আজকাল ওয়েবডেস্ক: দাম্পত্য মানেই কি নিখুঁত সম্পর্ক? একটানা সুখে থাকার নিশ্চয়তা? নাকি ঝগড়া, অভিমান, ভাঙা-গড়ার মধ্যেই খুঁজে নেওয়া সহাবস্থানের নতুন মানে? জাপানের দু’টি প্রাচীন দার্শনিক পদ্ধতি— ওয়াবি সাবি এবং কিন্টসুগি এ বিষয়ে দেখাতে পারে নতুন পথ।

ওয়াবি সাবি: অসম্পূর্ণতায় সৌন্দর্যের খোঁজ
‘ওয়াবি সাবি’ এক ধরনের নীরব নান্দনিকতার দর্শন। এর মূল বক্তব্য— অপূর্ণতা, অস্থায়িত্ব এবং অসম্পূর্ণতাকেই সুন্দর হিসাবে গ্রহণ করা। দাম্পত্যও তো খানিক তেমনই। একে অন্যকে চেনা, আবার নতুন করে অচেনা হয়ে পড়া, রোজকার জীবন, রাগারাগি, দায়িত্ব, অভিমান— এর মধ্যেই কোথাও মিশে থাকে ভালবাসার নীরব ভাষা।
ওয়াবি সাবি শেখায় প্রত্যেক সম্পর্কই একধরনের ‘আনফিনিশড আর্ট’। যেটা বারবার ভাঙে, গড়ে, বদলায়। দাম্পত্যেও যদি নিখুঁত সুখের খোঁজ না করে বরং প্রতিটি ত্রুটির মাঝেও সৌন্দর্য খুঁজে নেওয়া যায়, তবেই সম্পর্ক শান্তিপূর্ণ হয়।

কিন্টসুগি
‘কিন্টসুগি’ জোড়া লাগানোর এক অদ্ভুত পদ্ধতি। বিশেষত কোনও পাত্র ভেঙে গেলে— ফের জোড়া লাগানো হয় সোনার গুঁড়ো মেশানো আঠা দিয়ে। ফলে জোড়া দেওয়ার চিহ্ন থেকে যায়, দাগও পড়ে, কিন্তু সেই ভাঙাচোরা অংশটাই হয়ে ওঠে পাত্রের নতুন সৌন্দর্য।
ঠিক তেমনই দাম্পত্যেও ভাঙা গড়া থাকে। কিন্তু কিন্টসুগির মতো যদি সেই ভাঙনকেও গুরুত্ব দিয়ে, সোনালী গুঁড়ি দিয়ে জোড়া লাগানো যায়— তবে সংযোগ আরও গভীর হয়। অনেকেই চান সম্পর্ক নিখুঁত হোক। কিন্ত যখন ভুল হয়, আঘাত লাগে— তখন যদি আমরা ভাঙনকে ‘শেষ’ বলে না দেখে, বরং তাকে এক নতুন অধ্যায় বলে ভাবি— তখন সম্পর্ক আরও পরিণত হয়। কিন্টসুগি শেখায়, দাগ থাকা মানেই ত্রুটি নয়। বরং সেটা অতীতের ইতিহাস, প্রাচীন অলংকারের মতো।