আজকাল ওয়েবডেস্ক: এশিয়া কাপের ইতিহাসে প্রথমবার হতে চলেছে ভারত-পাকিস্তান ফাইনাল। টুর্নামেন্টের ৪১ বছরের ইতিহাসে এই দৃশ্য প্রথমবার দেখা যাবে। বৃহস্পতিবার দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে ১১ রানে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে পাকিস্তান। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অলিখিত সেমিফাইনালে ব্যাটিং খুব একটা ভাল হয়নি পাকিস্তানের। আট উইকেটে মাত্র ১৩৫ রান তোলে পাকিস্তান। কিন্তু এত কম রানের স্কোরকেও বাঁচিয়ে দেন পাকিস্তানি পেসাররা। শাহিন আফ্রিদি ৩/১৭ এবং হারিস রউফ ৩/৩৩ নিয়ে দুর্দান্ত বোলিং করে বাংলাদেশকে থামিয়ে দেন ১২৪ রানে। ১১ রানে ম্যাচ জিতে নেয় আঘা সলমনের দল। এর ফলে, চলতি আসরে তৃতীয়বার ভারতের মুখোমুখি হচ্ছে পাকিস্তান, এবার ফাইনালে, আগামী রবিবার। ক্রিকেটের ইতিহাসে এই পর্যন্ত পাঁচবার বহুজাতিক টুর্নামেন্টের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছে ভারত-পাকিস্তান।
তার মধ্যে তিনবার জয় পেয়েছে পাকিস্তান, দু’বার জিতেছে ভারত। প্রথমবার দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দল মুখোমুখি হয়েছিল ১৯৮৫ সালে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অফ ক্রিকেটের ফাইনালে, যেখানে আট উইকেটে জিতেছিল ভারত। সর্বশেষ ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে, যেখানে ভারতকে ১৮০ রানে হারিয়ে চমকে দিয়েছিল পাকিস্তান। বুধবার বাংলাদেশকে ৪১ রানে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা পাকা করেছে টিম ইন্ডিয়া। সেখানে বাংলাদেশ ব্যাট সইফের ক্যাচ তিনবার ফেলেছেন ফিল্ডাররা। অন্যদিক থেকে পরপর উইকেট পড়তে থাকায় সেই ক্যাচ মিসের খেসারত দিতে হয়নি। এখনও পর্যন্ত এই টুর্নামেন্টে সূর্যরা অপরাজিত।ভারতকে বুধবার ১৬৮ রানে আটকে রেখেছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। কিন্তু শ্রীলঙ্কাকে হারানো আর ভারতের বিরুদ্ধে জয় পাওয়া এক ব্যাপার নয়। একাধিক ক্যাচ ফেললেন ভারতের ফিল্ডাররা।
এই ক্যাচ ফেলা ভারতের হেডস্যর গৌতম গম্ভীরকে চিন্তায় ফেলতে পারে। ফাইনালের আগে ফিল্ডিং নিয়ে পড়তে হবে গম্ভীরকে। এখনও পর্যন্ত ভারত প্রাধান্য নিয়েই ক্রিকেট খেলেছে এশিয়া কাপে। চ্যাম্পিয়নের ট্রফি হাতে উঠতে আর এক কদম দূরে ভারতীয় দল। ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচের বল গড়ানোর আগে থেকেই তর্জন-গর্জন করছিলেন ফিল সিমন্স, মেহেদি হসানরা। সিমন্স বলেছিলেন, ‘সবারই ভারতকে হারানোর ক্ষমতা রয়েছে। বাংলাদেশেরও রয়েছে।’ মেহেদি হাসান বলেছিলেন, ‘আর পাঁচটা ম্যাচের মতোই এই ম্যাচ।’ বুধবার ভারতের ১৬৮ রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ থেমে গেল ১২৭ রানে। রান তাড়া করাটা একদমই ভাল হয়নি বাংলাদেশের। হার্দিক পাণ্ডিয়ার প্রথম ওভারে ওঠে চার রান। বুমরাহ বল করতে এসেই আঘাত হানেন। তানজিদকে ফেরান চ্যাম্পিয়ন বোলার। কুলদীপ যাদবকে সুইপ মারতে গিয়ে ইমন ফেরেন অভিষেক শর্মার হাতে ক্যাচ দিয়ে। ১৯ বলে ২১ রান করেন। বাংলাদেশ দ্বিতীয় উইকেট হারায় ৪৬ রানে। ৬৫ রানে তৃতীয় উইকেট যায় বাংলাদেশের।
এদিকে রান রেট বাড়তে শুরু করে। বড় শট খেলতে গিয়ে তৌহিদ হৃদয় আউট হন ৭ রানে। খাতা না খুলেই বোল্ড হন শামিম। জাকের আলি রান আউট হন মাত্র ৪ রানে। সইফ হাসান বাংলাদেশকে লড়াইয়ে রেখে দেন। যখনই রানের দরকার তখনই ছক্কা হাঁকান তিনি। ১৫ ওভারের প্রথম বলে সইফের ক্যাচ ফেলেন শিবম দুবে। পরের বলেই সইফুদ্দিন ধরা পড়েন তিলক ভার্মার হাতে। নিজেদের অবস্থা আরও কঠিন করে ফেলে বাংলাদেশ। ভাগ্য ভাল সইফের। বরুণের ওভারেই ক্যাচ তুলে বেঁচে যান তিনি। এই যাত্রায় ক্যাচ ফেলেন ভারতের উইকেট কিপার সঞ্জু স্যামসন। রিশাদ হোসেন ও তানজিম দ্রুত ফেরেন। বাংলাদেশ নিজেদের বিপন্ন করে। অন্য প্রান্তে সইফের মতো জমে যাওয়া ব্যাটার রয়েছেন অথচ রিশাদ ও তানজিম নায়ক বনতে চেয়েছিলেন। পরপর দু'বলে দুই উইকেট নেন কুলদীপ। ম্যাচ জেতা ছিল কেবল সময়ের অপেক্ষা। সইফ একা লড়লেন। ৬৯ রানে তাঁকে ফেরান বুমরা। বাকিরা কেউই কিছু করতে পারেননি।
