বিশ্ব জুড়ে চিয়া বীজ সুপারফুড হিসেবে জনপ্রিয়। বর্তমানে অনেকের কাছে রোগা হওয়ার জাদুকাঠি চিয়া সিড। ক্যালোরি কম থাকে এবং প্রচুর পরিমাণে ভাল ফ্যাট থাকে বলে অনেকেই নিয়মিত চিয়া সিড খান। ফাইবার, ওমেগা‑৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং নানা গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টিগুণে ভরপুর এই বীজ অনেক রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। ওজন নিয়ন্ত্রণ, হৃদযন্ত্রের সুরক্ষা, রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ, এমনকী ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষায় চিয়া বীজের ভূমিকা অপরিসীম। কিন্তু যে কোনও সুপারফুড, যতই উপকারী হোক না কেন, ব্যক্তি বিশেষে এর প্রভাব আলাদা হতে পারে। ঠিক তেমনই চিয়া বীজ সকলের জন্য উপকারী নয়। অগুনতি উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও শরীরে বেশ কয়েকটি সমস্যা থাকলে চিয়া সিড খাওয়া উচিত নয়। তাহলে কারা বুঝেশুনে খাবেন এই বীজ? জেনে নিন-
 
 * যাঁদের হজমজনিত সমস্যা রয়েছে: চিয়া বীজে উচ্চমাত্রার ফাইবার থাকে, যা জল শোষণ করে পেটে ফুলে যায়। যাঁদের ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (আইবিএস), গ্যাস্ট্রিক, পেট ফোলাভাব বা কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে এই ফাইবার পেটের সমস্যা বাড়াতে পারে। চিয়া বীজ সঠিকভাবে না ভিজিয়ে খেলে হজমে জটিলতা দেখা দিতে পারে।
 
 * যাঁরা উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ওষুধ খান: চিয়া বীজ প্রাকৃতিকভাবে রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে। কিন্তু যদি কেউ ইতিমধ্যেই উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খান, তাহলে চিয়া বীজ অতিরিক্তভাবে রক্তচাপ কমিয়ে দিতে পারে। এতে মাথা ঘোরা, দুর্বলতা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।
 
 *  যাঁরা ব্লাড থিনার ওষুধ খান: চিয়া বীজে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা‑৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যাতে রক্ত পাতলা করার বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তাই যদি কেউ ব্লাড থিনার ওষুধ খান এবং সঙ্গে অতিরিক্ত পরিমাণ চিয়া বীজের খেয়ে থাকেন তাহলে শরীরে রক্তপাত বা সহজে ছোপ পড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
 
 * যাঁদের বীজজাতীয় জিনিসে অ্যালার্জি থাকলে: যাঁরা তিল, সরষে বা ফ্ল্যাক্স সিডে অ্যালার্জিতে ভোগেন, তাঁদের ক্ষেত্রে চিয়া বীজ থেকেও অ্যালার্জির আশঙ্কা থেকে যায়। যদিও এমন ঘটনা বিরল। তবুও জ্বর, ত্বকে ফুসকুড়ি, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি অ্যালার্জির লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

 
 * রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে না থাকলে: যদিও চিয়া সিডের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম এবং চিনির শোষণকে ধীর করে দেয়। তবুও এই বীজ রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণের ওষুধের প্রভাব বাড়িয়ে দিতে পারে।  ডায়াবিটিস থাকলে যে চিয়া যে একেবারেই খাওয়া যাবে না, তা নয়। তবে ঘন ঘন খেলে কিংবা পরিমাণে বেশি খেলে সমস্যা হতে পারে। তাই চিকিৎসের পরামর্শ নিয়ে খান। 
 
 * কিডনির জন্য বিপজ্জনক: ফসফরাস এবং পটাশিয়াম থাকে যা কিডনির জন্য বিপজ্জনক। তাই কিডনির রোগীদের চিয়া খাওয়ার বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ এই বীজের উপাদানগুলি কিডনির আরও ক্ষতি করে দিতে পারে।
 
 তবে চিয়া বীজ পুরোপুরি এড়িয়ে চলা উচিত নয়। যদি আপনার এই ধরনের কোনও সমস্যা না থাকে তাহলে চিয়া বীজ খেতেই পারেন। তবে প্রতিদিন মাত্রা বুঝে খাওয়া এবং খাওয়ার আগে ভালভাবে ভিজিয়ে নেওয়াই শ্রেয়।
