টলিউডকে চাঙ্গা করতে নতুন পদক্ষেপ। বর্তমান সময়ে যেহেতু অডিও ভিজ্যুয়াল কন্টেন্টের চাহিদা বাড়ছে, একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ছোট ছোট গ্রুপে ছবি দেখা চাহিদা, তাই সময়ের দাবি মেনেই এই বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের তরফে নিয়ে আসা হল মিনি সিনেমা পলিসি। কিন্তু এই বিষয়টা ঠিক কী?
সদ্যই নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ব্যবসায়ী বাণিজ্য সম্মেলন। বৃহস্পতিবার এই অনুষ্ঠানেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই পলিসির কথা ঘোষণা করেন। টলিউডের তরফে মনে করা হচ্ছে ভারতে এই প্রথম কোনও রাজ্য সরকারের তরফে আঞ্চলিক ইন্ডাস্ট্রির উন্নতির জন্য এমন পদক্ষেপ নেওয়া হল। মনে করা হচ্ছে মিনি সিনেমা পলিসির হাত ধরে সিনেমাপ্রেমীদের সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা আরও ভাল হবে। একই সঙ্গে এটি টলিউডের উন্নতি এবং বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। বাড়াবে স্থানীয় ব্যবসা।
কিন্তু এই মিনি সিনেমা পলিসি আসলে কী? এই পলিসির আওতায় ৫০ সিটের সিনেমা হল শুরু হবে রাজ্যে। ছোট যে হলগুলো রয়েছে গ্রামীণ এলাকা বা মফঃস্বলগুলোতে, সেগুলোকেই সিনেমা হল বানানো হবে। অল্প দর্শকাসন নিয়ে শুরু হবে এই সিনেমা হলগুলো।
এই পলিসির ঘোষণা করে ১৭ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আজ আমরা নিয়ে এলাম মিনি সিনেমা পলিসি, যাতে বাংলা সিনে দুনিয়াকে পুনরুজ্জীবিত করা যায়। আমরা অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের পরামর্শ মেনে নিয়েছি। বড় সিনেমা হলের বদলে ছোট ছোট সিনেমা হল থাকবে যেখানে অনেক মানুষ বসে সিনেমা উপভোগ করতে পারবেন।' মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন এও জানান যে রাজ্য সরকারের তরফে রাজারহাটে একটি ইন্টারন্যাশনাল ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড কালচারাল পার্ক তৈরি করা হচ্ছে। এর জন্য ১০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে। ইতিমধ্যেই টেন্ডার ছাড়া হয়েছে। তিন ফেজে তৈরি হবে এটা যেখানে একসঙ্গে ১ লাখের বেশি মানুষ একত্রিত হতে পারবেন কালচারাল অনুষ্ঠানের জন্য।
টলিউডের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে স্বাগত জানানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই বাংলার প্রথম মিনি সিনেমা তৈরি করার কাজ শুরু করে দিয়েছেন বলেও একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন। পার্ক স্ট্রিট অঞ্চলে তিনি সেই মিনি সিনেমা হল গড়ে তুলছেন। অভিনেতা আশাবাদী যে তাঁরা শীঘ্রই অনুমতি পেয়ে যাবেন সেটা চালু করার।
কী কী সুবিধা থাকবে মিনি সিনেমা হলগুলোতে? এলইডি ডিজিটাল ডিসপ্লে যুক্ত স্ক্রিন থাকবে, একজন কম্পিউটার জানা অপারেটর, এসির সুব্যবস্থা এবং অন্তত যেন ৫০ জন বসে সিনেমা দেখতে পারেন তার ব্যবস্থা থাকবে। ডেস্কটপ বা সার্ভারের সঙ্গে কানেক্ট করে প্রজেক্টরের সাহায্যে এখানে সিনেমা দেখানো হবে। নিশ্চিত করতে হবে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা। স্ক্রিনের মাথা যেন প্রথম সারিতে যে দর্শক বসবেন তাঁদের চোখের অ্যাঙ্গেলের ৪৫ ডিগ্রির বেশি না হয়। আর শেষের সারির দর্শকদের জন্য সেই অ্যাঙ্গেল হবে ২৫ ডিগ্রি। মিনি সিনেমা হল বানানোর জন্য যে বাড়িতে সিনেমা হলটি বানানো হবে সেটার ফিট সার্টিফিকেট প্রয়োজন। মিনি সিনেমা হল বানানোর অনুমতি নিতে হবে নির্দিষ্ট জেলার জেলাশাসক বা পুলিশ কমিশনারের থেকে। তাঁদের দিতে হবে নির্দিষ্ট প্রজেক্ট আউটলাইন। এরপর পুলিশ সেই জায়গায় গিয়ে সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখবে এবং নো অবজেকশন সার্টিফিকেট দেবে পরর্বতী সাতদিনের মধ্যে। তারপরই মিলবে লাইসেন্স। আবেদন করার পর লাইসেন্স পাওয়া, এই গোটা বিষয়টা এক মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।
