অজেম্পিক বা উইগভি নামক ওষুধের নাম শুনলেই মাথায় আসে ওজন কমানোর কথা। কেবল তাই নয়, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ, বা ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণ করার কথা। তবে সম্প্রতি একটি গবেষণায় জানা গিয়েছে এই দুই ওষুধের আরও এক বিশাল গুণ আছে। কেবল ওজন হ্রাস বা সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ নয়, মারণ রোগ ক্যানসারের হাত থেকে বাঁচাতেও সক্ষম এই দুই ওষুধ। কমাতে পারে ক্যানসারের কারণে হওয়া মৃত্যুর হার। 

সান দিয়েগোর ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকরা ৬ হাজার ৮৭১ জনের উপর এই গবেষণা চালিয়েছেন। যে রোগীরা ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া হেলথ ডেটা ওয়্যারহাউজের অধীনে কোলন ক্যানসারের চিকিৎসা চালাচ্ছেন তাঁদের উপর এই গবেষণা করা হয়েছে। যে রোগীরা জিএলপি ১ রিসেপ্টর অ্যাগনিষ্ট ব্যবহার করেছেন তাঁদের মধ্যে মৃত্যুর হার মাত্র ১৫.৫ শতাংশ, আর যাঁরা এটি ব্যবহার করেননি, তাঁদের ক্ষেত্রে এটি ৩৭.১ শতাংশ। 

বিভিন্ন ধরনের বয়স, ওজন, ক্যানসারের স্টেজ এবং অন্যান্য কোমর্বিডিটি- সবটাকে নিয়েই এই পরীক্ষা চালানো হয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে যাঁরা এই ওষুধগুলো খান তাঁদের মধ্যে মৃত্যুর হার কম। আরও ভাল করে বললে যে রোগীদের বডি মাস ইনডেক্স ৩৫ এর বেশি তাঁদের উপর এই ওষুধ বেশি কার্যকর। এই গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে যাঁদের হজমশক্তি বেশি তাঁদের ক্ষেত্রে এই জিএলপি ১ বেঁচে থাকার হার বৃদ্ধি করতে সক্ষম। 

কিন্তু কেন আর কীভাবে ওজন কমানোর এই দুই ওষুধ ক্যানসারের কারণে মৃত্যুর হার কমাতে সক্ষম? গবেষক দলের তরফে জানানো হয়েছে এই ওষুধগুলো প্রদাহ কমায়, ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বাড়ায়। আর এই দুটোই ক্যানসারের সঙ্গে সম্পর্কিত। ওষুধগুলো ওজন কমানোর জন্য ব্যবহৃত হয়, ফলে এটি ভিসেরাল অ্যাডিপোসিটি কমায়। ফলে টিউমার তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে। যদিও বা টিউমার তৈরি হওয়া শুরু হয়, তাহলেও এই ওষুধগুলো তার বৃদ্ধিকে আটকে দেয়। 

তবে গবেষকদের তরফে এও জানানো হয়েছে এই পরীক্ষাটি কিন্তু সম্পূর্ণভাবে পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে করা হয়েছে। কোনও রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রমাণ করা হয়নি যে এই জিএলপি ১ ড্রাগের কারণে ক্যানসারের লক্ষণ বা তার কারণে মৃত্যুর হার কমায়। ফলে কখনই এই ধরনের ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া উচিত নয়। এমনকী ওজন কমাতে চাইলেও এই ওষুধ খাবেন কিনা সেটাও চিকিৎসকের থেকে জেনে নেওয়া উচিত।