আজকাল ওয়েবডেস্ক: মনে পড়ে ঋত্বিকের নীতার কথা? বড় দিদি হিসাবে নিজের প্রেমিকের সঙ্গে বোনের সম্পর্ক মেনে নিয়েছিল সে। বিজ্ঞানের ভাষায় এর এক আলাদা ব্যাখ্যা আছে। বিষয়টিকে বলা হয়, ‘এলডেস্ট ডটার সিন্ড্রোম’ বা ‘জ্যেষ্ঠ কন্যা সিনড্রোম’।

ঠিক কী এই বিষয়টি? ‘এলডেস্ট ডটার সিন্ড্রোম’ বলতে বোঝায় পরিবারের বড় সন্তান, বিশেষত মেয়েদের ওপর চাপানো এক অদৃশ্য দায়িত্বের বোঝা। এটি কিন্তু কোনও মানসিক রোগ নয়, এটি আসলে একটি মনস্তাত্ত্বিক প্রবণতা যা বহু মেয়ের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে।

ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন সমাজে জ্যেষ্ঠ কন্যাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত পরিপক্বতা, দায়িত্বজ্ঞান এবং নিঃস্বার্থ ত্যাগের প্রত্যাশা করা হয়। বিশেষ করে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে তাঁদের প্রায়শই ছোট ভাইবোনদের দেখাশোনা করা, ঘরের কাজ সামলানো, এমনকি বাবা-মায়ের মানসিক অবলম্বন হিসেবেও কাজ করতে হয়। এর ফলে নিজের অজান্তেই তাঁরা নিজেদের প্রয়োজনকে বিসর্জন দিতে শুরু করেন। নেপথ্যে থাকে একটিই বিশ্বাস- ভালোবাসা বা স্বীকৃতি দায়িত্ব পালনের মাধ্যমেই আসে।

এই সিনড্রোমে আক্রান্তদের মধ্যে কিছু সাধারণ লক্ষণ দেখা যায়। তীব্র দায়িত্ববোধ, উদ্বেগ এবং অন্যের খুশির জন্য নিজেদের খুশি বিসর্জন দেওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। দিনের পর দিন এভাবে চলতে থাকলে, এক সময় তাঁরা নিজের এবং অন্যের দায়িত্বের মধ্যে সীমা নির্ধারণ করতে পারেন না। ফলে তাঁদের নিজের অসুবিধা অবদমিত হতে থাকে। এই অবদমিত চেতনা থেকে অনেক সময় পরিবারের প্রতি চাপা ক্ষোভ তৈরি হয়। অনেকে নিজেদের প্রতি অপরাধবোধেও ভোগেন।

এই সিনড্রোম থেকে বেরিয়ে আসতে সচেতনতা ছাড়া অন্য কোনও পথ নেই। নিজের জন্য সীমা নির্ধারণ করা, নিজের যত্ন নেওয়া এবং প্রয়োজনে মনোবিদের সাহায্য নেওয়া প্রয়োজন। সব কাজ একা না করে দায়িত্ব ভাগ করে নিতে শিখতে হবে।