আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতের জ্যাভেলিন তারকা সচিন যাদব টোকিওর ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে আয়োজিত বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে বৃহস্পতিবার নজর কেড়েছেন দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে। ভারত-পাকিস্তানের বহুল আলোচিত দ্বৈরথ—নীরজ চোপড়া বনাম আরশাদ নাদিম যেখানে কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল, সেখানে এশিয়ার লড়াইয়ে সবার ওপরে উঠে এলেন সচিন। ২৫ বছর বয়সি সচিন প্রথম প্রচেষ্টাতেই ছুঁড়লেন ৮৬.২৭ মিটার (ব্যক্তিগত সেরা)। যা শেষ পর্যন্ত তাঁর সেরা থ্রো হিসেবেই থেকে যায়। এর সুবাদে নীরজ (অষ্টম) ও আরশাদের (দশম) চেয়ে এগিয়ে থেকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে চতুর্থ স্থান অর্জন করেন তিনি। ১৯৯৯ সালের ২৫ অক্টোবর উত্তরপ্রদেশের খেখরায় জন্ম সাচিনের। প্রথমদিকে ফাস্ট বোলার হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও ১৯ বছর বয়সে তিনি মন দেন জ্যাভলিনে।
৬ ফুট ৫ ইঞ্চি উচ্চতার এই অ্যাথলিটের প্রিয় নায়ক ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি এবং তারকা বোলার যশপ্রীত বুমরা। ২০২৫ এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে সচিন রূপো জিতেছিলেন ৮৫.১৬ মিটার থ্রো করে। এর আগে, দেরাদুনে অনুষ্ঠিত ৩৮তম ন্যাশনাল গেমসে ৮৪.৩৯ মিটার ছুঁড়ে সোনা জেতেন, যা তখন তাঁর ব্যক্তিগত সেরা ছিল। নীরজ চোপড়া ক্লাসিকের প্রথম আসরে সামান্য ব্যবধানে পদক হাতছাড়া করেন সচিন। ৮২.৩৩ মিটার থ্রো করে চতুর্থ স্থানে শেষ করেছিলেন তিনি। এর আগে টোকিওতে যোগ্যতা অর্জন পর্বে নীরজের সঙ্গেই গ্রুপে ছিলেন সচিন। প্রথম থ্রোতে মাত্র ৮০.১৬ মিটার ছুঁড়লেও শেষদিকে ৮৩.৬৭ মিটার জ্যাভলিন ছুঁড়ে দশম স্থানে থেকে ফাইনালের ১২ জনের মধ্যে জায়গা করে নেন।
বিশ্ব মঞ্চে প্রথম বড় প্রমাণ রাখলেও সচিন যাদব ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত দিলেন ভারতের জ্যাভেলিনে নীরজ চোপড়ার পর তিনি হতে পারেন ভবিষ্যতের ভরসার নাম। বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পয়নশিপে সোনা জিতলেন কেসহর্ন ওয়ালকট (৮৮.১৬ মিটার), রুপো ও ব্রোঞ্জ পেলেন যথাক্রমে অ্যান্ডারসন পিটার্স (৮৭.৩৮ মিটার) ও কার্টিস থম্পসন (৮৬.৬৭ মিটার)। নীরজ বনাম আর্শাদ নাদিম লড়াই দেখার অপেক্ষায় ছিলেন সবাই। দুই প্রতিবেশি দেশের তারকা জ্যাভলিন থ্রোয়ার আগুন জ্বালাবেন এই প্রত্যাশায় ছিলেন ক্রীড়াপ্রেমীরা। কিন্তু এদিন কোনওটাই হল না। নীরজ চোপড়া শুরুটা করেন ৮৩.৬৫ মিটার ছুড়ে। অ্যান্ডারসন পিটার্স ৮৪.৫৯ মিটার ছোড়েন প্রথম থ্রোয়ে। আর্শাদ নাদিম প্রথম থ্রোয়ে ৮২.৭৩ মিটার পার করেন।
ভারতের শচীন যাদব অবাক করে দেন প্রথম থ্রোয়ে। ৮৬.২৭ মিটার ছোড়েন তিনি। এটাই তাঁর ব্যক্তিগত সেরা থ্রো। প্রথম থ্রোয়ের শেষে শচীন যাদব দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন। নীরজ ছিলেন পঞ্চম স্থানে। আর্শাদ সপ্তমে। আর্শাদের দ্বিতীয় থ্রো ফাউল হয়। নীরজের দ্বিতীয় থ্রো প্রথমটার থেকে ভাল হয়। দ্বিতীয় থ্রোয়ে নীরজ ৮৪.০৩ মিটার ছোড়েন। প্রথম থ্রো দারুণ করার পরে দ্বিতীয় থ্রো ফাউল করেন শচীন। দ্বিতীয় থ্রোয়ের শেষে শচীন যাদব নেমে যান দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ স্থানে। নীরজ নেমে যান আট নম্বরে।
দ্বিতীয় দফার থ্রোয়ের পরে আর্শাদের পজিশন দশম। তৃতীয় থ্রো ফাউল করেন নীরজ। তৃতীয় থ্রোয়ে আর্শাদ ছোড়েন ৮২.৭৫ মিটার। তিনি দশম স্থানেই থেকে যান। শচীন যাদব ৮৫.৭১ মিটার ছোড়েন। আর্শাদ নাদিম ছিটকে যান চতুর্থ থ্রোয়ের পরে। তাঁর অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। পঞ্চম থ্রোয়ের পরে ভারতের দু'বারের অলিম্পিক পদকজয়ী নীরজ চোপড়া ছিটকে যান। ২০২১-এ টোকিওয় অলিম্পিকে সোনা জিতে ভারতীয় অ্যাথলেটিক্সে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন নীরজ চোপড়া। সেই টোকিওতেই বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে জ্যাভেলিন থ্রোর ফাইনালে পৌঁছলেও নীরজ পদক জিততে পারলেন না।
