আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিরাট কোহলি বদলালেন না। এই ৩৭-এও তাঁর শরীরী ভাষায় গনগনে আঁচ। সেঞ্চুরির পরে এখনও তিনি আগের মতোই আবেগপ্রবণ। রাঁচিতে সেঞ্চুরির পরে শূন্যে হাত ছুড়েছিলেন। এদিনও লাফালেন। সেই লাফ দেখে মনে হতেই পারে এখনও তিনি আকাশ ছুঁতে চান। 

৫৩টি ওয়ানডে সেঞ্চুরি। বিরুদ্ধস্রোতের মধ্যেই ব্যাট করছেন তিনি। ড্রেসিং রুমে গৌতম গম্ভীর রয়েছেন। যিনি চান না কোহলিকে। অন্যদিকে বাইশ গজে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা। একই সঙ্গে বিরাট কোহলিকে সামলাতে হচ্ছে ঘরের ও বাইরের শত্রুকে। আর মনস্তাত্বিক খেলায় বিরাট একশোয় দুশো পাবেন। রাঁচির পরে রায়পুরেও শতরান। তাঁকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া যাবতীয় জল্পনা, বিতর্ক উড়িয়ে দিলেন বিরাট কোহলি। এরপরেও কি তাঁর নিন্দুকরা বলবেন, কোহলি তাঁর আসল সময় ফেলে এসেছেন? 

নিন্দুকরা মুখ খুলতেই পারেন। বলতেই পারেন, ঘরের মাঠে পাটা উইকেটে কোহলি ব্যাট করছেন। তাঁর সেঞ্চুরিকে খাটো চোখে দেখাতেই পারেন। কিন্তু এরকম চাপ নিয়ে কোহলি কি আগে কখনও খেলেছেন? বিপক্ষকে সামলানোর চাপ থাকে। কিন্তু এই চাপ তো স্বয়ং ঘরের। ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের কর্তারাও তো একপ্রকার বিরাটকে আর খেলাতে চান না। এখানেই বিরাট কোহলি ছাপিয়ে যাচ্ছেন সবাইকে। এখানেই তিনি হয়ে উঠছেন বিরাট। শাখাপ্রশাখা বিসতার করে দিচ্ছেন। তাঁর ছায়া দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়ে ধরা দিচ্ছে। রাঁচিতে ভারত করেছিল ৩৪৯ রান। রায়পুরে ভারত ছাপিয়ে গেল সেই রানও। দ্বিতীয়  ওয়ানডেতে ভারত করল ৫ উইকেটে ৩৫৮ রান। এই ইমারত গড়ার নেপথ্যে রুতুরাজ গায়কোয়াড় ও বিরাট কোহলি। 

মহেন্দ্র সিং ধোনির ঘরের মাঠে রোহিত শর্মাকে সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন। এদিন রুতুরাজকে সঙ্গে নিয়ে ১৯৫ রান জুড়লেন। এদিন ৯৩ বলে ১০২ রানের ইনিংস খেললেন কোহলি। জাতীয় দলের জার্সিতে প্রথম শতরান পেলেন রুতুরাজও। আগেরদিনের মতো এদিনও অধিনায়ক লোকেশ রাহুল শেষের দিকে গুরুত্বপূর্ণ ৬৬ রান করে গেলেন। রবীন্দ্র জাদেজাও অপরাজিত রইলেন ২৪ রানে। 

তিনি যে কিং। তা আবার প্রমাণ করলেন কোহলি। সিরিজে পরপর দুই ম্যাচে শতরান। একদিনের আন্তর্জাতিকে শতরান হয়ে গেল ৫৩টি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৮৪ শতরানের মালিক হয়ে গেলেন বিরাট। কেরিয়ারের এই সায়াহ্নে পৌঁছেও খিদে সেই তরুণ বিরাটের মতোই। 

খেললেন রাজার মতো। কোনও প্রোটিয়া বোলারকেই রেয়াত করেননি। বিরাটের শতরান এল ৯০ বলে। শতরান করার পথে মারলেন সাতটি চার ও দুটি ছয়। 

এদিনও টস জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। রোহিত ও যশস্বী দ্রুত আউট হলেও রুতুরাজকে নিয়ে দলের ইনিংস টেনে নিয়ে যান বিরাট। রুতুরাজের ১০৫ রানের ইনিংসে রয়েছে ১২টি চার ও দুটি ছয়। এর আগে একদিনের আন্তর্জাতিকে একটি অর্ধশতরান ছিল রুতুরাজের। এবার করলেন প্রথম শতরান। বিরাট থামলেন ১০২ রান করে। এরপরেও কি ২০২৭ বিশ্বকাপে জায়গা হবে না তাঁর? সিরিজে ১-০ এগিয়ে ভারত। রায়পুরেই কি সিরিজ জিতে ফেলছে গম্ভীরের দল?