রান্নার স্বাদ বাড়াতে লঙ্কার গুঁড়োর জুড়ি মেলা ভার। অনেকের রান্নাঘরেই এটি অপরিহার্য। ঝোল-তরকারি তো বটেই, এমনকী স্যালাড কিংবা কাটা ফলও লঙ্কার গুঁড়ো মিশিয়ে খান অনেকে। কিন্তু জানেন কি এই লালচে ঝাঁজই ধীরে ধীরে শরীরের জন্য বিষ হয়ে উঠতে পারে? সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গেছে, অতিরিক্ত লঙ্কার গুঁড়ো খাওয়ার ফলে পাকস্থলির জ্বালা, ডায়রিয়া, বুকজ্বালা এমনকি ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়তে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, লঙ্কার গুঁড়োয় থাকা এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ ক্যাপসাইসিনই স্বাদ ও ঝাঁজের মূল কারণ। সীমিত পরিমাণে এটি রক্তসঞ্চালন বাড়ায় ও বিপাকক্রিয়ায় সহায়তা করে। কিন্তু বেশি মাত্রায় খেলে এই উপাদানটি পাকস্থলির আবরণে প্রদাহ সৃষ্টি করে। এর ফলেই দেখা দেয় অম্বল, আলসার, গ্যাস, ও বুকজ্বালার মতো সমস্যা।

আরও পড়ুনঃ স্তন ক্যানসারের পর মাতৃত্বের স্বপ্নপূরণ! কখন-কীভাবে গর্ভধারণ সম্ভব? পরামর্শে বিশিষ্ট চিকিৎসক

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিনের খাবারে অতিরিক্ত লঙ্কার গুঁড়ো ব্যবহার করলে গ্যাস্ট্রিক ক্যানসার, ইসোফ্যাজিয়াল (খাদ্যনালীর) ক্যানসারএবং লিভার ক্ষতির আশঙ্কাও বাড়ে। বিশেষ করে যাদের দীর্ঘদিন ধরে গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য লঙ্কারগুঁড়োহতে পারে আরও বিপজ্জনক।

শুধু অভ্যন্তরীণ ক্ষতিই নয়, অতিরিক্ত লাল মশলার গুঁড়ো ত্বকেও প্রভাব ফেলতে পারে। রান্নার সময় ধুলো চোখে বা মুখে লাগলে দেখা দিতে পারে জ্বালা, চুলকানি ও লালচে ভাব। সংবেদনশীল ত্বকের মানুষের ক্ষেত্রে এই প্রতিক্রিয়া আরও তীব্র হয়।

চিকিৎসকরা বলছেন, যাদের হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ বা ব্লিডিং ডিসঅর্ডার রয়েছে, তাদেরও সাবধান থাকা উচিত। কারণ ক্যাপসাইসিন কখনও কখনও রক্তজমাট বাঁধার প্রক্রিয়ায় বাধা দেয়, যা অপারেশনের সময় বিপজ্জনক হতে পারে।

তবে সীমিত পরিমাণে লঙ্কার গুঁড়ো খেতে পারেন। গবেষণায় বলছে, সামান্য পরিমাণ এই মশলা বিপাকক্রিয়া বাড়ায় ও ঠান্ডা আবহাওয়ায় শরীর উষ্ণ রাখে। তাই পুষ্টিবিদদের পরামর্শ, রান্নায় স্বাদ বাড়াতে মরিচ ব্যবহার করুন, কিন্তু মাত্রার বাইরে নয়। কারণ অতিরিক্ত ঝাঁজ যেমন জিভে লাগে, তেমনি শরীরেও তীব্র প্রভাব পড়ে। তাই লঙ্কার গুঁড়ো ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকুন।