ওজন বৃদ্ধি আজকাল অনেকের কাছেই বড় সমস্যা। বিশেষ করে পেট ও কোমরের মেদ একবার হানা দিলে সহজে কমতে চায় না। ডায়েট, জিম করেও অনেক সময় সুফল মেলে না। তবে জাপানের মানুষ সাধারণ কিছু অভ্যাস মেনে নিজেদের শরীর ছিপছিপে রাখেন। এই পদ্ধতিতে মূলত জোর দেওয়া হয় সকালের রুটিনে। যা নিয়মিত মানলে মেদ জমার প্রবণতা কমে।
জাপানি নিয়মে সকালে ঘুম থেকে উঠেই প্রথমে দাঁত মাজতে বা কুলকুচি করতে নিষেধ করা হয়। জাপানিদের মতে, সকালে শরীর নিজে নিজেই পরিষ্কার হওয়ার কাজ করে। এই সময় শরীরের ভেতরের প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করা উচিত নয়।
ঘুম থেকে উঠে সরাসরি রান্নাঘরে গিয়ে খালি পেটে ৪ গ্লাস ঈষদুষ্ণ গরম জল পান করতে বলা হয়। জল খুব গরম নয়, হালকা গরম হলেই যথেষ্ট। এই গরম জল শরীরের ভেতরের হজম প্রক্রিয়াকে সক্রিয় করে। অনেকের ক্ষেত্রে গরম জল খাওয়ার ৫–১০ মিনিটের মধ্যেই পেট পরিষ্কার হয়ে যায়। এতে কোষ্ঠকাঠিন্য কমে, শরীরের ভেতরে জমে থাকা টক্সিন বেরিয়ে আসে এবং মেটাবলিজম ধীরে ধীরে সক্রিয় হয়। নিয়মিত এই অভ্যাস মানলে পেটের মেদ জমার ঝুঁকিও কমে।
গরম জল খাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে বসে পড়া ঠিক নয়। জাপানি নিয়মে বলা হয়, এরপর ২০ মিনিট হাঁটা খুব জরুরি। হাঁটার ফলে শরীরের রক্ত চলাচল ভাল হয় এবং ফ্যাট বার্নের প্রক্রিয়া শুরু হয়। সকালে এই হাঁটা সারাদিন শরীরকে চনমনে রাখে।
হাঁটা শেষে বাড়ি ফিরে এক ঘণ্টা শরীরচর্চা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে খুব কষ্টকর ব্যায়াম নয়। স্ট্রেচিং, যোগাসন বা হালকা ফ্রি-হ্যান্ড এক্সারসাইজ করলেই যথেষ্ট। এই ব্যায়ামগুলো শরীরকে নমনীয় রাখে এবং ধীরে ধীরে অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
সব ব্যায়াম শেষ করার পরেই ব্রেকফাস্ট করা উচিত। ব্রেকফাস্ট হালকা কিন্তু পুষ্টিকর হওয়া দরকার। ফল, ওটস, সেদ্ধ ডিম, সবজি বা অল্প দই খাওয়া যেতে পারে। ভাজাভুজি ও অতিরিক্ত তেল-মশলা এড়িয়ে চলাই ভাল।
এই পুরো রুটিন ঠিকভাবে মানতে হলে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে ঘুম থেকে ওঠা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সময় মেনে ঘুম থেকে উঠলে শরীরের ভিতরের ঘড়ি অর্থাৎ ‘বডিক্লক’ ঠিক থাকে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
নিয়মিত এই জাপানি রুটিন মানলে ধীরে ধীরে শরীর হালকা হবে, পেট পরিষ্কার থাকবে এবং মেদ জমার সমস্যা অনেকটাই কমবে। তবে যাঁদের আগে থেকেই কোনও শারীরিক সমস্যা রয়েছে, তাঁদের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এই রুটিন শুরু করা উচিত।
