দীপাবলির উৎসব শুরু হতে কয়েক দিন বাকি। দীপাবলি এমন এক উৎসব, যার প্রস্তুতি বহুদিন আগে থেকেই শুরু হয়ে যায়। এই সময় প্রায় প্রত্যেকেই নিজের ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। দীপাবলির সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। তবে অনেক সময় পরিষ্কারের সময় মানুষ ধুলোবালি ও অন্যান্য অ্যালার্জেন থেকে সুরক্ষা নেয় না, যার ফলে ডাস্ট অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। যাদের আগে থেকেই শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি বা অ্যালার্জির সমস্যা আছে, তাদের জন্য এই সময়টা আরও ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, দীপাবলির পরিষ্কারের সময় কিছু বিষয় মেনে চললে অসুস্থতা বা অ্যালার্জির আশঙ্কা অনেকটাই কমানো যায়।

 

দীপাবলির পরিষ্কারের সময় মেনে চলুন এই ৫টি সতর্কতা

 

মাস্ক ও গ্লাভস ব্যবহার করুন:

 

বাড়ির পরিষ্কারের সময় বাতাসে উড়ে বেড়ানো ধুলো ও জীবাণু স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই পরিষ্কার শুরু করার আগে অবশ্যই মাস্ক ও গ্লাভস পরে নিন। মাস্ক নাক-মুখকে ধুলো থেকে সুরক্ষা দেয়, ফলে অ্যালার্জি ও শ্বাসকষ্টের ঝুঁকি কমে। গ্লাভস হাতকে ময়লা, ধুলো ও রাসায়নিক পদার্থ থেকে রক্ষা করে। বাজারে বিভিন্ন ধরনের ফেস মাস্ক ও ল্যাটেক্স গ্লাভস পাওয়া যায়, যেগুলি আপনি ব্যবহার করতে পারেন।

 

হালকা ক্লিনিং প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন:

 

দীপাবলির পরিষ্কারের সময় অনেকে শক্তিশালী রাসায়নিকযুক্ত ক্লিনিং প্রোডাক্ট ব্যবহার করেন, যা ত্বকে জ্বালাভাব বা অ্যালার্জি তৈরি করতে পারে। তাই চেষ্টা করুন প্রাকৃতিক ও স্বাস্থ্যবান্ধব ক্লিনিং উপকরণ ব্যবহার করতে। ঘরে তৈরি উপকরণ যেমন সাবান, ভিনিগার, লেবু ও বেকিং সোডা দারুণ বিকল্প হতে পারে। এতে ধুলোর পাশাপাশি রাসায়নিকের প্রভাবও কমবে।

 

পরিষ্কারের সময় ঘরে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখুন:

 

ধুলা ও ক্লিনিং প্রোডাক্ট থেকে নির্গত গ্যাস শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই পরিষ্কারের সময় অন্তত দু'তিনটি জানালা খুলে রাখুন, যাতে ঘরের বাতাস চলাচল অব্যাহত থাকে। বায়ু চলাচল না থাকলে ঘরে দূষণ বেড়ে যায়, যা হাঁপানি ও অ্যালার্জির রোগীদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। সঠিক ভেন্টিলেশনে পরিবারও নিরাপদ থাকবে।

ধুলো পরিষ্কারের সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করুন:

 

ধুলো ঝাড়ার জন্য শুকনো কাপড় বা ঝাড়ুর বদলে ভেজা কাপড় বা মপ ব্যবহার করুন। শুকনো কাপড় থেকে ধুলো উড়ে যায়, ফলে বাতাসে কণাগুলি ছড়িয়ে পড়ে এবং অ্যালার্জির ঝুঁকি বাড়ে। ভেজা কাপড়ে ধুলো সহজে মুছে যায় এবং বাতাসে ভাসমান কণার বিস্তার রোধ হয়। একইভাবে পর্দা ও কার্পেটও নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন যাতে ধুলো জমতে না পারে।

 

পরিষ্কারের পর স্নান করুন ও পোশাক পরিবর্তন করুন:

 

পরিষ্কারের সময় শরীরে ধুলো ও অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী কণাগুলি লেগে যায়। তাই কাজ শেষে সঙ্গে সঙ্গে স্নান করুন ও পরিষ্কার পোশাক পরুন। এতে ত্বক ও শ্বাসনালীতে জমে থাকা ধুলো দূর হবে, অ্যালার্জি ও সংক্রমণের ঝুঁকিও কমবে। পাশাপাশি ঘরে পরিষ্কার বাতাস বজায় রাখতে ভেন্টিলেশন বা এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করাও উপকারী।

 

দীপাবলির আগে ঘর পরিষ্কার অবশ্যই জরুরি, কিন্তু নিজের স্বাস্থ্য সুরক্ষাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পদ্ধতি ও সতর্কতা মেনে চললে আপনি এবং আপনার পরিবার উৎসবের আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন সম্পূর্ণ সুস্থভাবে।