বর্তমানে অল্প বয়সেই জাঁকিয়ে বসছে অনিদ্রার সমস্যা। সারাদিন পরিশ্রমের পরও রাতে দু'চোখের পাতা এক হয় না অনেকের। কিন্তু সুস্থতার জন্য ঘুম যে অত্যন্ত জরুরি। রোজ ঘুমের ওষুধ খাওয়াও স্বাস্থ্যের জন্য ঠিক নয়। কিন্তু জানেন কি ঘরে গাছ রাখলে ঘুমের সমস্যার সমাধান হতে পারে। এমন কিছু গাছ রয়েছে যেগুলি ঘরে রাখলে ঘুম ভাল হয়। ঘরের পরিবেশকে একটু বদলে দিতে পারে কয়েকটি সহজলভ্য বেডরুম প্ল্যান্ট। প্রকৃতির এই সবুজ বন্ধু শুধু ঘর সুন্দরই করে না, মানসিক শান্তি ফিরিয়ে আনে এবং দ্রুত ঘুমাতে সাহায্য করে।তেমনই ৭টি গাছের বিষয়ে জেনে নিন-
১) ল্যাভেন্ডার: ল্যাভেন্ডারের গন্ধ মানসিক চাপ কমানোর ক্ষেত্রে অসাধারণ। এর সুগন্ধ স্নায়ুকে শান্ত করে, হৃদস্পন্দন কিছুটা ধীর করে এবং শরীরকে নিস্তব্ধতার দিকে নিয়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, ল্যাভেন্ডারের উপস্থিতি ঘুমের মান উন্নত করে।
২) স্নেক প্ল্যান্ট: রাতে অক্সিজেন দিয়ে পরিবেশ পাল্টাতে পারে স্নেক প্ল্যান্ট। ‘মাদার-ইন-ল’-স টাং’ নামে পরিচিত স্নেক প্ল্যান্ট অন্য গাছের তুলনায় রাতে বেশি অক্সিজেন ছাড়ে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই গাছ ঘরের বাতাসের কার্বন ডাই-অক্সাইড কমিয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস স্বস্তিদায়ক করে তোলে, ফলে ঘুমে সাহায্য করে। কম যত্নে টিকে থাকায় এই গাছ ঘরের কোণে রাখা খুব সহজ।
৩) জুঁই ফুলঃ জুঁই ফুলের সুগন্ধ স্নায়ুতন্ত্র এবং মনকে শান্ত রাখে। এর মধ্যে এমন কিছু রাসায়নিক উপাদান রয়েছে যা স্নায়ুতন্ত্রকে স্বস্তিও দেয়। জুঁই গাছ থেকে নির্গত প্রাকৃতিক সুগন্ধ মস্তিষ্কে আরাম দেয়। সেই সঙ্গে ভাল ঘুম হতে সাহায্য করে। তাই যাদের ঘুমের সমস্যা রয়েছে তারা ঘরে এই ফুলের গাছ রাখতে পারেন।
৪) অ্যালোভেরা: অ্যালোভেরা শুধু ত্বক ও চুলের জন্য নয়, ঘরের পরিবেশের জন্যও সমানভাবে উপকারী। এই গাছ ফরম্যালডিহাইড-এর মতো ক্ষতিকর রাসায়নিক দূর করতে পারে। ঘরের বাতাস পরিষ্কার থাকলে শ্বাসপ্রশ্বাস সহজ হয়, যা ঘুমে সরাসরি প্রভাব ফেলে।
৫) পিস লিলি: এটি ঘরের বায়ুতে আর্দ্রতা বাড়িয়ে হাঁচি-কাশির সমস্যা কমাতে পারে। একই সঙ্গে বেনজিন, ট্রাইক্লোরোইথিলিন সহ বেশ কয়েকটি বায়ুদূষক শোষণ করে। রাতের ঘুমের জন্য বায়ুর আর্দ্রতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং এই গাছ সেই সুবিধা সহজেই দেয়।
৬) ভ্যালেরিয়ান: রোমান যুগ থেকে ভ্যালেরিয়ান শিথিলতার প্রতীক। এর পাতার সুবাস এবং মাটির মতো ঘ্রাণ স্নায়ুকে শান্ত করে। ঘুমানোর আগে ধীরস্থির পরিবেশ তৈরি করতে ভ্যালেরিয়ান গাছ রাখা বিশেষজ্ঞরা খুবই কার্যকর বলে মনে করেন।
৭) ক্যামোমাইল: ক্যামোমাইল দীর্ঘদিন ধরে ঘুম বাড়ানোর প্রাকৃতিক সহায়ক হিসেবে পরিচিত। গাছটি নিজেই ঘরে একটি কোমল সুবাস ছড়ায়, আর চাইলে এর পাতার চা ঘুমানোর আগে পান করলে শরীর আরও দ্রুত শিথিল হয়। ফলে অনিদ্রা বা দুশ্চিন্তার দিনেও সহজে ঘুম আসে।
প্রাকৃতিক উপায়ে ঘুম পেতে চাইলে বেডরুমে এই গাছগুলো রাখা খুবই কার্যকর হতে পারে। এগুলো শুধু ঘরের সৌন্দর্যই বাড়ায় না, বরং মানসিক চাপ কমিয়ে শান্ত পরিবেশ তৈরি করে। তবে ঘুমের সমস্যা যদি দীর্ঘদিন ধরে থাকে, সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
