শরীর পরিষ্কার এবং সুস্থ রাখতে সাধারণত প্রতিদিন স্নান করার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু শীতের সময়ে অনেকেই স্নান এড়িয়ে চলেন। কেউ এক দিন পরপর স্নান করেন, কেউ আবার সপ্তাহে মাত্র এক–দু’বার জল ছোঁয়। এমনও অনেকে আছেন যারা টানা কয়েক দিন স্নানই করেন না। তখন প্রশ্ন আসে—শীতে কি সত্যিই প্রতিদিন স্নান করা প্রয়োজন? কতদিন স্নান না করলেও চলে? এই বিষয়ে আয়ুর্বেদ এবং অ্যালোপ্যাথি—দুই পদ্ধতির চিকিৎসকরাই কিছু গুরুত্বপূর্ণ মত দিয়েছেন, যা জেনে অনেকেই অবাক হবেন।
আয়ুর্বেদ কী বলছে?
আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ ড. সন্তোষ মৌর্য জানান, শীত হোক বা অন্য কোনও ঋতু—'কতদিন পর স্নান করা উচিত’ এ বিষয়ে আয়ুর্বেদে কোনও নির্দিষ্ট বর্ণনা নেই। তবে শাস্ত্রে স্নানকে শরীর এবং মনের শুদ্ধির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বলা হয়েছে।
তাঁর মতে, স্নান করলে—
শরীরের রোমছিদ্র খুলে যায়
শরীর হয় হালকা এবং পরিষ্কার
মন সতেজ থাকে
শরীরের তাপমাত্রাও নিয়ন্ত্রণে আসে, ফলে ঠান্ডাও কম লাগে
তিনি জানান, প্রতিদিন বা কয়েক দিন পর পর স্নান করা—এটি সম্পূর্ণই ব্যক্তির প্রয়োজন এবং সুবিধার উপর নির্ভর করে। তবে শীতে অনেকের ত্বক স্নানের পর রুক্ষ হয়ে যায়। কারণ স্নানের পর ত্বকে সরাসরি ঠান্ডা বাতাস লাগে, যা ত্বকের আর্দ্রতা কমিয়ে দেয়। শীতে ঘামও কম বের হয়, ফলে ত্বকের শুষ্কতা আরও বাড়ে।
স্নানের আগে মালিশ জরুরি
ড. মৌর্য পরামর্শ দেন—
শীতে হালকা গরম জলে স্নান করা সবচেয়ে ভাল
জলে সামান্য লেবুর রস মেশালে ত্বকের শুষ্কতা কমে
স্নানের আগে সর্ষের তেল দিয়ে হালকা মালিশ করলে ত্বক নরম থাকে
এতে সারা দিন শরীর সতেজ থাকে ও অতিরিক্ত বডি লোশন ব্যবহার করারও প্রয়োজন হয় না
অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসকের সতর্কবার্তা
অন্য দিকে, অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসক ড. স্বপ্নিল শ্রীবাস্তব (এমবিবিএস) জানাচ্ছেন—
শীতেও প্রতিদিন স্নান করা অত্যন্ত জরুরি।
তিনি বলেন, “স্নানে অবহেলা করলে পরিবেশে থাকা সূক্ষ্ম ব্যাকটেরিয়া ত্বকে লেগে শরীরে ঢুকে যেতে পারে। এতে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা, অ্যালার্জি এবং পেট–সংক্রান্ত রোগের ঝুঁকি বাড়ে। তাই ঠান্ডাতেও নিয়মিত স্নান করা স্বাস্থ্যের জন্য ভাল।”
তবে তিনি এটাও বলেন—কেউ যদি শরীর কয়েক দিন স্নান না করেও সতেজ অনুভব করে, তাহলে ইচ্ছা অনুযায়ী এক-দু’দিন বিরতি নেওয়া যেতে পারে।
