গোপাল সাহা

মদ্যপানের উল্লাস মঞ্চ অথবা চাকচিক্য জীবনে বডি শো! নেপথ্যে কোন কারণ যার ফলে একের পর এক যুবকের মৃত্যু, উঠছে একাধিক প্রশ্ন? নিক্কো পার্কে আবারও এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারণ প্রকাশ্যে আসতেই উঠেছে প্রশ্ন, কেন এই মৃত্যু? শুধুই কি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু, না কি এর নেপথ্যে রয়েছে রঙিন জীবনের একই সুতোয় গাঁথা মর্মান্তিক মৃত্যুফাঁদ? 

উল্লেখ্য,  মাস তিনেক আগেই আরও এক যুবকের মৃত্যু দেখেছে শহরবাসী। বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি করতে গিয়ে অত্যধিক পরিমাণে মদ্যপান ও নেশার কারণে মৃত্যু হয়েছিল এক যুবকের। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উঠে এসেছিল  অত্যধিক মাদক দ্রব্য সেবনের কারণে যুবকের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রয়োজনের তুলনায় অধিক পরিমাণে বড় এবং একই সঙ্গে পাকস্থলীতে মাদক জাতীয় তরলের উপস্থিতি। যার কারণেই হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। নিক্কো পার্কের ঘটনার ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে পাওয়া গিয়েছে লিভার, কিডনি, পাকস্থলী প্রয়োজনের তুলনায় অত্যাধিক বড় এবং ক্ষতও রয়েছে। পাকস্থলী পাওয়া গিয়েছে এক তরল পদার্থ যা মাদকদ্রব্য না হলেও সেটি স্টেরয়েড জাতীয় কোনও উচ্চমানের প্রোটিন হতে পারে বলে চিকিৎসকদের অনুমান। একই সঙ্গে জানা যাচ্ছে যুবক তিন ঘন্টা বা তার বেশি সময় ধরে জিম করতেন যা চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় খুবই বিপজ্জনক এবং অবৈজ্ঞানিক। চিকিৎসকদের মতে, অত্যাধিক পরিমাণে স্টেরয়েড জাতীয় প্রোটিন শেক খাওয়া এবং ঘণ্টার পর ঘন্টা ধরে জিম করা শরীরের পক্ষে বিপজ্জনক। একই সঙ্গে মৃত্যুর কারণ পর্যন্ত হতে পারে বা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক বিশেষজ্ঞরা। তবে, নিক্কো পার্কে যুবকের মৃত্যু জন্মগত হৃদযন্ত্রে সমস্যার কারণেও হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, যুবসমাজের এই হৃদরোগে আক্রান্ত (কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট) হয়ে মৃত্যু কারণ প্রথম, উচ্ছৃঙ্খল জীবনে অতিরিক্ত মাদকাসক্তি এবং দ্বিতীয়, রঙিন জীবনে বডি শো করতে গিয়ে স্টেরয়েড মিলিত অবৈজ্ঞানিক প্রোটিন শেক খাওয়া। 

হুল্লোড় গতিময় জীবন, তারুণ্যের স্পর্শ, দুরন্ত আবেগ, নিয়ন্ত্রণহীন ব্যস্ততা আর অকালে ঝরে যাচ্ছে প্রাণ। কখনও গায়কের ভিড়ে ঠাসা প্রেক্ষাগৃহে দমবন্ধ পারফরম্যান্স অথবা জিম করতে গিয়ে মৃত্যুর মুখে ঢলে পরা। রাতভর চলা সপ্তাহান্তে পার্টি করতে গিয়ে চিরতরে পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়া, এসব কিছুর একটা যোগসূত্র হল স্ট্রেস। হৃদযন্ত্র সঙ্কুচিত হয়ে সারা শরীরকে 'সিস্টোল' দশায় রক্ত সরবরাহ করে কিন্তু নিজে রক্ত পায় 'ডায়াস্টোল' দশায়। স্ট্রেসে ক্ষরণ বাড়ে অ্যাড্রিনালিনের। আমাদের 'হাইপোথ্যালামাস-পিটুইটারি-অ্যাড্রিনালিন (HPA) অ্যাক্সিসে ক্ষরণ হতে থাকে 'স্টেরয়েড'। গতি বাড়তে থাকে হৃৎস্পন্দনের। যে হার্ট যত বেশি 'ইলাস্টিক'-এর মতো নিজেকে বাড়াতে পারবে, সেই লড়াইয়ে টিকে থাকতে পারবে। যদি কারও স্বাভাবিক হৃদস্পন্দন মিনিটে ৭২ ও ব্যায়ামের পরে ১৭২ হয় তাঁর হার্ট রেট ভ্যারিয়েবিলিটি (HRV)  অনেক বেশি (১৭২-৭২=১০০)। অন্যদিকে, যদি দেখা যায় ব্যায়ামের পরে সেটি ১৪২ প্রতি মিনিট হয় তাঁর HRV অনেক কম (১৪২-৭২ =৭০)। এছাড়াও যাদের বিশ্রামরত অবস্থায় হৃৎস্পন্দনের গতি মিনিটে ১০০-এর বেশি তাদেরও বড় বিপদ। কম HRV আর বেশি resting tachycardia তরুণ প্রজন্মের 'সাডেন কার্ডিয়াক ডেথ' ডেকে আনে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) অনেক আগেই ঘোষণা করেছে, মানসিক অবসাদ একাই স্বতন্ত্রভাবে 'হার্ট অ্যাটাক'-এর কারণ হতে পারে। সম্প্রতি অ্যামেরিকান হার্ট অ্যাসেশিয়েশন জীবনের 'এসেন্সিয়াল এইটে' প্রাপ্তবয়স্কদের অন্ততঃ ৭-৯ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছে।

দেখে নেওয়া যাক চিকিৎসক বিশেষজ্ঞদের মতে এই দুটি বিষয়ে বিস্তারিত মতামত -

রঙিন জীবনে বডি শো ও অতিমাত্রায় স্টেরয়েড জাতীয় প্রোটিন সেবনে ফল :

অতিরিক্ত জিম এবং প্রোটিন শেক, বিশেষ করে স্টেরয়েড (Steroid) এর সাথে গ্রহণ করলে মানবদেহে বিভিন্ন নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এর মধ্যে প্রধান হলো হৃদরোগ, লিভারের সমস্যা, হরমোনজনিত সমস্যা এবং মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক জটিলতা। মেডিকেল রিপোর্ট অনুসারে, স্টেরয়েড ব্যবহার পেশী গঠনে সাহায্য করতে পারে, কিন্তু এর দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারে শরীরে মারাত্মক বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।

আরও পড়ুন: পাকিস্তানের বন্ধু তুরস্কও কি পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে সক্ষম? উত্তরটি আপনাকে অবাক করে দেবে

* হৃদরোগ: স্টেরয়েড ব্যবহার হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এটি রক্তচাপ বৃদ্ধি করে, কোলেস্টেরলের মাত্রা পরিবর্তন করে এবং হৃদযন্ত্রের পেশী দুর্বল করে দিতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, এটি হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের কারণও হতে পারে।
 
* লিভারের সমস্যা: অতিরিক্ত প্রোটিন এবং স্টেরয়েড লিভারের উপর চাপ সৃষ্টি করে। লিভার শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়, এবং অতিরিক্ত প্রোটিন ও স্টেরয়েড লিভারের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে। লিভার সিরোসিস বা অন্যান্য লিভারের রোগের ঝুঁকি বাড়ে।
 
* হরমোনজনিত সমস্যা: স্টেরয়েড শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করে। পুরুষদের মধ্যে স্তন বৃদ্ধি, শুক্রাণু সংখ্যা হ্রাস, এবং মহিলাদের মধ্যে অনিয়মিত মাসিক চক্র, ব্রণ, এবং মুখের অবাঞ্ছিত লোমের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

* মানসিক স্বাস্থ্য: স্টেরয়েড ব্যবহারের ফলে মেজাজ পরিবর্তন, আগ্রাসন, বিষণ্ণতা, এবং উদ্বেগ এর মত মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, এটি সিজোফ্রেনিয়ার মতো গুরুতর মানসিক রোগের ঝুঁকিও বাড়ায়।
 
* অন্যান্য প্রভাব: অতিরিক্ত জিম এবং স্টেরয়েড ব্যবহারের ফলে শরীরের অন্যান্য অংশেও সমস্যা হতে পারে, যেমন অস্থিসন্ধি এবং পেশী ব্যথা, চুল পড়া, এবং ত্বক সংক্রান্ত সমস্যা। এছাড়া ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে যেতে পারে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। 

প্রোটিন শেক সাধারণত নিরাপদ, কিন্তু অতিরিক্ত গ্রহণ করলে কিডনির উপর চাপ সৃষ্টি হতে পারে। তাই, যে কোনও পরিপূরক ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। স্টেরয়েড ব্যবহার একটি গুরুতর বিষয় এবং এর অপব্যবহারের ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা দিতে পারে। 

আরও পড়ুন: ‘আমিষ’ দুধ ভারতে বিক্রি করতে চায় আমেরিকা! কী সেই তরল, কীভাবে উৎপাদন করা হয়, খাওয়া স্বাস্থ্যকর তো?

চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে বেশ কিছু স্টেরয়েড যুক্ত সাপ্লিমেন্টারি প্রোটিন রয়েছে যা জিম করার আগে বা পরে ধারাবাহিকভাবে গ্রহণ করলে নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই একাধিক শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে যা ভবিষ্যতে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। সেই স্টেরয়েড গুলির নাম হল - 

* অ্যানাবলিক স্টেরয়েড যেমন, অ্যাড্রোস্টেনেডিয়ন ও টেস্টোস্টেরন,
* হিউম্যান গ্রোথ হরমোন,
* এরিথ্রোপৈটিন ,
* স্টিমুলেন্টস। 

খেলাধুলায় এই জাতীয় স্টেরয়েড যুক্ত সাপ্লিমেন্টারি খেলে শরীরের জন্য সাময়িক উপকার বা উন্নতি ও শক্তি বৃদ্ধি, মাসল গেইন হলেও তার বিপরীত প্রতিক্রিয়া বা ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক গুণ বেশি। 

উপকার 

* পেশী গঠন করতে সাহায্য করে, 
* গলার স্বর মোটা করে, অধিক পরিমাণে ব্যায়াম করতে সহযোগিতা করে, 
* শরীরের বাহ্যিক বেশি অনেক বেশি আকর্ষণীয় দেখতে হয়,
* অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা চিকিৎসার কারণে ইনজেকশন হিসাবে ব্যবহৃত করেন, 
* অক্সিজেন পরিবহনের সাহায্য করে। 

পুরুষদের ক্ষেত্রে ব্যবহারে ঝুঁকি: 

* শরীরে বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা হয়, 
* পরবর্তীতে পেশিকে দুর্বল করে তোলে, 
* ডায়াবেটিস ও চোখের সমস্যা, 
* রক্তচাপ বৃদ্ধি ও হৃদপিণ্ড, লিভার কিডনি বড় হওয়া, 
* মানসিক রোগ ও বিষন্নতা, 
* হৃদরোগ সহ মেজাজ খারাপ হওয়া ও উচ্চ রক্তচাপ, 
* এর ব্যবহারের ফলে টিউমারের সম্ভাবনা প্রবল, 
* অন্ডকোষ ছোট হয়ে যাওয়া, 
* সন্তান ধারণের ক্ষমতা লোক পায়।

নারীদের ক্ষেত্রে যে রোগগুলি বেশি করে লক্ষ্যনীয়: 

* যোনির বাইরের অংশ বড় হয়ে যাওয়া, 
* শরীরে অধিক লোম গজানো, মাথার চুল পড়ে যাওয়া, 
* ঋতুচক্র বন্ধ হয়ে যাওয়া, 
* অতিরিক্ত পরিমাণে ব্রণও হওয়া, 
* খারাপ কলেস্টরলে পরিমাণ প্রচুর পরিমাণে বেড়ে যাওয়া, 
* সন্তান ধরনের ক্ষমতা কমে যাওয়া,
* সূচের ব্যবহারে যে কোনো রকম মারণ রোগ যেমন হেপাটাইটিস এইচআইভি 

চিকিৎসক বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু জিম করা কিংবা অত্যাধিক স্টেরয়েড সাপ্লিমেন্টারি ফুড নেওয়ার কারণে যেমন হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারে পাশাপাশি, অত্যাধিক পরিমাণে মাদকাসক্তি কারণেও হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার অর্থাৎ অ্যালকোহলিক কার্ডিও মায়োপ্যাথি রোগে আক্রান্ত হতে পারে। বহুদিন ধরে মাদকাসক্ত হওয়ার কারণে এ ধরনের রোগে আক্রান্ত অর্থাৎ হার্টের পেশীগুলি দুর্বল হয়ে পড়ে। এর ফলে বাঁ দিকের ভেন্ট্রিকাল ডাইলুটেড হয়ে যায় এবং রক্ত সরবরাহে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। তখনই কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়ে মৃত্যু হতে পারে। এছাড়াও আরও একটি কারণ যুব সমাজের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার, এবং মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে, যা জিনগত বা বংশ পরম্পরায় এ ধরনের রোগ হয়ে থাকে। যার নাম হাইপারট্রফিক কার্ডিও মায়োপ্যাথি। 

আবার জন্মগত কারণে হার্টের সমস্যা থাকলে অর্থাৎ ভেন্ট্রিকুলার ঠিকমতো কাজ না করলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ঘটতে পারে। এ ধরনের রোগ অনেক ক্ষেত্রেই খেলোয়ারদের মধ্যে দেখা যায়। মূলত জিম করার সময় বা খেলাধুলার সময় প্রচণ্ড হার্ট রেট বেড়ে যায় এবং তখনই মৃত্যু ঘটে। 

এ বিষয়ে আজকাল ডট ইন-এর সঙ্গে বলেছিলেন প্রখ্যাত চিকিৎসক (মনোরোগ বিশেষজ্ঞ) রঞ্জন ভট্টাচার্য, চিকিৎসক (কার্ডিয়োলজিস্ট) অরিত্র কোনার ও চিকিৎসক (এন্ডোক্রোনোলজিস্ট) সত্যম চক্রবর্তী। 

চিকিৎসা রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, "অনিয়ন্ত্রিত প্রোটিন খেলে কিডনির উপরে বিরূপ প্রতিক্রয়া ফেলতে পারে। জিমে যাওয়া শুধু ফিটনেস নয়, এখন ফ্যাশন হয়ে গিয়েছে। 'বডি ইমেজ ডিস্টার্বেন্স' বা 'নিজস্বী প্রেমে' মশগুল যুবসমাজ কত দ্রুত সমাজমাধ্যমে ওয়ার্কআউটের ছবি দেবে তার অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে। এই 'বিহেভিয়ার বা প্রসেস অ্যাডিকশন' এর আসক্তিতে কোথায় থামা দরকার তা তাঁরা ভুলে গিয়েছে এবং আমরা বিস্মৃত হয়েছি।"

তিনি আরও বলেন, "জিম, সুইমিং, 'জয়' রাইড ও অ্যাডভেঞ্চার্স স্পোর্টে আমরা এই নিক্কো পার্কেই বারবার দুর্ঘটনা ঘটতে দেখেছি তাও আমাদের টনক নড়েনি৷ গাড়ির ব্রেকের মতো আমাদের মস্তিষ্কের যে ব্রেক সেই 'সিন্গুলেট জাইরাস' অপরিণত থাকে এই তরুণ প্রজন্মের। মাদকসেবন তাকে আরও দুর্বল করে দেয়। ব্যবহারিক আসক্তি লাগামহীন করে দেয়। ফলে ঘটে যায় এরকম দুর্ঘটনা। কবে আমরা বুঝবো? আর কবে?" 

চিকিৎসক অরিত্র কোনার এবং সত্যম চক্রবর্তী বলেন, "বর্তমান যুবসমাজ কোথায় থামতে হবে তা ভুলে গিয়েছে। আর যার ফলেই নিজেদের রঙিন জীবনকে আরও চাকচিক্য করতে প্রবল চেষ্টা। ফলে আসক্তি বাড়ছে একদিকে যেমন মাদকাসক্তি, আবার অন্যদিকে প্রয়োজন ছাড়া দেহের পেশীকে বাড়ানোর জন্য নানাবিধ স্টেরয়েড জাতীয় সাপ্লিমেন্ট খেয়ে প্রয়োজন অতিরিক্ত জিম, যা মৃত্যুর কারণ ডেকে আনছে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই এগুলি ছাড়াও জন্মগত বা বংশ পরম্পরায় হৃদরোগের ঘটনা নেহাত কম নয়। বহু যুবকরাই জন্মগত বা বংশগত কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে থাকার ফলে জিম করা বা খেলাধুলার সময় কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়ে মৃত্যু ঘটে যায়। যার জন্য প্রয়োজন অল্প সমস্যা তেই চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা এবং সঠিক চিকিৎসা করা"।

এই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কারণ নিয়ে উদাহরণ টেনে চিকিৎসক সত্যম চক্রবর্তী বলেন, "ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের স্বনামধন্য ফুটবলার কৃশানু দে-র মৃত্যুও খেলতে খেলতে হয়েছিল মাত্র ৩২ বছর বয়সে। যার কারণ ছিল জন্মগত হৃদযন্ত্রের সমস্যা। যদিও তার জীবনযাপন খুব একটা সুস্থ ছিল না। তবে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কৃষানুর মৃত্যু হার্টে জন্মগত সমস্যার কারণে।"