ইস্টবেঙ্গল - ২ (জেসিন-২)

মহমেডান - ২ (সামাদ, রবিনসন)

আজকাল ওয়েবডেস্ক: দু'বার পিছিয়ে পড়েও ড্র। ম্যাচ শেষে গুরুত্বপূর্ণ এক পয়েন্ট। সৌজন্যে জেসিন টিকে। কলকাতা লিগের মিনি ডার্বিতে আটকে গেল ইস্টবেঙ্গল। শুক্রবার নৈহাটির বঙ্কিমাঞ্জলী স্টেডিয়ামে মহমেডানের সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করল লাল হলুদ। কোনওক্রমে অক্ষত রাখল অপরাজিত তকমা। তবে এদিন ড্রয়ের ফলে খেতাবের অপেক্ষা আরও দীর্ঘায়িত হল। সুপার সিক্সে দুটো ম্যাচ বাকি ইস্টবেঙ্গলের। প্রতিপক্ষ ডায়মন্ড হারবার এবং ভবানীপুর। শেষ দুই ম্যাচ থেকে প্রয়োজন তিন পয়েন্ট। অর্থাৎ একটা ম্যাচ জিততেই হবে। লিগের বর্তমান অবস্থান অনুযায়ী ডায়মন্ড হারবারের বিরুদ্ধে পরের ম্যাচ জিতলেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে ইস্টবেঙ্গল। তবে লড়াইটা সহজ হবে না। কারণ তাঁরাও খেতাব দৌড়ে রয়েছে। অর্থাৎ মহমেডানের সঙ্গে ড্রয়ে খেতাবের পথ কিঞ্চিৎ কঠিন হল ইস্টবেঙ্গলের। দলের জয় দেখতে নৈহাটি স্টেডিয়ামের একাংশ ভরায় লাল হলুদ সমর্থকরা। ঢাক-ঢোল মজুত ছিল। কিন্তু ম্যাচ ড্র হওয়ায় উৎসবে ভাটা পড়ে। 

খেতাবের জন্য তিন ম্যাচ থেকে চার পয়েন্ট প্রয়োজন ছিল লাল হলুদের। তাই মহমেডানকে হারিয়ে ট্রফির দিকে আরও এক পা বাড়াতে চেয়েছিল বিনো জর্জের দল। কিন্তু ম্যাচের সূচনাটা তেমন হয়নি। ১৪ ম্যাচে দাপুটে ফুটবল খেলা ইস্টবেঙ্গল কিছুটা ব্যাকফুটে থেকেই শুরু করে। সুপার সিক্সের তালিকায় ছয় নম্বরে মহমেডান। সাদা কালো ব্রিগেডের খেতাব জয়ের কোনও সম্ভাবনা নেই। তাই এদিন অনেক খোলা মনে খেলে হাকিমের দল। ম্যাচের ২ মিনিটের মাথায় গোলের প্রথম সুযোগ মহমেডানের। দীনেশের হেড বাঁচান ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার আদিত্য পাত্র। নিশ্চিত পতন রোখেন। এরপর প্রথম কোয়ার্টারের শেষের আগে আরও একবার লাল হলুদ দুর্গ অক্ষত রাখেন আদিত্য। বল ধরে পজেশনাল ফুটবল খেলার চেষ্টা করে সাদা কালো। মাঝমাঠ নিজেদের দখলে নিয়ে নেয়। যার ফলে লাল হলুদের মিডল করিডোর বন্ধ হয়ে যায়। 

অনেক বেশি ইতিবাচক ফুটবল খেলে মহমেডান। শুরুর দিকে লাল হলুদকে ম্লান দেখায়। গুছিয়ে নিতে সময় লাগে। ম্যাচের ১৫ মিনিটে গোল মিস জেসিন টিকের। সামনে একা মহমেডান কিপার শুভদীপ পন্ডিতকে পেয়েও গোলে রাখতে পারেননি। সুযোগ কাজে লাগিয়ে ম্যাচের ২১ মিনিটে মহমেডানকে এগিয়ে দেন বামিয়া সামাদ। মাঝমাঠ থেকে একটা লং বল রিসিভ করে নিখুঁত মাইনাস জোসেফের। ডান পায়ের আলতো পুশে গোলে রাখেন সামাদ। এদিন প্রথমার্ধে ফ্রি ফ্লোয়িং ফুটবল খেলতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। কলকাতা লিগের ১৪ ম্যাচে ৪৪ গোল করা দল প্রথমার্ধে আটকে যায়। গোলের তেমন সুযোগ তৈরি করতেই পারেনি। তবে ভাগ্যের জোরে বিরতির আগেই ম্যাচে সমতা ফেরায় লাল হলুদ। ৪০ মিনিটে গোল করেন জেসিন টিকে। বাইরে যাওয়া একটা বল তাঁর পায়ে লেগে গোলে ঢুকে যায়। কলকাতা লিগে ১২ নম্বর গোল কেরলের স্ট্রাইকারের। চলতি লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা জেসিন। প্রথমার্ধের শেষে স্কোরলাইন ছিল ১-১। 

ম্যাচের ৫১ মিনিটে আবার মহমেডানকে এগিয়ে দেন রবিনসন সিং। জটলার মধ্যে থেকে ডান পায়ের গড়ানো শটে গোল করেন। দ্বিতীয় গোলের পর আক্রমণ বাড়ায় মহমেডান। রক্ষণের মোড়কে গুটিয়ে যাওয়ার বদলে আরও আগ্রাসী ফুটবল খেলে সাদা কালো ব্রিগেড। কয়েকটা সুযোগ মিস না করলে, গোল সংখ্যা আরও বাড়তে পারত। দুটো নিশ্চিত গোল মিস করেন সাকা। দ্বিতীয়ার্ধেও দাপট বেশি ছিল কলকাতায় তৃতীয় প্রধানের। ইস্টবেঙ্গলের প্রথম সুযোগ ৬৯ মিনিটে। জেসিনের শট ফিস্ট করে বাঁচান মহমেডান কিপার। কিন্তু ৭৬ মিনিটে ২-২ করেন কেরলের স্ট্রাইকার। আমনের থ্রু ধরে বল একা টেনে নিয়ে গিয়ে বিপক্ষের আগুয়ান কিপারকে কাটিয়ে ফাঁকা জালে বলে রাখেন জেসিন টিকে‌। একক দক্ষতায় গোল। মহমেডান কিপার গোল ছেড়ে বেরিয়ে আসায় সুবিধা হয়। চলতি কলকাতা লিগে নিজের ১৩ নম্বর গোল করেন জেসিন। ম্যাচের শেষ কোয়ার্টারে আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণে দুই দলই গোলের সুযোগ পায়। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেনি। শেষপর্যন্ত এক পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছাড়ে কলকাতার দুই দল।