুঁত ক্রস ইউরোর সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলারের। হেডে বল জালে রাখেন ফ্যবিয়ান রুইজ। বল মামারদাসভিলির গায়ে লেগে গোলে ঢুকে যায়। পিছিয়ে পড়ার পর পুরোপুরি ব্যাকফুটে চলে যায় জর্জিয়া। যার সুযোগ কাজে লাগিয়ে ম্যাচের ৭৫ মিনিটে ৩-১ করে স্পেন। রুইজের পাস থেকে বল পান উইলিয়ামস। গতি বাড়িয়ে বাঁ দিক ধরে বক্সে ঢুকে পড়েন। তারপর টপ নেট ফিনিশ। ম্যাচের ৮৩ মিনিটে স্পেনের হয়ে চার নম্বর গোলটি করেন ড্যানি ওলমো। অভিষেক ইউরোয় স্বপ্নের শেষ ষোলোয় বাস্তবের মুখোমুখি হয় জর্জিয়া।