আজকাল ওয়েবডেস্ক: সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিয়ে এবং দাম্পত্যের সংজ্ঞা বদলে গিয়েছে। এখন বিয়ের আগেই হবু স্বামী স্ত্রীর মধ্যে আলাপচারিতা শুরু হয়ে যায়। এতে হবু জীবনসঙ্গীর সম্পর্কে আরও নতুন জিনিস জানা যায়। বিষয়টি যে খুব একটা অস্বাভাবিক তাও নয়। কারণ প্রথমেই কিছু বিষয় জেনে নিলে যে কোনও সম্পর্কের ভিত্তি মজবুত হবে। অন্যান্য সম্পর্ক তো বটেই, বিয়ের আগে হবু স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে খোলামেলা আলোচনা ভবিষ্যতের দাম্পত্য জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্বন্ধ করেই হোক বা ভালবেসে, বিয়ের আগে কিছু বিষয়ে কথা বলে নেওয়া আবশ্যিক।

১. অর্থনৈতিক পরিকল্পনা: স্বামী স্ত্রীর আয় ব্যয় নিয়ে মাঝেমধ্যেই সমস্যা তৈরি হয় বিয়ের পর। এই সমস্যা এড়াতে সংসার কীভাবে চলবে, কে কতটা খরচ করবেন, সঞ্চয় বা বিনিয়োগের পরিকল্পনা কী, কারও কোনও ঋণ আছে কিনা, এই বিষয়গুলিতে স্বচ্ছ ধারণা থাকা জরুরি। তাই এগুলো নিয়ে বিয়ের আগেই কথা বলে নিন। আর্থিক সামঞ্জস্যের অভাব অনেক সময় দাম্পত্য কলহের কারণ হয়।
আরও পড়ুন: রোগীদের উপুড় করে নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাস খুলে নিতেন! তারপর…? বিস্ফোরক অভিযোগ নামী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে
২.  সন্তান পরিকল্পনা ও প্রতিপালন: এখন বহু নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়ে সন্তান চান না। তাই এই নিয়ে মতান্তর হলে বিয়ের পর বিরোধ হতে পারে। দু’জনেই সন্তান চান কিনা, চাইলে কোন বয়সে চান, কতজন সন্তান চান এবং তাদের প্রতিপালন ও ভবিষ্যৎ শিক্ষা নিয়ে কী ভাবনাচিন্তা রয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা করা আবশ্যক। সন্তান প্রতিপালনের পদ্ধতি বা মূল্যবোধ সংক্রান্ত মতপার্থক্য ভবিষ্যতে সমস্যা তৈরি করতে পারে।

৩.  কেরিয়ার ও ব্যক্তিগত লক্ষ্য: নতুন প্রজন্মের তরুণ-তরুণীরা এখন কেরিয়ার সম্পর্কে অনেক বেশি সচেতন। উভয়ের কেরিয়ার সংক্রান্ত পরিকল্পনা কী, একে অপরের পেশা বা কাজের প্রতি কতটা সমর্থন থাকবে, বিয়ের পর কাজের সুযোগ বা স্থান পরিবর্তন হলে কীভাবে মানিয়ে নেবেন – এই বিষয়গুলো আলোচনা করা উচিত। যদি দু’জনেই চাকরি করেন এবং একজনের দূরে ট্রান্সফার হয়, তখন কী করবেন? আগে থেকেই কথা বলে নিতে হবে সেসব বিষয়ে।

৪.  পারিবারিক দায়িত্ব ও সম্পর্ক: বিয়ের পর কার উপর পারিবারিক দায়িত্ব আসবেই। নিজের পরিবারের সঙ্গে অন্যজনের সম্পর্ক কেমন হবে, দুই পরিবারের সঙ্গে কতটা সময় কাটানো হবে বা প্রত্যাশা কী থাকবে, তা নিয়ে স্পষ্ট আলোচনা দরকার। শ্বশুরবাড়ির লোকেদের সঙ্গে সম্পর্ক যে দাম্পত্যকলহের অন্যতম বড় কারণ তা আলাদা করে বলে দিতে হয় না। তাই আগে থেকেই স্পষ্ট থাকা ভাল।

৫. কিছু প্রয়োজনীয় শারীরিক পরীক্ষা: থ্যালাসেমিয়া, সিকেল সেল অ্যানিমিয়া বা অন্যান্য জিনগত রোগ আছে কিনা তা জানার জন্য বিয়ের আগেই পরীক্ষা করা দরকার। এর ফলে ভবিষ্যৎ সন্তানের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি সম্পর্কে আগাম ধারণা পাওয়া যায় এছাড়াও হবু জীবনসঙ্গীর এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি, সিফিলিস বা অন্যান্য যৌন সংক্রামক রোগ আছে কিনা, তা পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত। এটি উভয়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত জরুরি।

এই বিষয়গুলি ছাড়াও আরও অনেক ব্যক্তিগত বিষয় থাকতে পারে যা নিয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন। মূল উদ্দেশ্য হল, বিয়ের আগে একে অপরের প্রত্যাশা, ভাবনা ও জীবনদর্শন সম্পর্কে যতটা সম্ভব স্বচ্ছ ধারণা তৈরি করা।