আজকাল ওয়েবডেস্ক: ডিজিটাল ইন্ডিয়ার যুগে শিশুদের জগৎ এখন আর শুধুমাত্র খেলার মাঠ বা বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ নেই, তাদের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট। এর যেমন কিছু সুফল রয়েছে, তেমনই অতিমাত্রায় মোবাইল ফোনের ব্যবহার শিশুদের মধ্যে ভয়ঙ্কর আসক্তির জন্ম দিচ্ছে, যা তাদের শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক বিকাশের ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অভিভাবকদের জন্য এটি একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ। তবে কিছু কার্যকরী উপায় অবলম্বন করলে এই আসক্তি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

১. বাবা-মাকে নিজেদের উদাহরণ স্থাপন করতে হবে। যদি বড়রাই সারাক্ষণ মোবাইলে ব্যস্ত থাকেন, তাহলে শিশুদের উপদেশ দেওয়া অর্থহীন। তাই, বাড়িতে থাকাকালীন নিজেরাও মোবাইল ব্যবহার সীমিত করুন।
২. নির্দিষ্ট নিয়ম তৈরি করুন। দিনের কোন সময়ে বা কতক্ষণ শিশুরা মোবাইল ব্যবহার করতে পারবে, তার একটি সুস্পষ্ট রুটিন তৈরি করুন। খাওয়ার সময়, পড়ার সময় বা ঘুমের আগে মোবাইল ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা উচিত। ‘স্ক্রিন-ফ্রি জোন’ তৈরি করতে পারেন। যেমন ডাইনিং টেবিল বা শোবার ঘরে মোবাইল ব্যবহার নৈব নৈব চ।
৩. বিকল্প কাজের সন্ধান দিন। শিশুদের সৃজনশীল বা শারীরিক কার্যকলাপে উৎসাহিত করুন। ছবি আঁকা, গান করা, বই পড়া, খেলাধুলা বা বাড়ির ছোট ছোট কাজে তাদের যুক্ত করুন। আউটডোর গেমসের প্রতি আগ্রহ বাড়ান।
৪. কোয়ালিটি স্ক্রিন টাইম। যদি একান্তই মোবাইল দিতে হয়, তবে শিশুরা কী দেখছে বা কোন অ্যাপ ব্যবহার করছে, সেদিকে নজর রাখুন। শিক্ষামূলক বা সৃজনশীল অ্যাপ ব্যবহারে উৎসাহ দিন।
৫. খোলামেলা আলোচনা জরুরি। মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারের কুফল সম্পর্কে শিশুদের সঙ্গে বন্ধুর মতো আলোচনা করুন। তাদের কৌতূহল মেটান এবং সঠিক পথে চালিত করুন। পারিবারিক সময়কে গুরুত্ব দিন। প্রতিদিন কিছুটা সময় পরিবারের সকলে মিলে এমন কিছু করুন যেখানে কোনও গ্যাজেটের উপস্থিতি থাকবে না। একসঙ্গে গল্প করা, বোর্ড গেম খেলা বা নিছক আড্ডা দেওয়াও পারিবারিক বন্ধনকে দৃঢ় করে।
মনে রাখতে হবে, শিশুদের মোবাইল আসক্তি একদিনে তৈরি হয় না, তাই এটি দূর করতেও ধৈর্য ও ভালবাসা দিয়ে ক্রমাগত চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতেও দ্বিধা করা উচিত নয়।