আমাদের শরীর ঠিকভাবে কাজ করার জন্য প্রয়োজন নানা ভিটামিন, খনিজ, প্রোটিন ও অন্যান্য পুষ্টিগুণ। কিন্তু অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, মানসিক চাপ বা হজমের সমস্যা থেকে শরীরে এই পুষ্টিগুলির ঘাটতি তৈরি হতে পারে। এর ফলে নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়, যা অনেক সময় আমরা গুরুত্ব দিই না। সম্প্রতি অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস এর প্রশিক্ষিত এক গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট জানিয়েছেন, শরীরে পুষ্টির ঘাটতির পাঁচটি স্পষ্ট লক্ষণ সম্পর্কে, যা জানা থাকলে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব।
১. নখের ভঙ্গুরতা বা সহজে ভেঙে যাওয়াঃ বিশেষজ্ঞের মতে, নখ যদি সহজেই ভেঙে যায়, পাতলা হয়ে যায় বা তার স্বাভাবিক চকচকে ভাব হারিয়ে ফেলে, তাহলে তা শরীরে প্রোটিন, আয়রন ও বায়োটিনের অভাবের ইঙ্গিত হতে পারে। এই সমস্যা দীর্ঘদিন চলতে থাকলে তা রক্তাল্পতা বা থাইরয়েডজনিত অসুস্থতার কারণেও হতে পারে।
২. অকাল পক্কতাঃ বয়সের আগেই চুল পেকে যাওয়া বা ধূসর রং ধারণ করা অনেকের জন্যই চিন্তার বিষয়। চিকিৎসকের মতে, এটি অনেক সময় শরীরে ভিটামিন বি১২ ও কপার ঘাটতির লক্ষণ। এই দুই পুষ্টি উপাদান চুলের স্বাভাবিক রঞ্জকতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
৩. চুল পড়া ও পাতলা হয়ে যাওয়াঃ অতিরিক্ত চুল পড়া বা চুলের ঘনত্ব কমে যাওয়া কেবল হরমোনজনিত নয়, এটি প্রোটিন, জিঙ্ক, আয়রন ও ভিটামিন ডি ঘাটতির ফলেও হতে পারে। পুষ্টির ঘাটতি হলে শরীর নতুন চুল গজানোর ক্ষমতা হারাতে থাকে।
৪. ত্বক ও ঠোঁট ফেটে যাওয়াঃ শীতকালে ঠোঁট ফাটা বা ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া সাধারণ ব্যাপার, কিন্তু যদি তা সারা বছরই থেকে যায়, তাহলে এটি হতে পারে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, আয়রন ও ওমেগা–৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের অভাবের ইঙ্গিত। বিশেষ করে ঠোঁটের কোণে ফাটল দেখা দিলে তা ভিটামিন বি২ বা রিবোফ্লাভিনের ঘাটতির লক্ষণ হতে পারে।
৫. অস্বাভাবিক ক্লান্তি ও দুর্বলতাঃ বিশ্রাম নেওয়ার পরেও শরীরে শক্তি না থাকা, সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়া বা সারাদিন নিস্তেজ লাগা -এগুলোও পুষ্টি ঘাটতির অন্যতম চিহ্ন। চিকিৎসক জানিয়েছেন, এটি সাধারণত আয়রন, প্রোটিন ও ম্যাগনেশিয়ামের অভাবে দেখা দেয়। দীর্ঘদিন এই উপসর্গ থাকলে অবশ্যই রক্ত পরীক্ষা করানো উচিত।
কীভাবে রোধ করবেন?চিকিৎসকের পরামর্শ, পুষ্টি ঘাটতি এড়াতে নিয়মিত সুষম খাদ্য গ্রহণ, পর্যাপ্ত জল পান, ঘুম ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।
