আজকাল ওয়েবডেস্ক: ছিলেন পর্ন তারকা, হয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। কোনও দেশের মুখ্য রাজনৈতিক ধারায় এমন পরিবর্তন শেষ কবে দেখা গিয়েছে মনে করতে পারছেন না অনেকেই। আর তাতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা বিশ্বে। যাঁকে নিয়ে এত আলোচনা তাঁর নাম হুয়ান কার্লোস ফ্লোরিয়ান। সমকামী এই প্রাক্তন পর্ন তারকা কলম্বিয়ার ‘মিনিস্ট্রি অব ইকুয়ালিটি’ অর্থাৎ সামাজিক সাম্য বিষয়ক মন্ত্রকের দায়িত্ব সামলাবেন।
আরও পড়ুন: ‘ভুল রাস্তায়’ সঙ্গম! বিয়ের চার বছরেও সন্তান না আসার পর সঠিক পদ্ধতি জানতে পারলেন দম্পতি
গোটা বিষয়টি নিয়ে তীব্র বিতর্ক বেঁধেছে কলম্বিয়ায়। ফ্লোরিয়ন পূর্বে যৌনকর্মী ছিলেন। একসময় অন্য পুরুষ সহকর্মীদের সঙ্গে পর্নও তৈরি করছেন। এবার থেকে তাঁর দফতর যৌনতা এবং লিঙ্গপরিচয়ের দিক থেকে প্রান্তিক মানুষদের অধিকার নিয়ে কাজ করবে। হুয়ানের অতীত নিয়েই যত বিতর্ক।
আরও পড়ুন: ছেলের শুক্রাণুতে সন্তানধারণ করলেন ৭০-এর অভিনেত্রী! সন্তান না নাতি? তুমুল বিতর্ক
তবে পূর্ণমন্ত্রী এই প্রথম হলেও, রাজনীতিতে নতুন নন হুয়ান। এর আগেও তিনি একাধিক দফতরের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন। একাধিক আন্তর্জাতিক সংগঠনের সঙ্গেও কাজ করেছেন তিনি। সব মিলিয়ে তাঁর রাজনৈতিক ও অভিজ্ঞতা ২০ বছরেরও বেশি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকের পাশাপাশি মানবাধিকার, সমকামীদের অধিকার, লিঙ্গ সাম্য নিয়ে সারাবিশ্বে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। এর আগে এই দফতরেই প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন তিনি।
সমালোচকরা যাই বলুন, নিজের অতীত নিয়ে কোনও রাখঢাক নেই নবনিযুক্ত মন্ত্রীর। বরং সাম্প্রতিক একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টে তিনি লেখেন, “আমি রাস্তা থেকে উঠে এসেছি। লড়াই করেছি, আন্দোলন করেছি। আমি যৌনকর্মী ছিলাম। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ছবি বানাতাম। আমি এইচআইভি আক্রান্ত, আমি অভিবাসী।”
শুধু এখানেই থেমে থাকেনি তিনি। নিজের কাজের কথাও মনে করিয়ে তিনি লিখেছেন, “কিন্তু এর পাশাপাশি আমি একজন রাজনৈতিক গবেষকও বটে। আমি জনহিতকর প্রকল্প তৈরি করেছি। মানুষকে সচেতন করেছি তাঁদের অধিকার নিয়ে। আর তার জন্যই আমি মন্ত্রী। সবচেয়ে বড় কথা আমি এমন জনগোষ্ঠীর ছেলে যাঁরা নিজেদের শিকড় ভুলে যায়নি।”

তবে তাঁর মন্ত্রী হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে সরকারের মধ্যেই। এর আগে এই দফতর সামলেছেন উপরাষ্ট্রপতি নিজে। তিনিও হুয়ানের নিয়োগের বিরোধিতা করেছেন বলে খবর। কিন্তু প্রকাশ্যেই হুয়ানের পাশে দাঁড়িয়েছেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট পেট্রো। সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি জানান, কেবল যৌনকর্মী ছিলেন বলে কোনও যোগ্য ব্যক্তিকে তিনি তাঁর অধিকার থেকে বঞ্চিত করবেন না। তিনি আরও জানান, রাজধানীতে এলজিবিটি সম্প্রদায়ের একটি অফিস চালানোর জন্য তাঁর উপর হামলা হয়। প্রাণ বাঁচাতে প্যারিসে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন তিনি। সেখানেও ইউনিয়ন তৈরি করেন তিনি।