শীতকালে কুয়াশায় গাড়ি চালানো যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের। অনেক শহরে বাতাসে ধোঁয়া ও ধুলোর পরিমাণ হঠাৎ বেড়ে যায়। এই ধোঁয়া আর কুয়াশা মিলে তৈরি হয় স্মগ বা ধোঁয়াশা। স্মগ হলে রাস্তা ঠিকভাবে দেখা যায় না, চোখে জ্বালা করে, শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। এই অবস্থায় গাড়ি চালানো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই স্মগে গাড়ি চালানোর সময়ে কিছু জরুরি বিষয় মনে রাখা দরকার।
সবচেয়ে আগে যে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে, তা হল ধীরে গাড়ি চালানো। স্মগের কারণে সামনে কী আছে, তা স্পষ্ট বোঝা যায় না। হঠাৎ কোনও গাড়ি, মানুষ বা পশু সামনে চলে আসতে পারে। গাড়ির গতি কম থাকলে ব্রেক করার সময় পাওয়া যায় এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেক কমে।
অনেকে স্মগে গাড়ি চালানোর সময় হাই বিম হেডলাইট জ্বালান। যা মোটেও ঠিক নয়। হাই বিমের আলো ধোঁয়ার মধ্যে পড়ে আবার চোখে ফিরে আসে, ফলে সামনে আরও কম দেখা যায়। তাই সবসময় লো বিম হেডলাইট ব্যবহার করুন। যদি গাড়িতে ফগ লাইট থাকে, তাহলে সেটি জ্বালান। এতে রাস্তা কিছুটা পরিষ্কার দেখা যায়।
স্মগে গাড়ি চালানোর সময় সামনের গাড়ি থেকে বেশি দূরত্ব রাখুন। সাধারণ দিনে যতটা দূরত্ব রাখেন, তার চেয়ে বেশি রাখা দরকার। কারণ হঠাৎ ব্রেক করলে গাড়ি থামাতে সময় লাগে। দূরত্ব থাকলে ধাক্কা লাগার ভয় কমে যায়।
গাড়ির ভিতরের বাতাসও খুব গুরুত্বপূর্ণ। স্মগে বাইরে বাতাস খুবই দূষিত থাকে। তাই জানলা খুলে রাখা উচিত নয়। জানলা বন্ধ রেখে এসি-র ‘রিসার্কুলেশন মোড’ চালু রাখুন। এতে বাইরের ধোঁয়া কম ঢোকে। পাশাপাশি গাড়ির ক্যাবিন এয়ার ফিল্টার নিয়মিত পরিষ্কার করা বা বদলানো দরকার, না হলে ধোঁয়া আর ধুলো ভিতরে ঢুকে শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
রাস্তায় চলার সময় শুধু সামনে তাকিয়ে থাকলেই হবে না। স্মগে অনেক সময় সামনে কিছুই বোঝা যায় না। তখন রাস্তার সাদা লাইন, লেন মার্কিং আর রিফ্লেক্টর দেখে গাড়ি চালান। এগুলো পথ চিনতে সাহায্য করে। উইন্ডশিল্ড ও জানলার কাচ সবসময় পরিষ্কার রাখুন, কারণ কাচে ময়লা থাকলে দেখার সমস্যা আরও বাড়ে।
মনে রাখবেন, নিরাপত্তার চেয়ে জরুরি কিছু নেই। যদি স্মগ খুব ঘন হয়ে যায় এবং সামনে কিছুই দেখা না যায়, তাহলে তাড়াহুড়ো না করে নিরাপদ জায়গায় গাড়ি থামান। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করাই শ্রেয়। ফোন ব্যবহার বা অন্য কোনও কাজে মনোযোগ দেবেন না।
স্মগে সাবধানে গাড়ি চালালে অনেক বড় দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। একটু সচেতন হলেই আপনি নিজে এবং অন্যদের নিরাপদ রাখতে পারবেন।
