দিনভর কাজের চাপ, মানসিক ক্লান্তি, স্ট্রেস—সব কিছুর পর অনেকেই ভাবেন, রাতে ঠিকঠাক আট ঘণ্টা ঘুমালেই শরীর ও মন পুরোপুরি চাঙ্গা হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে অনেক সময় দেখা যায়, ঘড়ির কাঁটা আট ঘণ্টা ঘুমের কথা বললেও সকালে উঠেই শরীর ভীষণ ভারী লাগে, মন থাকে অবসন্ন। কিন্তু কেন এমন হয় জানেন?
আসলে বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘুমের পরিমাণ নয়, গুণমানই আসল। অর্থাৎ আপনার বেশি ঘুম নয়, বরং ভাল ঘুমের দরকার। আপনি যতক্ষণই ঘুমান তা গভীর ও নিরবচ্ছিন্ন হওয়া আসল বিষয়। আর এখানেই থেকে যায় ঘামতি। অনেকের ঘুমের সময় ঠিক রাখলেও, ঘুমের গুণমান এতটাই খারাপ যে শরীর প্রয়োজন মতো বিশ্রাম পায় না। তাহলে কী কারণে ঘুম ঠিকমতো হলেও ক্লান্তি থেকে যায়? বিশেষজ্ঞদের মতে, এর পেছনে কয়েকটি সাধারণ কারণ থাকতে পারে। যেমন-
আরও পড়ুনঃ পেট ভরায় ৫ মিনিটে, সেই ইনস্ট্যান্ট নুডলই ডেকে আনে স্ট্রোক-হৃদরোগ? নতুন গবেষণায় আতঙ্কিত চিকিৎসকেরা
ঘুমের ব্যাঘাত: রাতে ঘুমের মাঝপথে বারবার জেগে ওঠা শরীরের ঘুমচক্রকে নষ্ট করে দেয়। ফলে গভীর ঘুমে পৌঁছনো যায় না।
স্লিপ অ্যাপনিয়া: এটি এমন একটি সমস্যা যেখানে ঘুমের সময় শ্বাস-প্রশ্বাস কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে ঘুম হালকা হয়ে পড়ে, আর সকালে মাথাব্যথা ও ক্লান্তি দেখা দেয়।
বিকেল বা রাতে অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ: কফি, চা বা এনার্জি ড্রিঙ্ক ঘুমের সময় শরীরকে সক্রিয় রাখে।
অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম: মোবাইল, ট্যাব বা টিভির নীল আলো মস্তিষ্কে মেলাটোনিন হরমোনের উৎপাদন কমায়, যা ঘুম আসতে বাধা দেয়।
অসংগঠিত ঘুমের সময়সূচি: প্রতিদিন ভিন্ন সময়ে শোওয়া ও ওঠা শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়িকে (বডি ক্লক) বিভ্রান্ত করে।
ভাল ঘুমের জন্য কী করবেন? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু সাধারণ অভ্যাস বদলালেই ঘুমের মান অনেক উন্নত করা যায়। যা হল-
নিয়মিত সময়সূচি মেনে চলুন: প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যান এবং একই সময়ে উঠুন।
স্ক্রিন থেকে দূরে থাকুন: ঘুমানোর অন্তত এক ঘণ্টা আগে মোবাইল বা টিভি বন্ধ করুন।
শান্ত পরিবেশ তৈরি করুন: ঘুমের ঘর যেন ঠান্ডা, অন্ধকার ও শব্দহীন হয়।

হালকা খাবার খান: ঘুমের আগে ভারী বা তেল-ঝাল খাবার এড়িয়ে চলুন।
ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল এড়ান: সন্ধ্যার পর থেকে এই ধরনের পানীয় বেশি খেলে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে।
ঘুমের আগে মন শান্ত রাখুন: রাতে শোওয়ার আগে হালকা স্ট্রেচিং, বই পড়া বা মেডিটেশন করতে পারেন।
যদি নিয়ম মেনে চলার পরও আপনি প্রতিদিন সকালে ক্লান্ত অনুভব করেন কিংবা সঙ্গী লক্ষ্য করেন যে ঘুমের সময় আপনি জোরে নাক ডাকেন বা শ্বাস বন্ধ হয়ে যায় তাহলে দেরি না করে ঘুম বিশেষজ্ঞ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
