আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফুটবল সম্রাট পেলের স্নেহ পরশ পেয়েছেন তিনি। বাঙালির বড় প্রিয়, বড় আপন যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে 
ফুটবলের রাজপুত্র দিয়েগো মারাদানো হাই ফাইভ দিয়েছেন তাঁকে। 

এবার ম্যাজিসিয়ান লিওনেল মেসির সামনে তিনি খেলবেন পুরনো ক্লাবের জার্সিতে। সমর্থকরা ভেসে যাবেন সবুজ-মেরুন স্মৃতিতে। 

পেলে-মারাদোনার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়ে গিয়েছে আগেই। মেসির সঙ্গে দেখা হবে শনিবার। তিনি দীপেন্দু বিশ্বাস। 'এলএম ১০'-এর সামনে খেলবে মোহনবাগান ও ডায়মন্ড হারবার এফসি-র অলস্টার দল। 

সবুজ-মেরুন শিবির তাদের যে অলস্টার দল ঘোষণা করেছে, তাতে রয়েছেন দীপেন্দু। 

ক্যাপশন: যুবভারতীতে মারাদোনার হাই ফাইভ দীপেন্দুকে। 

তিন প্রধানে খেলা বাঙালি স্ট্রাইকার আবেগপ্রবণ হয়ে বলছেন, ''আমি এখন মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ফুটবল সচিব। প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবের কর্তা হলেও মোহনবাগান আমাকে যে সম্মান দিল, তার জন্য মোহনবাগান ম্যানেজমেন্ট-কর্তা সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমি তিন প্রধানেই খেলেছি। মোহনবাগান আমার প্রথম বড় ক্লাব। প্রাক্তনী বলে আমাকে ডাকা হয়েছে। মোহনবাগান ডেকেছে বলেই মেসির সামনে আমি খেলতে পারব। হয়তো মেসিও আমার সঙ্গে হাত মেলাবেন।'' 
টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমি থেকে সবুজ-মেরুনে এসেছিলেন বসিরহাটের ছেলেটা। বহু যুদ্ধের সৈনিক বুটজোড়়া তুলে রেখেছেন আগেই। এখন তিনি মহমেডান স্পোর্টিংয়ের ফুটবল-সচিব। 

হোসে রামিরেজ ব্যারেটো, বাসুদেব মণ্ডল, দুলাল বিশ্বাসরা মোহনবাগান অল-স্টারের হয়ে খেলবেন মেসির সামনে। সবুজ-মেরুনে ব্যারেটোর আগে দীপেন্দুই পরতেন দশ নম্বর জার্সি (তিন প্রধান, বাংলা ও জাতীয় দলে জার্সির নম্বর ছিল দশ)। পরে আট নম্বর জার্সি ওঠে।  

মোহনবাগানের আট নম্বর জার্সি পরেই তাঁর দুশো-তম গোল। আবার কলকাতা লিগে বাসুদেব মণ্ডলের ভাসানো সেন্টারে মাথা ছুঁইয়ে ইস্টবেঙ্গলের জাল কাপিয়েছিলেন অমল দত্তর ডায়মন্ড জমানায়। 

ক্যাপশন: কলম্বিয়ার গোলকিপার হিগুয়েতার সঙ্গে দীপেন্দু। 

মেসির কলকাতা সফরে পুরনো সতীর্থদের সঙ্গে আবার জুটি বাঁধতে চলেছেন প্রাক্তন বাঙালি স্ট্রাইকার। 
শুক্রবার মধ্যরাত থেকেই শহর কলকাতায় শুরু হয়ে যাচ্ছে মেসিপক্ষ। শনিবার যুবভারতী জুড়ে শুধু মেসি আর মেসি। 

দীপেন্দু নস্ট্যালজিক হয়ে পড়ছেন। কখনও তিনি ফিরে যাচ্ছেন মোহনবাগানের হয়ে খেলোয়াড়জীবনে। আবার বলছেন, ''প্রথম ভারত সফরে আমাকে হাই ফাইভ দিয়েছিলেন মারাদোনা। আমারও পিঠে সেদিন ছিল দশ নম্বর জার্সি।'' 

২০০৮-এর ৬-৮ ডিসেম্বর ৪৮ ঘণ্টার ঝটিকা কলকাতা সফরে এসেছিলেন ছিয়াশির মহাতারকা। যুবভারতীতে উপস্থিত হয়ে তিনি খেলা দেখেছিলেন দীপেন্দুদের। 

দিয়েগো মারাদোনার দ্বিতীয় দফার কলকাতা সফরেও রাজপুত্রের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল বাঙালি স্ট্রাইকারের। 

ব্রাজিল অলস্টার দলের বিরুদ্ধে গোল করেছেন। আবার পেলে সস্নেহে তাঁর পিঠে হাত রেখেছেন। বিশ্বফুটবলে মণিমুক্তো ছড়ানো রোনাল্ডিনহো, দিয়েগো ফোরলানদের সঙ্গেও সৌজন্য বিনিময় হয়েছে। এগুলোই জীবনের সঞ্চয় বলে মনে করেন দীপেন্দু।  সেই তালিকায় নতুন সংযোজন হতে চলেছেন মেসি। দীপেন্দু বলছেন, ''মারাদোনা আমার পছন্দের ফুটবলার। এই প্রজন্ম মেসি-রোনাল্ডোকে নিয়ে পাগল। মেসিকে খেলতে দেখলে আমার মারাদোনার কথা মনে পড়ে যায়।'' 
 

ক্যাপশন: ব্রাজিলীয় তারকা কাফুর সঙ্গে দীপেন্দুর সৌজন্য সাক্ষাৎ।

মেসির জন্য সেজে উঠছে শহর কলকাতা। দ্বিতীয়বার তিনি পা রাখতে চলেছেন এই শহরে। খেলা ছেড়ে দেওয়ার পরে মোহনবাগান জার্সিতে ফের নামার জন্য তৈরি হচ্ছেন দীপেন্দু। 

ওই সবুজ-মেরুন জার্সি শুধু জার্সি নয়। জার্সির রং  বদলায়, নকশা বদলায়। জার্সির গায়ে লেগে থাকা দীপেন্দুর গল্পগুলো কিন্তু পুরনো হয় না। মেসি-ম্যাচ সেই গল্পগুলোই আবার নতুন করে স্মৃতিতে ফিরবে ভক্তদের।