শীতের সময় স্নান করা, বিশেষ করে ঠান্ডা জল গায়ে ঢালা বেশ কষ্টসাধ্য বিষয়। তবে অনেকে কনকনে শীতেও দিব্যি ঠান্ডা জলে স্নান করেন। আবার কেউ কেউ অভ্যাসবশত সারা বছরই ঠান্ডা জল ব্যবহার করেন। কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, শীতের সময়ে ভুল পদ্ধতিতে ঠান্ডা জল দিয়ে স্নান করলে তা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে হার্টের সমস্যা, শ্বাসকষ্ট এমনকী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনাও দেখা যায়। তাহলে শীতে ঠান্ডা জল দিয়ে স্নানের সময়ে কোন কোন ভুল এড়িয়ে চলবেন, জেনে নিন। 

১. হঠাৎ করে শরীরে ঠান্ডা জল ঢালাঃ ঘুম থেকে উঠে বা দীর্ঘক্ষণ গরম ঘরে থাকার পর আচমকা মাথা বা শরীরে ঠান্ডা জল ঢেলে দেওয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এতে রক্তনালি হঠাৎ সঙ্কুচিত হয়, রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। বিশেষ করে যাঁদের হার্টের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস আছে, তাঁদের জন্য এটি মারাত্মক হতে পারে।

২. দীর্ঘ সময় ঠান্ডা জলে স্নানঃ শীতে ঠান্ডা জলে অনেকক্ষণ স্নান করলে শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা দ্রুত কমে যায়। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয় এবং সর্দি-কাশি, জ্বর, শ্বাসনালির সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বয়স্কদের ক্ষেত্রে এটি আরও বেশি ক্ষতিকর।

৩. স্নানের পর ঠিকমতো জল না মুছে বাইরে বার হওয়াঃ স্নানের পর গায়ে বা মাথায় জল লেগে থাকলে শরীর দ্রুত ঠান্ডা হয়ে যায়। অনেকেই তাড়াহুড়োয় ঠিকমতো জল না মুছেই ঠান্ডা হাওয়ায় বেরিয়ে পড়েন। এর ফলে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই বেড়ে যায়।

৪. খুব ভোরে বা গভীর রাতে ঠান্ডা জলে স্নানঃ শীতকালে ভোর বা রাতে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকভাবেই কম থাকে। এই সময়ে ঠান্ডা জল দিয়ে স্নান করলে শরীর আরও বেশি ঠান্ডা হয়ে যায়, ফলে মাথা ঘোরা, বুক ধড়ফড় বা শ্বাসকষ্ট হতে পারে।

৫. অসুস্থ অবস্থাতেও ঠান্ডা জল ব্যবহারঃ জ্বর, সর্দি-কাশি, গা-হাত-পা ব্যথা বা দুর্বল লাগলেও অনেকেই অভ্যাসের কারণে ঠান্ডা জলেই স্নান করেন। এতে অসুখ আরও বেড়ে যেতে পারে এবং সুস্থ হতে দেরি হয়।

তাহলে কী করবেন? শীতকালে সম্ভব হলে হালকা গরম বা ঈষদুষ্ণ গরম জল দিয়ে স্নান করুন। স্নানের সময় খুব তাড়াহুড়ো করবেন না। শেষে শরীর ও চুল ভাল করে মুছে গরম কাপড় পরুন। মনে রাখবেন, শীতে সুস্থ থাকার জন্য ছোট ছোট অভ্যাস বদলানোই সবচেয়ে বড় সুরক্ষা।