শরীরকে ঠান্ডা রাখতে ঘাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু জানেন কি শিশুরা, বিশেষ করে একেবারে নবজাতকরা, বড়দের মতো খুব বেশি ঘামে না? এর পিছনে রয়েছে তাদের শরীরের এক বিশেষ শারীরবৃত্তীয় কারণ। তাই শিশুর অতিরিক্ত ঘাম কিন্তু কখনও কখনও গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার, এমনকী দীর্ঘস্থায়ী হৃদরোগের লক্ষণও হতে পারে। তাই এই বিষয়ে মা-বাবাদের সতর্ক হওয়া উচিত।

চিকিৎসকদের মতে, শিশুদের, বিশেষ করে একদম ছোটদের ঘাম গ্রন্থি পুরোপুরি সক্রিয় ও পরিপক্ক হয় না। তাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার প্রক্রিয়াও বড়দের তুলনায় কিছুটা ভিন্নভাবে কাজ করে। তাই সামান্য গরম বা পরিশ্রম হলেও তারা বড়দের মতো দ্রুত ঘামে না। এটি স্বাভাবিক এবং তাদের শরীরের তাপমাত্রা রক্ষার একটি প্রক্রিয়া।

আরও পড়ুনঃ ক্যানসারের যম ৩ খাবার ! নিয়মিত খেলেই শরীরে থাবা বসাতে পারবে না মারণ রোগের বিষ

তবে যদি কোনও শিশু অস্বাভাবিকভাবে এবং অতিরিক্ত ঘামতে শুরু করে, বিশেষ করে খাওয়ানোর সময় বা সামান্য পরিশ্রমে ঘেমে যায় তবে তা চিন্তার কারণ হতে পারে। অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার পিছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে। যেমন— পরিবেশের অত্যধিক উষ্ণতা, অতিরিক্ত পোশাক, ভিটামিন ডি-এর অভাবজনিত রিকেটস রোগ অথবা থাইরয়েড সংক্রান্ত সমস্যা।

চিকিৎসকদের মতে, অতিরিক্ত ঘাম জন্মগত হৃদরোগ (কনজেনিটাল হার্ট) বা অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী হৃদরোগের অন্যতম প্রধান লক্ষণ হতে পারে। হৃদরোগে আক্রান্ত শিশুর হৃৎপিণ্ডকে রক্ত পাম্প করার জন্য স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিশ্রম করতে হয়। এই অতিরিক্ত পরিশ্রমের ফলে শরীর অতিরিক্ত তাপ উৎপন্ন করে, যার কারণে শিশু খুব বেশি ঘামে। অতিরিক্ত ঘামের সঙ্গে যদি শিশুর ওজন বৃদ্ধি না হয়, খাওয়ানোতে অসুবিধা হয়, ঘন ঘন শ্বাসকষ্ট হয়, ঠোঁট, জিভ বা নখ নীলচে হয়ে যায় বা ঘন ঘন নিউমোনিয়া হয়, তবে দেরি না করে অবশ্যই শিশুর হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা শুরু করা শিশুর সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। মা-বাবাকে শিশুর স্বাভাবিক আচরণের প্রতি সবসময়ে সজাগ থাকা জরুরি।