আজকাল ওয়েবডেস্ক: নিম গাছ শুধু একটি গাছ নয়, এটি প্রকৃতির এক অনন্য উপহার। এক একটি নিম গাছ তার জীবদ্দশায় ২৪,০০০ থেকে ৩০,০০০ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ আর্থিক সেবা প্রদান করে—পরিবেশ রক্ষা থেকে শুরু করে কৃষিতে সাহায্য পর্যন্ত। গড়ে ২৫০-৩০০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকা নিম গাছের ছায়ায় আশেপাশের তাপমাত্রা তুলনায় ১০ ডিগ্রি কম থাকে, তাই একে "প্রাকৃতিক এয়ার কন্ডিশনার" বলা হয়।

নিমের ব্যবহার বহু প্রাচীন। এর পাতা, ছাল, বীজ ও তেল ব্যবহৃত হয় স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি, প্রসাধনী এবং গৃহস্থালী কাজে। বিশেষত কৃষিক্ষেত্রে নিম-ভিত্তিক পণ্যগুলির গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। নিম-ভিত্তিক কীটনাশক অন্যান্য রাসায়নিক কীটনাশকের মতো পোকা মেরে ফেলেনা, বরং তাদের প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট করে দিয়ে ধীরে ধীরে সংখ্যা হ্রাস করে। এই প্রক্রিয়াকে "গান্ধীয় পদ্ধতি" হিসেবে দেখা হয়—অহিংস অথচ কার্যকর।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পৃথিবীর অনেক দেশ এখন নিমের গুরুত্ব বুঝে তা চাষে মনোযোগ দিচ্ছে। চীন ইতিমধ্যে ২.২ কোটি নিম গাছ রোপণ করেছে, যেখানে ভারতেই রয়েছে প্রায় ২ কোটি গাছ। ব্রাজিল, অস্ট্রেলিয়া এবং ভিয়েতনামও ব্যাপক হারে নিম লাগিয়েছে।

তবে দুঃখজনকভাবে, যেই ভারতে নিম চিরকাল চাষ হয়েছে, সেখানেই এখন গবেষণা ও প্রচারে ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরকারের উচিত এই গাছের গুণাবলি নিয়ে আরও গবেষণা করা এবং কৃষকদের মধ্যে এর ব্যবহারের প্রশিক্ষণ ছড়িয়ে দেওয়া। নিম হতে পারে ভবিষ্যতের টেকসই কৃষি ও পরিবেশ রক্ষার অন্যতম ভরসা—শুধু দরকার পরিকল্পিত উদ্যোগ ও সচেতনতা।