আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতের ঐতিহ্যবাহী পান পাতা এবার পেল ভৌগোলিক নির্দেশক (জি আই) ট্যাগ। শুধু স্বাদের জন্য নয়, বহু প্রাচীন কাল ধরেই এই পাতা ব্যবহৃত হয়ে আসছে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য। দেশজ সংস্কৃতির অঙ্গ এই পাতা আজও নানা আয়ুর্বেদিক ওষুধে ব্যবহৃত হয়। জি আই ট্যাগের স্বীকৃতি কেবল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা নয়, এই পাতার গুণাগুণের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও বটে। পান পাতার রয়েছে বহু স্বাস্থ্যগত উপকারিতা।
১. হজমশক্তি বাড়াতে সহায়ক
পান পাতায় থাকা প্রাকৃতিক তেল হজমে সহায়তা করে। খাওয়ার পরে পান খেলে লালারস ক্ষরণ বৃদ্ধি পায়, যার ফলে খাবার সহজে হজম হয়। বদহজম, গ্যাস বা অম্বলের সমস্যা নিয়মিত পান পাতা গ্রহণে কমে যেতে পারে।
২. মুখগহ্বর রক্ষায় কার্যকরী
পান পাতায় অ্যান্টিসেপটিক উপাদান থাকায় এটি মুখের জীবাণু ধ্বংস করতে সক্ষম। দাঁতের ব্যথা, মাড়ির সংক্রমণ বা মুখের ঘায়ে উপশম এনে দেয় এই পাতা। নিয়মিত পান পাতা ব্যবহারে মুখগহ্বর স্বাস্থ্যকর থাকে বলে জানাচ্ছেন দন্ত চিকিৎসকরা।
৩. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, পান পাতায় এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা শরীরের ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। প্রাথমিক স্তরের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে পান পাতা সহায়ক হতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
৪. প্রদাহ ও ব্যথা উপশমে ব্যবহারযোগ্য
গাঁটে ব্যথা, মাংসপেশির টান ধরলে গরম করে পান পাতা প্রয়োগ করলে উপকার পাওয়া যায়। আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় দীর্ঘদিন ধরেই পান পাতা ব্যবহৃত হয়ে আসছে বিভিন্ন প্রকার প্রদাহ ও চর্মরোগে।
কৃষিপণ্য হিসেবেও বাড়ছে গুরুত্ব
জি আই ট্যাগের ফলে পান চাষের সঙ্গে যুক্ত কৃষকদের উপার্জনের নতুন দিক খুলে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বেনারসি, মাগহি, রামনাড় প্রভৃতি পানের জাত ইতিমধ্যেই দেশে পরিচিত। এবার আন্তর্জাতিক মঞ্চেও পান পাতার পরিচিতি আরও সুদৃঢ় হবে বলে আশা। তবে বিশেষজ্ঞরা এও সতর্ক করছেন, পান পাতার সঙ্গে চুন, সুপারি ও তামাক জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে সেবন করলে উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হতে পারে। তাই শুধুমাত্র পাতা ব্যবহারেই স্বাস্থ্য উপকারিতা মিলবে।
