আজকাল ওয়েবডেস্ক: হাসতে হাসতে চোখে জল আসে, পেটে খিল ধরে, কেউ কেউ আবার চলতি ভাষায় বলেন, “হাসতে হাসতে মরেই যাব!” কিন্তু জানেন কি সত্যিই এমন রোগ পৃথিবীতে রয়েছে যে রোগে হাসির দমকে জ্ঞান হারানোর মতো ঘটনাও ঘটতে পারে? অবিশ্বাস্য মনে হলেও, চিকিৎসাশাস্ত্রে এমন রোগের অস্তিত্ব সত্যিই আছে। এই বিরল অসুখের নাম ‘লাফটার ইনডিউসড সিনকোপ’।
কী এই রোগ? বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি আসলে এক বিশেষ ধরনের ‘ভেসোভ্যাগাল সিনকোপ’। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত হাসির কারণে আমাদের শরীরে বেশ কিছু নাটকীয় পরিবর্তন ঘটে। প্রবল হাসির চাপে বুকের ভিতরে চাপ, বিশেষ করে পাঁজরের চাপ হঠাৎ করে অনেকটাই বেড়ে যায়। এর ফলে হৃৎপিণ্ড থেকে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহকারী শিরা-ধমনীগুলি সংকুচিত হয়ে পড়ে। আর মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল আকস্মিকভাবে কমে যাওয়ার কারণেই সাময়িকভাবে জ্ঞান হারান রোগী। বিষয়টি কয়েক সেকেন্ড থেকে মিনিটখানেক স্থায়ী হতে পারে। এটি সাধারণত মারাত্মক কোনও রোগ নয়, তবে বারবার এমনটা ঘটলে বড় বিপদ ঘটে যেতে পারে। ক্ষতি হতে পারে মস্তিষ্কের। রোগী পড়ে গিয়ে চোট-আঘাত লাগার আশঙ্কাও থাকে। যা ক্ষেত্রবিশেষে মৃত্যুর কারণ হতে পারে। ফলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
ঠিক কী কারণে হাসির মতো একটি স্বাভাবিক আবেগ এমন চরম শারীরিক প্রতিক্রিয়া তৈরি করে, তা নিয়ে নিশ্চিত নন বিজ্ঞানীরা। তবে এই ঘটনার নেপথ্যে যে অটোনোমিক নার্ভাস সিস্টেমের বা স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্রের অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া দায়ী, এ কথা নিশ্চিত। সাধারণত যাঁদের এই সমস্যা রয়েছে, তাঁদের অতিরিক্ত মানসিক চাপ এবং উত্তেজনামুক্ত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়, যাতে হাসির দমক নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায়।
